সামনে দোকান বসিয়ে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে
রানা প্লাজার জমিতে নৌকা কচুরিপানা কাটছেন রাখাল
সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তÍূপ অপসারণের ফলে সৃষ্ট খাদে এখন পানি জমেছে। এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিকের প্রাণ কেড়ে নেয়া রানা প্লাজার ১৮ শতাংশ জায়গার ওই খাদে আছে একটি নৌকা। সেখানে জন্মেছে কচুরিপানাও। একজন রাখাল এই কচুরিপানা কাটছেন। আহত কয়েকজন শ্রমিক সেখানে মাছের পোনা ছেড়েছিলেন। গত বছর তেলাপিয়াসহ নানা জাতের মাছ দেখা গেলও কচুরিপানার কারণে এখন আর সেগুলো চোখে পড়ে না।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, রানা প্লাজা ধসে স্ত্রী হারানো সুকুমার প্রথম এই খাদের পানিতে তেলাপিয়া ও অন্যান্য মাছের পোনা ছাড়েন। তার দেখাদেখি আহত শ্রমিক মনির হোসেনসহ কয়েকজন তিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাদের স্বজনেরা সেখানে আরো কিছু মাছের পোনা ছাড়েন।
খাদের সামনের জমি দখল করে টং দোকান তুলে প্রতিদিন ভাড়াও নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল। আর তার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পূর্ব পাশে সড়কের ওপর বিভিন্ন ধরনের রেন্ট-এ-কার স্ট্যান্ড বানিয়ে কিছু লোক রমরমা ব্যবসা করছেন। জেলা প্রশাসনের প থেকে কাঁটাতার ও টিনের যে বেড়া দেয়া হয়েছিল সামনের অংশে তা এখন আর নেই। অথচ উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই জমিসহ মালিক রানার সব সম্পত্তি বিক্রি করে নিহত, অঙ্গহারা শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে তিপূরণ দেয়ার কথা। ধসে পড়ার আগে এই ভবনে ছিল কয়েকটি গার্মেন্ট, একটি ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে এর উত্তর পাশে আরএস টাওয়ার ও দক্ষিণ পাশে অন্য মালিকের ভবন।
অবশ্য রানা প্লাজা ধসে পড়ার দিনটিকে সামনে রেখে টং দোকানগুলো পাশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রতি বছর এভাবেই দোকানগুলো সরিয়ে দিবসটি পালন শেষে সেগুলো আবার যথাস্থানে বসানো হয়। এ দিকে হাইকোর্টের নির্দেশনার পর জায়গাটির দখল নিশ্চিত করতে পুলিশের যে অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছিল, তা-ও এখন নেই। সেখানেও গড়ে উঠেছে দোকান।
আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ঢাকার তৎকালীন জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সোহেল রানার মালিকানাধীন রানা প্লাজার ১৮ শতাংশ, সাভার বাজার রোডে রানা টাওয়ারের ১০ শতাংশ এবং ধামরাইয়ের কালামপুরে একটি ইটভাটার এক একর ৪৬ শতাংশ জমি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের চূড়ান্ত আদেশ দিয়ে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। পরে ধসে পড়া রানা প্লাজার সেই জায়গাটা কাঁটাতার ও টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরাও করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু কিছুদিন পর সেসব বেড়া রাতের আঁধারে খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
টং দোকানদার হানিফ জানান, সাভার ব্যাংক কলোনি থেকে এক রাখাল প্রতিদিন নৌকা দিয়ে তার গরুর জন্য কচুরিপানা কেটে নিচ্ছে। শ্রমিক নেতা সৌমিত্র জানান, রানা প্লাজা ধসের পর স্থানীয় কিছু লোক তেলাপিয়া মাছ ছাড়েন। এখন কচুরিপানার জন্য তেলাপিয়া মাছগুলো নেই। মাগুর মাছসহ জিওল মাছ থাকতে পারে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, রানা প্লাজার সামনের জমিতে ছোট-বড় বেশ ২০-২৫টি টং দোকান আছে। সোহেল রানার সহযোগীরা দোকানগুলো বসিয়েছেন। প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে ১০০ টাকা করে তুলছে চক্রটি। সুজন আরো জানান, দোকানগুলো এই দিবস এলেই পেছনে সরিয়ে রাখা হয়। ২৪ তারিখ চলে গেলেই পুনরায় যথাস্থানে বসিয়ে দেয়া হয়।
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু নাসের বেগ নয়া দিগন্তকে জানান, রানা প্লাজার ধ্বংসস্তÍূপ অপসারণের ফলে সৃষ্ট খাদে কারা মাছ ছেড়েছেন এবং নৌকা দিয়ে কচুরিপানা কাটছেন তা আমার জানা নেই, খোঁজ নেব। আর টং দোকান বসানোর জন্য আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন