‘যে দেশে সাগর রুনির বিচার হয় না সে দেশে কি সিদ্দিকীর বিচার হবে?’
কুপিয়ে খুন হওয়া রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিমের স্ত্রী হোসনে আরা শিলা বলেছেন, ‘আজ আমার স্বামী যদি বাজারে আলু পটল বিক্রি করত, তাহলে তিনি খুন হতেন না। সে বুদ্ধিজীবী ছিল সেই জন্যেই তাকে হত্যা করা হলো।’ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের উদ্যোগে অধ্যাপক রেজাউল করিমের হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে আয়োজিত এক শোকসভায় হোসনে আরা এসব কথা বলেন।
অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বিচার হবে, বিচার হবে এটা শুধু মুখের কথা নয় এর প্রমাণ দিতে হবে। আমি ভয় পাচ্ছি। যে দেশে সাগর রুনির বিচার হয় না সে দেশে কি সিদ্দিকীর বিচার হবে? প্রধানমন্ত্রীকে বলব বাংলাদেশ কত উন্নত হয়েছে, আপনি সিদ্দিকীর হত্যাকারীদের শাস্তি দিয়ে তার প্রমাণ করুন।’
হোসনে আরা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন,‘ বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুধু সিদ্দিকীর ( অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী) গানের স্কুলের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, তিনি তো সেখানে শুধু গান-বাজনা করতেন না, ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্রিকেট খেলার সরঞ্জামও কিনে দিতেন। এটা যদি তার অপরাধ হয় তাহলে সব ক্রিকেটপ্রেমীকেও হত্যা করা উচিত। তিনি বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার গরিব-দুঃখী ছাত্রসহ সবার পাশেই দাঁড়াতেন এ কথা কয়জন জানেন?’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষটাকে এভাবে চলে যেতে হলো। তিন দিন আগেও আমি ভাবিনি তার জন্য আমাকে কথা বলতে হবে। কিছুদিন আগে সিদ্দিকী ওর মাকে নিয়ে রাতে একটা কবিতা লিখেছিলো। তারপর কবিতার ওই কথাগুলো নিয়ে ও আমার সামনে শিশুর মতো কাঁদছিলো। অনেকে বলছে তার সেইসব লেখা নাকি নাস্তিকদের লেখা। তার বানানো একটা গানের স্কুল নিয়েও অনেক কথা হচ্ছে। আপনারা এলাকায় গিয়ে দেখুন কেমন সেই স্কুল। কেমন মানুষ ছিলেন তিনি।’
গ্রামের গরীব ছেলে মেয়েগুলো শুধু টিভিতেই গান দেখতো। তারা যাতে বাস্তবে হারমনি ধরে গান শিখতে পারে সেই জন্যেই তিনি ওই স্কুল তৈরি করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন হোসনে আরা।
শোক সভায় অধ্যাপক সিদ্দিকীর মেয়ে রেজোয়ানা হাসিন প্রথমেই সাংবাদিকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার বাবাকে নাস্তিক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। উনি নাকি ব্লগার, ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন না। আমার বাবার প্রযুক্তি সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই ছিলো না। ব্লগার হওয়ার প্রশ্নই আসে না। প্লিজ আপনারা এইসব বন্ধ করুন। আমার বাবা হয়তো ঠিক মতো নামাজে পড়তেন না। কিন্তু তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন। তিনি কখনোই কোনো ধরনের ধর্মবিদ্যেষী কথা বা লেখা লিখতেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের সমাজে এখন একটা প্রথা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। টুপি মানেই বিএনপি, জামায়াত-শিবির। আর মুক্তমনা মানেই আওয়ামী লীগ। আপনারা এসব বন্ধ করুন। আমার বাবার পিছনে ট্যাগ লাগানো বন্ধ করুন। এসব মিথ থেকে আপনারা বেরিয়ে আসুন।’
এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে শোক সভায় উপস্থিত বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সবার মধ্যে কান্নার রোল পড়ে যায়। এরপর অধ্যাপক রেজাউলের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ কথা বলতে আসলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লে কথা বলতে পারেননি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভরিতে এবার ১,৯৯৪ টাকা বাড়লো স্বর্ণের দাম
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন
সংস্কার হলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কত কমানো সম্ভব জানালো সিপিডি
মূল্য নির্ধারণ কাঠামোর সংস্কার হলে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ১১বিস্তারিত পড়ুন
রাজশাহীতে সমন্বয়ককে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় এক সমন্বয়ককে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগবিস্তারিত পড়ুন