মৃত্যু ভাবনার ৫ উপকারিতা
মৃত্যুর ভাবনা কি আমাদের কোন উপকারে আসে? মানুষ মরণশীল। তবু সবসময় মৃত্যুর এই স্বাভাবিক বাস্তবতা ভুলে থাকতে চাই আমরা। মৃত্যু বলতেই যেন এক হিমশীতল অনুভূতি ঘিরে ধরে আমাদের। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা বলছে, এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বরং মৃত্যু নিয়ে নিয়মিত চিন্তা আপনাকে আরও জীবনমুখী করে তোলে, গুছিয়ে দেয় আপনার লক্ষ্য, উদ্দেশ্যকে। তাই বরং ভাবুন, মনে রাখুন যে একদিন মারা যাবেন! আসুন জেনে নিই, মৃত্যু চিন্তা আর কী কী উপায়ে সাহায্য করে আমাদের।
লক্ষ্য নির্ধারণ করতে
জীবনের লক্ষ্য আমরা সবাই নির্ধারণ করি। কিন্তু একজন মৃত্যু সচেতন ব্যাক্তির কাছে জীবনের মানে আর ১০ জন থেকে আলাদা। সে জীবনকে অনুধাবন করে ভিন্ন উপায়ে, ভিন্ন আঙ্গিকে। তাই তার নির্ধারিত লক্ষ্য হয় আরও সুদূরপ্রসারী। সেখানে মিশে থাকে গভীরতা, মিশে থাকে আশপাশের আত্মীয় পরিজনকে নিয়ে তার চিন্তা, জীবনবোধ ইত্যাদি। একজন মানুষের মঝে যখন মৃত্যু ভয় থাকে না তখন সে তার জীবন নিয়ে যেকোন রকম সীদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু জীবনের অনিশ্চয়তা তার পথ আটকায়, যদি সে এই বিষয়ে সচেতন থাকে। তখন আর সে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বাধ্য হয় গুছিয়ে ভাবতে।
জীবনকে ভালবাসতে
জীবনকে তো আমরা সবাই ভালবাসি। কিন্তু এই জীবন যে আর চিরকালের নয়, আত্মার ভেতর থেকে এই বোধ যখন মানুষের মাঝে তৈরি হয় তখন সে জীবনের মূল্য বুঝতে পারে। খেয়াল করে দেখবেন, একজন তরুণ কীভাবে রাস্তা পার হয়! আর একজন সংসারী মানুষ কীভাবে সেই একই রাস্তা পেরিয়ে যায়। সংসারি মানুষটি হয় দায়িত্বশীল। মৃত্যুর ভয় আছে তার। জীবন তার কাছে অনেক দামী। তাই সে সাবধানী। আর তরূণ যুবকের মাঝে এসব ভাবনা নেই। পিছুটান নেই। সে হয় অসাবধানী। মৃত্যুর ভাবনা এমনই। তা জীবনকে আরও অর্থবহ করে। মানুষকে আরও কর্মঠ করে।
জীবনের গতি বৃদ্ধি করে
আপনি যখন জীবনের অনিশ্চয়তা নিয়ে সচেতন তখন আপনি এক বিন্দু সময় নষ্ট করতে চাইবেন না আজকের দিনটির। কারণ কাল কী আছে আপনি জানেন না। তাই আজকের কাজ আর কালকের জন্য ফেলে রাখবেন না আপনি। গুছিয়ে প্রতিটি কাজ শেষ করতে চাইবেন। উপভোগ করতে চাইবেন জীবনের প্রতিটি বিন্দু বিন্দু সময়। অন্যেরা যখন ভাবনা বিলাসিতায় ব্যস্ত, একজন জীবন সচেতন মানুষ তখন জীবনকে দিতে চায় ভিন্ন মানে। বলতে চায়, তার আরও আছে অনেক কিছু করার। আরও আছে দেবার এই পৃথিবীকে।
দূরদৃষ্টি তৈরি করে
মৃত্যু ভয় মানুষের মাঝে দূরদৃষ্টি তৈরি করে। মানুষ তখন জীবনকে আর একভাবে চিন্তা করে না। যেকোন বিষয়ের গভীরে ঢুকে সে জেনে নিতে চায় এর সবটা। তার দেখার চোখ বদলে যায়, ভাববার গতি বদলে যায়। সমাজ সম্পর্কে তার ভাবনা, দেশ সম্পর্কে তার বিশ্লেষণ হয় একেবারেই ভিন্ন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত্যুর চিন্তাকে ভয় করে এড়িয়ে যাওয়া মানুষের চেয়ে, মৃত্যুর সম্ভাবনাকে মেনে নেওয়া মানুষেরা বেশী জ্ঞানী এবং তাদের জীবনবোধ অনেক উন্নত।
স্থিতিশীল জীবনের জন্যে
জীবনকে আরও স্থিতিশীল করে মৃত্যুকে মেনে নেওয়া। আপনি যখন অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সচেতন তখন আপনি আপনার প্রতিটা পদক্ষেপ নেন ভেবে চিন্তে। আপনি তখন ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করেন। চিন্তা করেন সবার জন্য। শুধু নিজের কথা ভেবে কোন সিদ্ধান্ত নেন না। ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে একজন সচেতন ব্যক্তি বিভিন্ন পরিকল্পনা করে। যতদিন বেঁচে আছে ততদিন স্থিতিশীল জীবন কাটাতে চায়। তাই সে অস্থির চিত্তের নয়, বরং হয় অনেক ধীর, শান্ত এবং বিচক্ষণ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন