যৌন অত্যাচার, ড্রাগ, নেশা, জেলের অন্ধকার কাটিয়ে আজ তিনি কোটিপতি
নেশার ঘোরে একটা সময় চেতনা পর্যন্ত থাকত না তাঁর। রাস্তায় পড়ে থাকা যুবকের দিকে ফিরেও তাকাত না কেউ। ১৩ বছর আগে যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে ঘরছাড়া পর্যন্ত হতে হয়েছিল তাঁকে। একটা সময় হেরোইনের নেশায় মরতে বসেছিলেন।
জেলের অন্ধকারে কেটেছে জীবনের বেশ কিছুটা সময়। তবু সেই সব দিনকে পাশ কাটিয়ে আজ তিনি খবরের শিরোনামে। অন্ধকারের বর্ণমালা পেরিয়ে আলোকবর্তিকার মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন ৪৬ বছরের খালিল রাফাতি। কিন্তু কীভাবে এমন অসম্ভবকে সম্ভব করলেন লস অ্যাঞ্জেলসের খালিল?
হেরোইনের নেশায় যখন তিনি মৃত প্রায়, তখন রাফাতির এক বন্ধু তাঁকে এক ধরনের হেল্থ ডিঙ্ক খাওয়াত। এই হেল্থ জুস খেয়ে কিছুটা সুস্থ থাকতেন খালিল। প্রচণ্ড মনের জোরে আস্তে আস্তে নেশা ছেড়েছেন। সুস্থ হওয়ার পর দেখা যায় হেরোইনের নেশা কেটে এ বার জুসের নেশায় পড়েছেন রাফাতি। তখনই নিজে জুস বানানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে।
কয়েক বছর আগে তৈরি করেন নিজস্ব জুস কোম্পানি, সান লাইফ অর্গানাইজেশন। এই মুহূর্তে লস অ্যাঞ্জেলসের ছয়টি জায়গায় তাঁর কোম্পানির আউটলেট রয়েছে। তাঁর কোম্পানি শুধু জুসই নয়, নানান ফ্লেভারে, নানান জনপ্রিয় স্মুদিও তৈরি করে। ‘লাভ, হেল্থ অ্যান্ড ইনস্পায়ার’— এটাই এখন রাফাতির জীবনের মূল কথা।
পাশাপাশি তাঁর কোম্পানির ট্যাগ লাইনও এটাই। মাথা খাটিয়ে বের করেছেন সান লাইফ কোম্পানির সিগনেচার ড্রিঙ্কটিও। খেজুর ও কলা দিয়ে বানানো ‘ওলভেরিন’ স্মুদি স্থানীয়দের মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়।
এলিজাবেথ টেলর থেকে শুরু করে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত অভিনেতা জেফ ব্রিজ, গান’স অ্যান্ড রোজেসের গিটারিস্ট স্লাশ রয়েছেন তাঁর গুণমুগ্ধ ভক্তদের তালিকায়।
২০০১ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু’র একটি পার্টিতে হেরোইনের ওভারডোজের জন্য মরনাপন্ন অবস্থা হয়েছিল খালিলের। সেই জীবন থেকে এখন ‘সান লাইফ’-এর দৌলতে তিনি কোটিপতি। ২০০৩ সালে অসামাজিক কাজকর্মে জড়িত থাকার অপরাধে তাঁকে জেলেও যেতে হয়েছিল। কেমন ছিল সেই সময়টা?
রাফাতি নিজেই জানাচ্ছেন, ‘নীচে থেকে আরও নীচে নেমে যাচ্ছিলাম’।খারাপ সময়টা কাটিয়ে উঠে নিজের শরীর-স্বস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া শুরু করেন খালিল।
২০০৭ সালে তৈরি করেন রিভিয়েরা রিকভারি সেন্টার।
নেশাগ্রস্ত ও অসুস্থ মানুষদেরও স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলাই তাঁর লক্ষ্য। এই রিকভারি সেন্টারেই রোগী এবং কর্মচারীদের জন্য প্রথম হেল্থ জুসটি বানিয়েছিলেন রাফাতি। এখন তিনিই লস অ্যাঞ্জেলসের ‘জুস টাইকুন’। হ্যাঁ, এই নামেই স্থানীয়ভাবে পরিচিত তিনি। এই মুহূর্তে ৩২ রকম জুস তৈরি করে ‘সান লাইফ’।
তার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন শেকস, আকাই বেরি স্মুদি, কফি, ফ্রোজেন ইয়োগার্ট এমনই নানান সুপারফুড জুস। হেলদি স্মুদি তৈরিতে তিনি অ্যালকাইন ওয়াটার, হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট, ড্যান্ডেলিওন গ্রিন ব্যবহার করেন। তবে শুধু জুসই নয়, নানান হেলথ ড্রিঙ্কের সঙ্গে হেলদি বার্তাও প্রচার করেন খালিল।
‘লাভ, হিল অ্যান্ড ইন্সপায়ার’ লেখা টি-শার্ট নিজেও পরেন, আবার বিক্রিও করেন। লিখেছেন নিজের বইও। ‘আই ফরগট টু ডাই’-এর পাতায় নিজের জীবনের কথাই তুলে ধরেছেন খালিল রাফাতি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন
এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?
এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন
৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন
১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন