যে কারনে ধুঁকে ধুঁকে শেষ হচ্ছে মা ও দুই ছেলে,ঘটনাটি শুনলে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন না।
নাটোর সদর উপজেলার লালমনিপুর গ্রামের দিনমজুর মফিজ উদ্দিন। স্ত্রী আর দুই ছেলে নিয়ে তাঁর সংসার। অভাব থাকলেও সংসারে সুখের কমতি ছিল না তাঁর।
কিন্তু হঠাৎ তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে দুর্দশা। অজানা রোগে তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেই এখন ধুঁকে ধুঁকে শেষ হচ্ছে।
আট বছর আগে মফিজের স্ত্রী জ্যোৎস্না বেগম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে মানসিক ও শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
এক বছরের মধ্যে দুই ছেলে জহুরুল ইসলাম ও রকিবুল ইসলামও অসুস্থ হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
সেই থেকে দারিদ্র্য আর সীমাহীন যন্ত্রণা নিয়ে দিন পার করছেন মফিজ উদ্দিন। বসতভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই পরিবারটির। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।
গত সোমবার দুপুরে মফিজ উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কুঁড়েঘরের বাইরে পড়ে আছেন মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী জ্যোৎস্না (৫০)।
পাশে বসে আছেন দুই সন্তান জহুরুল (২৪) ও রকিবুল (২২)। ধরে বসালেই বসতে পারেন তাঁরা। জ্যোৎস্না আগেই বাক্শক্তি হারিয়েছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন মফিজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আমি অসহায়, আমার কোনো সম্পদ নাই। নিজে যা আয় করি, তা দিয়ে তিনটা প্রতিবন্ধী মানুষের আহার জোগানোর চেষ্টা করি।
কোনো দিন তিন বেলা সবার মুখে আহার জোটাতে পারি, কোনো দিন পারি না। বউ আর দুই ছেলের চিকিৎসা করার সাধ্য আমার নাই।
চোখের সামনে তাঁরা ধুঁকে ধুঁকে মরছে। আর সহ্য করতে পারছি না।’
কাঁপা কাঁপা গলায় মফিজ উদ্দিনের বড় ছেলে জহুরুল শোনালেন কষ্টের কথা। বললেন, ছোটবেলা থেকেই অন্যের বাড়িতে কাজ করে এসএসসি পাস করেন তিনি।
হঠাৎ তাঁর মা ও ছোট ভাইয়ের মতো তাঁরও মাথা ঘুরতে ঘুরতে শরীর ভারী হয়ে আসতে থাকে। কিছুদিন পর উঠে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় কিছুদিনের মধ্যে তিনি দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন। জহুরুল বলেন, ‘আমরা সুস্থ হয়ে আর দশটা মানুষের মতো স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই।’
আছিয়া খাতুন নামের এক প্রতিবেশী বলেন, একসময় সুন্দর চলছিল তাঁদের (মফিজ) সংসার। অন্যের বাড়িতে কাজ করলেও তেমন অভাব হতো না খাওয়া-পরার। হঠাৎ করে মা আর ছেলে দুটো অসুস্থ হয়ে গেলেন। তাঁরা খুবই অসহায়।
আজিজুল ইসলাম নামের আরেক প্রতিবেশী বলেন, মফিজ ভাইয়ের ভয়ংকর কষ্ট। বাড়ির চারজনের তিনজনই প্রতিবন্ধী। দুজন প্রতিবন্ধী ভাতা পান। কিন্তু তা দিয়ে চলতে পারেন না তাঁরা।
চিকিৎসা করার অর্থ তাঁদের নেই। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে মফিজ উদ্দিনের পাশে দাঁড়াত, তাহলে পরিবারটা বেঁচে যেত।
নাটোর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটাকে জেনেটিক্যাল (জিনগত) সমস্যা বলে মনে হচ্ছে।
তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য উচ্চতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন।
আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা করার চেষ্টা করব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও চেষ্টা করব।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন