রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

রিকশা চালিয়ে মাস্টার্স পড়ছে জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক এনামুলের গল্প

আব্দুর রাজ্জাক রানা : জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক মেধাবী ছাত্র এনামুল হক। সে কখনো বাদাম কখনো আখ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতো। সে এখন খুলনা মহানগরীতে রিকশা চালিয়ে সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স শেষ করে মাস্টার্স করছে। পাশাপাশি নিজের ও ছোট ভাইয়ের পড়াশুনা, জটিলরোগে আক্রান্ত গর্ভধারীনী মায়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।

পিতা-মাতার অভাব অনটনের সংসারে এনামুল হকের জন্ম। শত প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষা সংগ্রামে সে এক সাহসী সৈনিক। ১৯৯৮ সালে সে (তার বয়স যখন ৭ বছর) কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট শহীদ খালেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। তখন থেকেই তার জীবনযুদ্ধ শুরু। জীবন সংগ্রামী এনামুল হকের রিকশায় উঠে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয়। কথার ফাঁকে ফাঁকে শোনায় তার সংগ্রামী জীবনের গল্প।

এরপর আবেগ-আপ্লুত হয়ে তার কষ্টে গাঁথা ঘটনার বর্ণনা করেন। যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের দিনমজুর মো. ফজলুর রহমানের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে এনামুল হক সবার বড়। স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ফজলুর রহমানের সংসার চালানোই ছিল দায়। তারপরে লেখাপড়ার খরচ চালানো তো দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিšুÍ শিশু এনামুল হক লেখাপড়ার প্রতি ছিল খুবই মনোযোগী।

অভাবের কাছে হার না মেনে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র থাকাবস্থায় লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে বাদাম বিক্রি করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে স্কুলের বই-খাতা-কলম কিনতো। এভাবে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই বহন করতো। ২০০৫ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় গ্রামের রাস্তায় মাটির কাজ করে যে টাকা আয় করতো তা দিয়েই নিজের বই-খাতা-কলম ও স্কুলের খরচ বহন করতো। তখন তার পিতা বলেন- এভাবে শুধু লেখাপড়া করলেই চলবে না সংসারেরও খরচ চালাতে হবে। তখন সে অভিমান করে গ্রাম থেকে খুলনা শহরে চলে আসে।

শুরু করে রিকশা চালানোর কাজ। রিকশা চালিয়ে নিজের খরচ বহন করে। এভাবেই তার জীবন চলতে থাকে। ২০০৮ সালে মঙ্গলকোট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১০ সালে কেশবপুর শহীদ লে. মাসুদ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। রিকশা চালিয়ে নিজের খরচ বহন করলেও মনোবল হারায়নি এনামুল। ২০১১ সালে খুলনার সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হয়। তখন পরিচয় হয় ব্যাংক কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন, স্কুল শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমের সাথে। তাদের সহযোগিতায় রিকশা কেনে এনামুল। এ সময় তাকে মঙ্গলকোট ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেনও কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেন। ২০১৫ সালে অনার্স শেষ করে সে এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্র। তার কলেজ রোল-১৪৮১, বিশ্ববিদ্যালয়ের-৯৭৪৩৮৫৬।

এখন শুধু নিজের লেখাপড়ার খরচ নয়; তার ছোট ভাই আশরাফুল আলমেরও লেখাপড়ার খরচ তার বহন করতে হয়। আশরাফুলকেও সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বিবিএ প্রথম বর্ষে ভর্তি করেছে। ইতোমধ্যে তার মা শিউলী বেগম ডায়বেটিকস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত তিন বছরে তিনদফা খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

কিডনি রোগ বিষেজ্ঞ প্রফেসার ডা. এনামুল করিমের অধীনে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। জটিলরোগে আক্রান্ত মায়ের ওষুধের জন্য প্রতিমাসে এখন পাঁচ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। লেখাপড়ার শেষ প্রান্তে এসে নিজের এবং ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং মায়ের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে রিকশাচালক এই মেধাবী ছাত্র এনামুল হিমশিম খাচ্ছে। মায়ের চিকিৎসা নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে।

এনামুলের বৃদ্ধ পিতা-মাতা গ্রামে বসবাস করলেও সে নগরীর বয়রাতে ও ছোট ভাই আশরাফুল দৌলতপুর থেকে লেখাপড়া করছে। আর একমাত্র বোন মোসাম্মদ জান্নাতুল ফেরদৌসকে অস্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়ে এলাকায় বিয়ে দিয়েছে। মেধাবী এই ছাত্রের পরিবারে সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে। এনামুল হকের মোবাইল নং-০১৯৯৩-৫০৪৫১৬।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন  

চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন

চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস

 শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

  • স্বাধীনতার জন্য সিরাজুল আলম খান জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছিল
  • ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’
  • হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
  • ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন পুলিশ সদস্য
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • চলে গেলেন হায়দার আকবর খান রনো
  • গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
  • ‘ও আল্লাহ আমার ইকবালরে কই নিয়ে গেলা’
  • ভিক্ষুকে সয়লাভ নোয়াখালীর শহর
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • কান্না জড়িত কন্ঠে কুড়িগ্রামে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল
  • অজানা গল্পঃ গহীন অরণ্যে এক সংগ্রামী নারী