শিক্ষায় নতুন মাত্রা ‘টেন মিনিট স্কুল’
অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ আগামীর কোনো বিষয় নয়, এটি এরই মধ্যে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় জায়গা করে নিয়েছে।’ অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা নেয়ার ব্যাপারটিকে ঠিক এভাবেই এক কথায় ব্যাখা করেছেন পুরস্কারপ্রাপ্ত টিডি ম্যাগাজিনের সাবেক সম্পাদক ডোনা জে. অ্যাবারনাথি।
আসলেই তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে শিক্ষা ক্ষেত্রে সম্প্রতি এক আমূল পরিবর্তন এসেছে। গুটিকয়েক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের বদলে অনলাইন শিক্ষা উপকরণ হয়ে উঠেছে সার্বজনীন। বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যের প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন কন্টেন্ট সহজলভ্য হওয়ায় অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণ প্রথাগত শিক্ষণ পদ্ধতির গ্রহণযোগ্য বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
বর্তমানে একজন শিক্ষার্থী পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরাসরি না গিয়েও অনলাইনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি অনলাইন লাইব্রেরি থেকে সর্বাধুনিক শিক্ষা উপকরণ গ্রহণের সুযোগও পান। এ ছাড়া বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল থেকে আসায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের শিক্ষাকে আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ পান।
বাংলাদেশেও শিক্ষার এ পদ্ধতিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের হার ৩৬ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ায় দেশে অনলাইন ব্যবহারকারীদের একটি বড় বলয় গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ফেসবুকের বেসিক ফ্রি ইন্টারনেট প্লাটফরম চালু হওয়ায় ইন্টারনেট আর মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে সীমাবদ্ধ নেই। ওই প্রেক্ষাপটের সুফল কাজে লাগাতে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একদল শিক্ষার্থী চালু করেছে একটি অনলাইন এডুকেশনাল প্লাটফরম। তারা এর নাম দিয়েছেন ‘টেন মিনিট স্কুল’।
এতে দেশের সব শীর্ষস্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসংক্রান্ত পরিপূর্ণ সহায়িকা দেয়া আছে। এ ছাড়া জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বিনামূল্যে বিষয়ভিত্তিক অনলাইন কোর্স, টিউটোরিয়াল ও কুইজ দেয়া আছে। এর ফলে স্কুল শেষে শিক্ষার্থীদের ব্যয়বহুল কোচিং সেন্টারের ওপর নির্ভরতা কমবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ ছাড়া স্যাট, আইইএলটিএস, জিআরই, জিম্যাটের পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য বিনামূল্যে রয়েছে আলাদা কোর্স। এখন শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে না গিয়ে বা পাঠ্যবই না খুলেও নিজেদের মতো করে অনলাইনে শিখতে ও অনুশীলন করতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন তাদের স্মার্টফোন/ল্যাপটপ/পার্সোনাল কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ এবং ১০ মিনিট বাড়তি সময়!
টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও আয়মান সাদিক এ সম্পর্কে বলেন, ‘টেন মিনিট স্কুলের জন্য আমরা প্রতিদিনি দলগতভাবে কাজ করি। এতে করে যে কেউ যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো কিছু শিখতে পারেন এবং সেটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে সবার কাছে মানসম্মত শিক্ষা পৌঁছে দেয়া।’
তিনি জানান, িি.ি১০সরহঁঃবংপযড়ড়ষ.পড়স এ বর্তমানে দেড় হাজারেরও বেশি কুইজ এবং দুই শত পঞ্চাশটিরও বেশি ভিডিও রয়েছে। বিদ্যমান সমৃদ্ধ তালিকাতে নতুন টপিক এবং মডিউল যোগ করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন ৪১ প্রশিক্ষক। সাইটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট পৃথক তথ্য যেমন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড, আসন, ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ইত্যাদি ইনফোগ্রাফ ফরমে রয়েছে। প্রত্যেকটি কোর্স মডিউলের জন্য অডিও-ভিজুয়াল কন্টেন্ট দেয়া হচ্ছে, বিভিন্ন কুইজের সমাধান দেয়া হচ্ছে; যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের মতো করে শিখতে পারে। বর্তমানে এক লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী সাইটটি ব্যবহার করছে। এ সংখ্যা প্রতি মিনিটে বাড়ছে।
তাৎপর্যপূর্ণ এ উদ্যোগে সহযোগী হিসেবে এগিয়ে আসা মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট এবং পিপল অফিসার মতিউল ইসলাম নওশাদ বলেন, ‘টেন মিনিট স্কুল’ পড়াশোনার প্রথাগত ধারণাই বদলে দেবে বলে রবি বিশ্বাস করে। শিক্ষার্থীদের অবস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দূরত্ব সব কিছুকে ছাড়িয়ে শিক্ষাকে তাদের দুয়ারে পৌঁছে দিতে কাজ করবে এটি। আমরা মনে করি, এ ধরনের উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমরা উন্নয়নের পথে বাধাগুলো ভাঙতে পারব। এ ছাড়া সবাইকে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সাথে যুক্ত করতে পারব।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূস: নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এবার দুর্গাপূজারবিস্তারিত পড়ুন
সোমবারের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার
এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করেনবিস্তারিত পড়ুন
১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৪ কোটি ডলার
এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখবিস্তারিত পড়ুন