লক্ষ্মীপূজায় হামলায় আহত নারীর মৃত সন্তান প্রসব
লক্ষ্মীপূজায় আতশবাজি ফোটানো নিয়ে ফেনীতে জেলেপাড়ায় হামলায় আহত এক নারীর গর্ভের সন্তান মারা যাওয়ার পর আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সদর উপজেলার মাথিয়ারা জেলেপাড়ায় ওই হামলায় জড়িত অভিযোগে শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ফেনী মডেল থানার ওসি মাহবুব মোর্শেদ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, লক্ষ্মীপূজার পরদিন আতশবাজি ফোটানো নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় কিছু যুবক বুধবার মধ্যরাতে জেলেপাড়ায় হামলা করে বাড়িঘরে ভাংচুর চালায়।
হামলায় সন্তানসম্ভবা তুলসী রানী দাসসহ (২০) অন্তত ১০ জন আহত হন। বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত সন্তান প্রসব করেন তুলসী। পরে তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে আনা হয়। এখনও সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ছরোয়ার জাহান বলেন, “মেয়েটিকে (তুলসী) আঘাত করায় তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরদিন সে সন্তান প্রসব করলে নবজাতকের নড়াচড়া না দেখে মা ও বাচ্চাকে হাসপাতালে আনা হয়।
“হাসপাতালে আনার পর বাচ্চাটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মেয়েটির রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য গাইনি বিভাগের চিকিৎসকরা চেষ্টা শুরু করেন। এখনও সে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।”
এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন- আলমগীর হোসেন বাবু (১৮), জাহাঙ্গীর আলম (২০), জাকির হোসেন (২০), কাজী নূর হোসেন (২০), সাদ্দম হাসেন (১৮), আমির হোসেন (৩৮), রিয়াজ উদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম সুমন।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শেখ মো. বদিউল আলমের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয় বলে ওসি জানান।
আদালত রিমান্ড আবেদনের শুনানির বিষয়ে কোনো আদেশ না দিলেও আগামী ২২ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ রেখেছেন বলে জানান তিনি।
হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন জেলেপাড়ার জহরলাল দাস।
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপূজায় আতশবাজি ফোটানোর জের ধরে মাথিয়ারা গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে ইকবালের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন যুবক বুধবার মধ্যরাত তাদের ওপর হামলা চালায়।
“জেলে পাড়ায় বিভিন্ন ঘরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায় তারা। জেলে পাড়ার লোকজন হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গেলে তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে জেলেদের আহত করে।
“হামলাকারীরা সাত মাসের গর্ভবতী তুলসীর উপর নির্মম নির্যাতন করে। এতে তার প্রচণ্ড রক্তপাত হলে বৃহস্পতিবার ভোর সে মৃত সন্তান প্রসব করে।”
হামলায় তুলসী ছাড়াও আলো রানী দাস (২৮), শোভা রানী দাস (৪৫), শুকদেব দাস (১২), পরিমল দাস (৬০), বিকাশ (২৪) এবং তিনি নিজেসহ অন্তত ১০ জন আহত হন বলে জানান জহরলাল।
আতশবাজি ফোটানো নিয়ে ইকবালের সঙ্গে বিতণ্ডার জের ধরে জেলেদের সঙ্গে সংঘর্ষের কথা জানালেও ঘটনার বর্ণনায় ভিন্ন দাবি করেছেন ওই এলাকার একজন।
ছেরাজুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি বলেন, “লক্ষ্মীপূজার পরদিন এশার নামাজের সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলেরা আতশবাজি ফোটালে ইকবাল নামের একটি ছেলে তাদের নিষেধ করে।
“এতে ওই বাড়ির স্বপন ওরফে হাতকাটা স্বপন ইকবালকে চড়থাপ্পড় মারেন। পরে ইকবাল তাদের এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের বিষয়টি জানালে তারা এ বিষয়ে জানতে হিন্দুপাড়ায় যায়। তখন ওই বাড়ির লোকজন তাদের উপর হামলা চালালে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন
চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
প্রায় সাড়ে চার বছর পর আগামী ২৯ জুলাই থেকে চালুবিস্তারিত পড়ুন
রায়পুরায় বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
‘আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে, ঘরের ছেলে ঘরেবিস্তারিত পড়ুন