রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের শেষ কোথায় ! আশ্রয়স্থল তলিয়ে যাওয়ায় খুঁজতে হচ্ছে নতুন জায়গা !
খাবার সংকটের পাশাপাশি সোমবার রাত থেকে বিরামহীন বৃষ্টিতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের। ভারী বৃষ্টিতে এই দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করেছে। খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভিজে যে যেখান্বেই আছে জীবন চরম আকার ধারণ করেছে। এদের মধ্যে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন।
বৃষ্টির কারণে ত্রাণ নিতেও পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। খাবারের জন্য ছটফট করছে রোহিঙ্গা শিশুরা। এর ফলে ব্যাপকভাবে রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টির কারণে সরকারি মেডিকেল ক্যাম্পে ভিড় করছেন ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত রোহিঙ্গারা।
মঙ্গলবার সকালেও কক্সবাজারের উখিয়ায় হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সরেজমিনে কক্সাবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প এলাকায় গিয়ে দুর্ভোগের এমন চিত্র দেখা গেছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক এলাকায় বুক পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক রোহিঙ্গা। রাতভর এমন অবস্থায় থেকে সময় পার করেছেন বলে তারা জানিয়েছেন। এতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে চুলা জ্বালাতে না পারায় অনেকেই ছিলেন অনাহারে। রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে অনেকে ক্যাম্প ছেড়ে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ বেরিয়ে পড়েছেন নতুন ঠিকানার সন্ধানে।
কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, কোথাও যাওয়ার রাস্তা না থাকায় সারারাত কাঁদা পানিতেই জবুথবু হয়ে রাত কাটিয়েছেন তারা। জোটেনি রাতের খাবারও। ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের স্থান হয়েছে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে। গতকাল রাতভর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে ভিজছেন তারা।
অনেককে জবুথবু হয়ে গাছের নিচে বসে থাকতে দেখা গেছে। আবার অনেকে ছাতার নিচে শিশুদের বৃষ্টি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। অনেকে হাঁটুপানি পাড়ি দিয়ে উঁচু স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার জায়গা দখল হতে পারে এমনটা ভেবে অনেকে পানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছেন।
রাত থেকে শুরু হওয়া বর্ষণে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে আশপাশের সব খালগুলো ভরে গেছে। কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ জানান, তাদের আশ্রয়স্থল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে যাচ্ছেন। এত ভোগান্তির মধ্যেও একটু ত্রাণের জন্য সংগ্রাম করতে দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের। বিভিন্ন সংগঠন ও দলের বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ দেওয়া থামাতে কেন্দ্রীয়ভাবে ত্রাণ সংগ্রহ করছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে অনেক রোহিঙ্গা বিশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণের কথা বলেছেন। এছাড়া যারা ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন তারাও নানা ঝামেলার সম্মুখীন হচ্ছেন। শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া অনেক রোহিঙ্গা জানান, পুরনো রোহিঙ্গারা এখন লুটপাটে নেমেছে। তারা ত্রাণবাহী গাড়ি আটকে ত্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। এর সাথে স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত হাত মিলিয়েছে।
বৃষ্টির কারণে সরকারি মেডিকেল ক্যাম্পে ভিড় করছেন ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত রোহিঙ্গারা। এছাড়া উখিয়ার ২৪টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশু ও নারীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আশা করছি আমরা আগামী সাত দিনের মধ্যে এ কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারব। আশা করছি সব বাচ্চাকে ভ্যাক্সিন দিয়ে নিরাপদ করতে পারব।’
সংবাদটি শেয়ার করুন
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন