রিজার্ভ চুরি : অবহেলা ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার
নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর গঠিত সরকারি কমিটি ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার অবহেলা ও অসতর্কতার প্রমাণ পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।
রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর মে মাসে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর এবারই প্রথম বিস্তারিত কিছু জানালেন ফরাসউদ্দিন। নিম্ন থেকে মাঝারি পর্যায়ের ওই কর্মকর্তারা সরাসরি অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফরাসউদ্দিন বলছেন, তাদের অবহেলা ছিল, তারা অসতর্ক ছিল এবং পরোক্ষ সহযোগিতা ছিল। নিজের কার্যালয়ে রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব বলেছেন তিনি।
তিনি আরো বলেছেন, কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পৌঁছেছে যে, চুরির কাজটি বাইরের কেউ-ই করেছে।
ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার সেটি এখনো প্রকাশ করেনি। প্রতিবেদন প্রকাশ না করার পেছনে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে সেটি হলো- এতে করে অপরাধীরা সতর্ক হয়ে যাবে।
তবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই সাইবার হামলার ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত মূল প্রতিষ্ঠান এফবিআই এ প্রতিবেদনের বিষয়ে কিছু জানে কি না সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যে পাঁচ কর্মকর্তার অবহেলা রয়েছে ফরাসউদ্দিন অবশ্য রয়টার্সকে তাদের নাম বলেনি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যেহেতু প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি তাই ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ঘটনার পর ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশে কেউ গ্রেফতার হয়নি। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে স্পষ্ট হয়নি সে বিষয়টিও।
হ্যাকারদের একটি গ্রুপ চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চুরি করার চেষ্টা করে। তবে পুরোপুরি সফল না হলেও ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয় তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোড ব্যবহার করেই এই অর্থ চুরি করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম এবং সুইফট কোড কন্ট্রোলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ৩০টি পেমেন্ট অ্যাডভাইজ পাঠায় ফিলিপাইনের স্থানীয় ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য। এর মধ্যে চারটি অ্যাডভাইজ অনার করে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, যার মাধ্যমে ৮১ মিলিয়ন ডলার সফলভাবে পাচার করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর আরসিবিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
এরআগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্বল হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার সিস্টেমের কারণেই হ্যাকাররা রিজার্ভ থেকে ৮০ মিলিয়ন ডলার চুরি করতে সক্ষম হয়েছিল। বিশ্বের সঙ্গে আর্থিক নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে একটি পুরাতন (সেকেন্ড হ্যান্ড) রাউটার ব্যবহার করে আসছিল। এর বাজার মূল্য মাত্র ১০ ডলার।
প্রতিবেদনের বিষয়ে ফরাসউদ্দিন জানান, তার ব্যক্তিগত মত হলো এটি প্রকাশ করা হোক। এতে করে এ বিষয়টি পরিষ্কার হবে যে, ঘটনার জন্য কয়েকজসন কমকর্তা অবহেলা ছিল কিন্তু তারা পুরোপুরি দায়ী নয়।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান আরো শক্ত হবে বলেও মনে করেন তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূস: নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এবার দুর্গাপূজারবিস্তারিত পড়ুন
সোমবারের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার
এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করেনবিস্তারিত পড়ুন
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৪ কোটি ডলার
এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখবিস্তারিত পড়ুন