মোবাইলে ছবি তুলতে টিপস
বর্তমানে ফটোগ্রাফি মানেই মোবাইল ফোন। ছবি তুলতে মোবাইল ফোন অনন্য এক ডিভাইসের নাম। আর স্মার্টফোন সঙ্গে থাকলে ছবি তোলার জন্য এখন আলাদা করে ক্যামেরা প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কিভাবে ভাল মানের ছবি তোলা যায় তা অনেকেই জানে না। তাইতো আজকে আপনাদের সাথে কিছু পরামর্শ শেয়ার করব আশাকরি কিভাবে মোবাইলে ভাল ছবি তোলা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক…
লেন্স পরিষ্কার রাখুন
স্মার্টফোন সাধারণত অনেকক্ষণ হাতে,পকেটে বা ব্যাগে থাকে তাই লেন্সের ওপর তেল-ময়লা জমতে পারে। ছবির ওভারল্যাপিং বন্ধ করতে লেন্স পরিষ্কার করুন। লেন্স পরিষ্কার করার সময় যাতে দাগ না পড়ে সেদিকে সতর্ক থাকুন।
কাঁপা কাঁপা হাতে ছবি ভালো হয় না
ঝড়ো আবহাওয়া বা তীব্র শীত হাত কাঁপছে! হাত কাঁপলে ছবি ভালো হবে না। ছবি তোলার সময় স্থির হয়ে ছবি তুলুন। ছবি তোলার সময় ফোনটির ভারসাম্য ঠিক রাখা জরুরি।
আলোকে বন্ধু ভাবুন
স্বাভাবিক আলো ছবির জন্য ভালো। কিন্তু অনেক সময় স্বাভাবিক আলো অন্য বস্তুর ওপর ছায়া ফেলে। ছবির অতিরিক্ত আবছাভাব দূর করতে দিনের বেলাতেও ফ্ল্যাশ ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ক্যামেরায় যদি পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী আলো ঠিকঠাক করে নেওয়ার সুবিধা থাকে তবে অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্য নিন। এতে আপনার ছবি হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে নিতে পারবে।
বিভিন্ন কোণ থেকে চেষ্টা করতে পারেন
যখন আলো নিয়ে আপনার বিশেষ কিছু করার থাকবে না বা আপনার পছন্দ অনুযায়ী শট নিতে পারবেন না তখন ভিন্ন কোন থেকে চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, যদি একই বস্তু বা দৃশ্যের একাধিক ছবি তোলার সুযোগ থাকে তখন বিভিন্ন কোণ থেকে তা করা উচিত্। এতে আপনার কাঙ্ক্ষিত ছবিটি ঝাপসা বা অনেক বেশি আবছা এলেও বিভিন্ন কোন থেকে তোলা ছবি ব্যাকআপ হিসেবে থাকবে যা কাজে লাগবে।
আপনার ক্যামেরা ফোনের সর্বোচ্চ রেজুলেশন ব্যবহার করুন
আপনার স্মার্টফোনে যদি ছবির আকার বাড়ানো কমানোর অপশন থাকে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মাপের ছবি তুলুন। সাধারণত ছবি যত বড় হবে তত বেশি ডিটেইল আপনার ছবিতে ধারণ করতে পারবেন। ছবি রিসাইজের সুবিধা পেতে এবং ঝকঝকে পরিষ্কার ছবি পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ রেজুলেশনের ছবি তোলার বিকল্প নেই।
ডিজিটাল জুম পরিহার করুন
তত্ত্বের ক্ষেত্রে ডিজিটাল জুম ভালো একটি ধারণা হতে পারে কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে ডিজিটাল জুম করে তোলা ছবিটি আশানুরূপ নাও হতে পারে। পক্ষান্তরে আপনি যে বস্তুর ছবি তুলছেন তার কাছে গিয়ে আপনার সাবজেক্টের ছবি তুলতে পারেন এবং যদি ক্ষুদ্র কোনো বস্তুর পরিষ্কার ছবির ক্লোজ শট দরকার হয় তখন তার কাছে গিয়ে জুম ব্যবহার করতে পারেন। যতটা সম্ভব কাছাকাছি গিয়ে ছবি তোলা ভালো।
শুটিং মোড পরীক্ষা করুন
কোনো ক্ষুদ্র বস্তুর পরিষ্কার ছবি তোলার সময় ম্যাক্রো মোডে তুলতে পারেন। ক্যামেরা অ্যাপ্লিকেশনে এই মোডটি পাবেন।
ফটো তোলার আগে অবশ্য মাথায় রাখবেন যে বিষয়গুলি।
এখন আমাদের দেশে তরুনদের মাঝে ফটোগ্রাফিটা পেশা এবং নেশা হিসেবে কতটা জনপ্রিয় তা আর বর্ণনা না করলেও চলবে। তাই সরাসরি কাজের কথায় চলে যাচ্ছি। আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য কিভাবে আরেকটু ভাল ছবি তোলা যায়। চিন্তা ভাবনা করে কিছু স্টেপ্স বের করলাম যেগুলো আসলেই অনেক কার্যকর ফটোগ্রাফিতে আরেকটু ঝানু হবার জন্য। খুব সহজ কিছু টিপস কিন্তু মনে থাকেনা সবসময় আবার অনেকেই হয়তো জানিনা। আবার এমনও হতে পারে দামী দামী সব ক্যামেরা নিয়ে ঘুরছি ঠিকই কিন্তু এসব ব্যাপারে কোন আইডিয়া নেই।
ফটোগ্রাফির মুল উপকরন একটি ভাল ক্যামেরা। আর সাধারনত প্রথমবার ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কনফিউশন থাকে আর অনেকেই ভুল করে এমন কোন ক্যামেরা কিনে ফেলি যেগুলো হয়তো আমাদের কোন কাজেই আসে না। তাই সঠিক ক্যামেরাটা বাছাই করা খুব প্রয়োজন। আর এজন্য দরকার হলে কারো সাহায্য নেয়াতেও পিছপা উচিৎ হবে না। তাদেরই সাহায্য যারা ইতিমধ্যে ক্যামেরা কেনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আর অনলাইনে আছে নানা রকম রিভিউ। বাজেটের মধ্যে কোন ক্যামেরা কেন ভাল, কোনটা দিয়ে কি করা যায়, কোন লেন্সটা ভাল এসব যাচাই বাছাই করেই ক্যামেরা কেনা উচিৎ। এমনও করতে পারেন, যদি কোন বন্ধুর কাছ থেকে বা কারো কাছ থেকে ক্যামেরা ধার করতে পারেন কয়েকদিনের জন্য, তাহলে, নিজে ক্যামেরা কেনার আগে ধার করা ক্যামেরাটা ব্যবহার করে দেখুন। তাহলে কিছু আইডিয়া আপনার মাথায় চলে আসবে। সব ক্যামেরাই ভাল না আর সব মডেলের ক্যামেরাই সব ফিচার থাকে না। ক্যামেরা কেনার আগে ক্যামেরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাটা খুব জরুরী।
ফটোগ্রাফির কিছু বেসিক আছে এবং ফটোগ্রাফি প্র্যাকটিস শুরু করার আগে এসব বেসিক ব্যাপারগুলো আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে। যেমন কম্পোজিশন, লাইটিং, ফোকাসিং, সাবজেক্ট, ব্যাকগ্রাউন্ড, ডেপথ অব ফিল্ড, ফ্রেমিং – ইত্যাদি ব্যাপারগুলো নিজেই নিজেই আয়ত্ত করে নিতে পারেন। অনলাইনে নানা ওয়েবসাইটে আছে হাজারো টিপস। আর আমাদের এই টেক সাইটেও আছে অনেক ধরনের ফটোগ্রাফি টিউটোরিয়ালস। এগুলোরও সাহায্য নিতে পারেন। শেখার আগে প্র্যাকটিসে না গিয়ে এসব বেসিক ব্যাপারগুলো জেনে নিয়ে এরপর শুরু করলেই ভাল।
প্রস্তুত থাকুন সবসময়ঃ
ভাল ছবি তোলার সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকা আর তার চাইতে বড় ব্যাপার হলো সে জায়গায় হাতে ক্যামেরা নিয়ে রেডি থাকা। নিজের ক্যামারাটি সবসময় বহন করার চেষ্টা করুন আর ব্যবহার করুন। নানা রকম শট নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। শুধু বহন করলেই হবে না।
ছবির জন্য “সাবজেক্ট” খোজা বাদ দিন আর দেখতে শিখুন
চোখ মেলে দেখতে শিখুন। ছবি তোলার জন্য সাবজেক্ট খুজলে আপনি সেই সাবজেক্ট খুজে পাবেন না। চারিদিকে চোখ মেলে ভাল ভাবে অবজার্ভ করতে শিখুন। কোথাও ছবি তুলতে গেলে সেই জায়গাটা ভালভাবে কয়েকবার হেটে দেখুন। চারিদিকে নজর দিন। দেখার চেস্টা করুন জায়গাটির কোন বৈশিষ্ট্য আছে কিনা। এবং কিছু না কিছু পেয়ে যাবেন। কালারগুলোকে খুজে বের করার চেষ্টা করুন। আকাশকে দেখার চেষ্টা করুন নানা এঙ্গেল থেকে। রিপিটিশন এবং রিদম খোজার চেষ্টা করুন। ভালভাবে দেখুন সেই জায়গায় কোন ব্যাপারটা আশে পাশের ব্যাপারগুলো থেকে সম্পুর্ন আলাদা। আলোর খেলাটা দেখার চেষ্টা করুন। ছায়া কিভাবে কিসের উপরে এসে পড়েছে দেখার চেষ্টা করুন। ইমোশন খোজার চেষ্টা করুন। লাইন এবং শেপ খুজে দেখুন। কোন ধরনের Texture খুজে পান কিনা দেখুন। সাদাকালো ছবির জন্য কোন শেপ বা কোন বৈশিষ্ট্য খোজার চেষ্টা করুন।
অনেকগুলো ব্যাপার থেকে কোন ব্যাপারটা সম্পুর্ন আলাদা সেটা দেখুন। সেই জায়গায় থাকার কথা না তাও আছে – এমন কোন কিছু খুজে পান কিনা দেখুন
Be Simple:
নিজের ছবিগুলোকে যতটা সম্ভব সিম্পল রাখার চেষ্টা করুন। সাবজেক্টের যত কাছে যাওয়া যায় যান। নিজের পা এবং যদি জুম লেন্স থেকে থাকে, তাহলে তার সঠিক ব্যবহার করুন। বার বার ভিউফাইন্ডারে দেখে নিজের কম্পোজিশন এবং ফ্রেমকে আরো ফাইন-টিউন করুন। আর ফ্রেম থেকে এমন সবকিছু বাদ দিন যা আপনার সাবজেক্টকে ফুটিয়ে তুলতে কোন দরকার হবে না।
সেরাটি দেখানঃ
সারাদিনে হয়তো শত শত ছবি তুলতে পারেন কিন্তু সবাইকে দেখানোর সময় শুধু নিজের সেরা কাজটাই দেখান। ফেসবুকে ঘন ঘন ছবি আপলোড না করে চিন্তা ভাবনা করে ছবি শেয়ার করুন। আর ফটোগ্রাফি সাইটগুলো যেমন ফ্লিকার বা 500px এসব জায়গায় কোন ভাবে সব ধরনের ছবি শেয়ার করবেন না। দরকার হলে মাসে একটা করে ছবি শেয়ার করুন এবং সেরাটা করুন। এমন ছবি শেয়ার করুন যে ছবি আপনি অনেক চিন্তা ভাবনা করে একটা অর্থ ফুটিয়ে তোলার জন্য তুলেছেন। যা তুলেন তাই শেয়ার করলে একসময় আপনার ছবিগুলো সস্তা হয়ে যেতে পারে আর তার চাইতেও বড় কথা শত সাধারন ছবির মাঝে অসাধারন ছবিগুলো হারিয়ে যাবে, কেউ টেরই পাবে না। সুতারাং এই ব্যাপারটা মাথায় রাখুন যদি নিজের ছবি দিয়ে সবাইকে তাক লাগাতে চান।
আপনার তোলা ছবিগুলোর জন্য হয়তো অনেক সময় সমালোচনা শুনতে হয়। এগুলো হজম করার চেষ্টা করুন কারন এগুলোই আপনাকে শেখাবে। অযথা তর্কে জড়িয়ে কোন লাভ নেই। কেউ বাজে কমেন্ট করলেও চুপ করে শুনে থাকুন আর নিজের কাজ নিজেই করে যান। আমি বিশ্বাস করি সবার ছবি কোন না কোন অংশে ভাল কারন যে ছবি তোলে সে কিছু না কিছু মাথায় রেখেই তোলে আর তার ভাবনাটা সবার মাঝে রিফ্লেক্ট করবে না এটাই সবাভাবিক।
প্রতিটি ছবিকে একটি গল্প হিসেবে চিন্তা করুন আর ছবি দিয়ে নিজের গল্পটাকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন। ছবিতে যেন থাকে একটি গল্প। হোক সেটা এক লাইনের বা হোক সে কোন প্রবন্ধ। কিন্তু ছবিটে এক্সপ্রেসিভ কিছু থাকতেই হবে। সাবজেক্ট লাইনে আপনার চিন্তার রিফ্লেকশন যেন থাকে। ফ্রেমিং এর ক্ষেত্রে গতানুগতিক ধারা থেকেও বের হয়ে আসতে পারেন নতুন কোন গল্প ফুটিয়ে তোলার জন্য।
বন্ধুরা আশাকরি টিপস গুলো আপনারা ভাল ভাবে আয়ত্ব করেছেন। তাহলে আজ থেকে টিপস গুলো কাজে লাগানে শুরু করে দিন দেখবেন আপনার ফটোগ্রাফির দক্ষতা বেড়ে যাবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সারজিস আলম: দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সার ধরেছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, “দেশের সিস্টেমগুলোতে ক্যান্সারবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন