রাবিতে আড়াই লাখ টাকায় ভর্তির চুক্তি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাওয়ার সন্ধান। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিলন নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা। পরে ক্যাম্পাসে শিলনসহ জালিয়াতি চক্রের অনেকের সঙ্গেই দেখা। শেষে পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনে মেসেজের (খুদেবার্তা) মাধ্যমে উত্তর জানিয়ে দিতে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকায় ‘এইচ’ ইউনিটে (প্রকৌশল অনুষদ) ভর্তির চুক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এইচ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বুধবার বিকেলে ডিভাইস ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর জেনে নেওয়ার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাণপুর গ্রামের এক ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী এভাবেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। ওই পরীক্ষার্থীর বাবার নাম একেএম নাজমুস সাহাদৎ ও মায়ের নাম শাহিন আখতার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে দেওয়া ওই লিখিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর একটি অনুলিপি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় দিনের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চতুর্থ বিজ্ঞান ভবনের ৩৩৩ নম্বর কক্ষ থেকে হাসানুল বারীকে ডিভাইসসহ আটক করা হয়। এক ঘণ্টার পরীক্ষার শেষের আধা ঘণ্টায় মুঠোফোনে খুদেবার্তার (এসএমএস) মাধ্যমে পাওয়া উত্তরে বৃত্ত ভরাট করছিল ওই শিক্ষার্থী। পরিদর্শকরা বিষয়টি বুঝতে পেয়ে তাকে বহিষ্কার করে প্রক্টর দফতরে পাঠান। পরে সেখানে অবস্থিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা বেগম ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই পরীক্ষার্থী আমাদের কাছে জালিয়াতি চক্রের যে নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়েছে তা আমরা র্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যদের দিয়েছি, যাতে করে পুরো জালিয়াতি চক্রকেই বের করা যায়।’
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে ওই পরীক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘শিলন নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার একাধিকবার কথা হয় একটি মুঠোফোন নম্বরে (০১৭৬৫….৫৪)। যার সঙ্গে ফেসবুকেই প্রথম পরিচয়। এর পর পরীক্ষা দিতে এসে ওই চক্রের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। দুই লাখ ৫০ হাজার টাকায় তারা আমাকে চান্স পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চুক্তি করেন। এর পর পরীক্ষা চলাকালে একটি ফোন নম্বর (০১৯১০০….০১) পাঁচটি এসএমএসের মাধ্যমে ‘বি’ সেটের কিছু উত্তর পেয়ে থাকি।’
বুধবার বিকেলে আটকের পর প্রক্টর দফতরে ওই পরীক্ষার্থী বলেন, ‘চুক্তির পর তার থেকে এসএসসি ও এইচএসসির মূল সনদ জিম্মি নেয় জালিয়াতি চক্রের হোতারা। চান্স পাওয়ার পর টাকা দিলেই তবে সেই সনদ তাকে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।’
শিলন নামের জালিয়াতি চক্রের ওই সদস্যের সঙ্গে এই মুঠোফোন (০১৭৬৫….৫৪) নম্বরে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে নিজের পরিচয় দিতে অস্বীকার করেন তিনি। পরে তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের একজন সদস্য পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগে পড়াশোনা করেন। তবে বিভাগের নাম ও কোন হলে থাকেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। এদিকে পরীক্ষার হলে যে বাংলালিংক মুঠোফোন নম্বর থেকে এসএমএস পাঠানো হয়েছিল তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতরের একটি সূত্র জানায়, হাসানুল বারী নামের ওই পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি জালিয়াতি চক্রের বেশকিছু তথ্য দিয়েছে, যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীও রয়েছেন। ওই পরীক্ষার্থী কুষ্টিয়া থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর সাক্ষাৎ হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের ‘লাল রংয়ের পালসার’ মোটরবাইক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি স্থানে গিয়েও তারা সাক্ষাৎ করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন