মেয়েকে নিয়ে ৫ বছর ধরে হাসপাতালে আছেন মা, হচ্ছে না চিকিৎসা
প্রায় পাঁচ বছর ধরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বেডে দিন কাটছে স্বজনহীন-অসহায়-গরিব মা মরিয়ম ও শিশুকন্যা মারিয়ার। তারা নিজেদের বাড়ি কোথায়, ঠিক করে বলতে পারেন না। তাদের খোঁজ নেওয়ার মতোও কেউ নেই। আর এত বছর ধরে রোগী হিসেবে হাসপাতালে দিন কাটালেও এখন আর চিকিৎসক-নার্সরাও মরিয়মের চিকিৎসা ঠিকমতো করেন না বলে অভিযোগ হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের। কেউ-ই তাদের পাশে দাঁড়াননি এখন পর্যন্ত। মরিয়মের পাশের বেডের রোগীর এক স্বজন আক্ষেপ করে বললেন, ‘এখানে এসে দেখলাম, গরিব মানুষের পাশে গরিবরাই দাঁড়ান, বড়লোকেরা দাঁড়ান বড়লোকের পাশে।’ তবে, মরিয়মের বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক বললেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
মরিয়মের কাছে ঠিকানা জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘বাড়ি বিক্রমপুর, বাবা-মা নাই, স্বামী থুইয়্যা চইল্যা গেছে, এর বেশি কিছু জানি না। বয়স আনুমানিক ২৭। পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়াকে নিয়ে বসেছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের বারান্দার কোণার দিকের এক বেডে। এই বেডেই কাটে তার সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা-রাত।আর পাঁচ বছর বয়সী মেয়েটি বিছানাতেই মায়ের বাথরুম করায়, বিছানায় বসিয়ে ভাত বেড়ে খাওয়ায়, থালা-বাসন ধোয়, বোতলে করে খাবার পানি আনে, কাপড় ধুয়ে রোদে শুকাতে দেয়, শুকিয়ে গেলে ভাঁজ করে বিছানায় রাখে গুছিয়ে, মায়ের চুল আঁচড়ে দেয়—এ এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। যার সাক্ষী হাসপাতালটির পুরনো সব কর্মচারী।
পাঁচ বছর ধরে হাসপাতালে দিন কাটছে মা- মেয়ে মরিয়ম ও মারিয়ারগত ১৮ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালটির একটি ওয়ার্ডের বারান্দার দিকের কোণার বেডে বসে আছেন মরিয়ম। কাঁধ পর্যন্ত ছাঁটা চুল, পরনে লাল-ঘিয়ে রংয়ের মিশেলের সালোয়ার-কামিজ। কথা বলতে চাইলে কিছুটা শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন মরিয়ম। তারপর কিছু একটা বললেন, কিন্তু তার সব কথা বোঝা যায় না। আপনার কী হয়েছে—জানতে চাইলে তিনি এলোমেলোভাবে চারিদিকে তাকিয়ে বলেন, ‘হাত-পাঁ কাঁপে, টাইফয়েড হইছিল।’
গত মঙ্গলবার পুরো দুপুরটা মরিয়ম-মারিয়ার বেডে বসে থেকে দেখা গেল, দুপুর হতেই বেডের ওপরে আলাদা কাপড় বিছিয়ে পাঁচ বছরের মেয়েটা খাবারের আয়োজন করে। দুটো প্লেট, হাসপাতাল থেকে দেওয়া ভাত-তরকারির বাটি তুলে দিল মায়ের সামনে। প্লেটে পানি ঢেলে মায়ের হাত ধোয়ালো, ওর চেয়েও ভারী পানির প্লাস্টিকের ক্যান তুলে পানির মগে পানি ঢেলে দিল।ভাত বেড়ে দিল মায়ের প্লেটে। এমনকি মেয়েটা হাসপাতাল থেকে দেওয়া মাংসের বাটি থেকে দুটুকরো মাংসই তুলে দিল মায়ের প্লেটে।
তুমি এক টুকরো মাংস নাও বললেই মেয়েটা বলে উঠল, ‘মা মাংস খেতে ভালোবাসে।’ আর সে খেল পাশের বেড থেকে দেওয়া আলু ভর্তা দিয়ে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন