শিক্ষায় এগিয়ে মেয়েরা
নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশের মেয়েরা তাদের অব্যাহত অগ্রযাত্রায় ছেলেদেরকেও ক্রমাগত পেছেন ফেলছে। টেলিভিশনের পর্দার করিৎকর্মা, সাহসী, আত্মবিশ্বাসী ‘মিনা’ যেন বাস্তবের লাখ লাখ মিনা হয়ে আজ বাংলদেশের শহর-গ্রামে নিজেদের মেধা আর প্রতিভার জানান দিয়ে বেড়াচ্ছে।
বাংলাদেশের বাস্তবের মিনা’রা একেকজন সূর্যকন্যা হয়ে ধীরে, কিন্তু ক্রমশ দূর করে চলেছেন সমাজের অন্ধকার গলিপথের নানা ভয়, শঙ্কা; আর সৃষ্টি করে চলেছেন সম্ভাবনার নতুন সব পথ। শিক্ষাসহ সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এদেশের মেয়েরা। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রতিবেদন সাক্ষী দিচ্ছে বাংলাদেশের অগ্রগামী মেয়েদের বিজয়যাত্রার।
প্রতিবেদনটি বলছে, এক দশক আগে প্রতি ১০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে মেয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ জনের মধ্যে। এখন তা ৫১ ছাড়িয়েছে। প্রাথমিকে ছেলেদের শতকরা হার এখন ৪৯ ভাগ। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও তো আরও চমক। সেখানে বর্তমানে পাঠগ্রহণকারী মেয়েদের সংখ্যা শতকরা ৫৩ ভাগ। আর ছেলে ৪৭ ভাগ।
কেবল প্রাথমিক আর মাধ্যমিক নয়, উচ্চশিক্ষা স্তরেও মেয়েরা এখন ছেলেদের ছুঁই ছুঁই করছে, শতকরা ৪৫ ভাগ। ব্যানবেইসের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘শুধু প্রাথমিক আর মাধ্যমিকে নয়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও বিভিন্ন বিভাগে প্রথম হচ্ছেন মেয়েরা। এখন সময় মেয়েদের। বিশ্বে বাংলাদেশের নারী শিক্ষার্থীরা উদাহরণ সৃষ্টি করছে।’
জানতে চাইলে ব্যানবেইসের পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা যখন স্কুলে যাইতাম তখন হাতে গোনা মেয়ে শিক্ষার্থী ছিল। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। মিনা কার্টুনও এখন সময়োপযোগী নয়। কারণ শুধু সংখ্যায় নয়, পরীক্ষার ফলাফলেও ছেলেদেরকে পেছনে ফেলছে মেয়েরা।’
ব্যানবেইস প্রদত্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রাথমিক স্তরে যত শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, তার মধ্যে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ ছাত্রী। বাকিরা ছাত্র। সংখ্যার হিসাবে প্রাথমিকে এখন এক কোটি ১০ লাখ চার হাজার ২০ জন ছাত্রী পড়াশোনা করছে। আর ছাত্র পড়ছে এক কোটি চার লাখ ৮০ হাজার ৯৫৩ জন।
মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীর সংখ্যা আরও বেশি; ৫৩ শতাংশ। আর ছাত্র ৪৭ শতাংশ। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় পাসের হারেও ছাত্রীরা প্রতি বছর এগিয়ে চলছে। ২০০৯ সালে যেখানে ছাত্রীদের পাসের হার ছিল ৬৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, সেখানে ২০১৬ সালের পরীক্ষায় ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি পাস করেছে। ছাত্রদের পাসের হার ৮৮ দশমিক ২০ ও ছাত্রীদের ৮৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অবশ্য গত কয়েক বছরে মোট পাসের হারও বাড়ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘শিক্ষায় মেয়েরা আর পশ্চাদমুখি নয়। তারা এখন অগ্রগামী। প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেও মেয়েরা এখন ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে। উচ্চ শিক্ষায়ও এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিশ্বের অনেক দেশ এমনটা পারেনি।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেবিস্তারিত পড়ুন
কমলা হ্যারিসের ভোটের প্রচারণায় বাজবে এ আর রহমানের গান
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসেরবিস্তারিত পড়ুন
উপদেষ্টা আদিলুর: পূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না
দুর্গাপূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেবিস্তারিত পড়ুন