শিশু দুটির কঠিন প্রশ্ন ‘বাবা আমরা বাঁচব না কেন? তারা বাঁচতে চায় …
জুয়েল ও আলিফ দুই ভাই। ১০ বছর বয়সী জুয়েল ও ৩ বছর বয়সী আলিফের মরণ কি জিনিস বুঝার কথা নয়। কিন্তু প্রতিবেশী বা আত্মীয়স্বজনদের মুখে যখন তারা মরণের কথা শুনে তখন দরিদ্র বাবা কে প্রশ্ন করে- ‘বাবা আমরা বাঁচব না কেন? আমরা তোমাদের সাথেই থাকতে চাই, আমরা মরতে চাই না।
আমাদের অনেক বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও’। জীবন শুরুর পূর্বেই এই শিশু দুটি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ওরা নিজেরাও বুঝে গেছে ওরা মরণের দ্বারপ্রান্ত। বাবা-মা বুকের ভেতর এক তীব্র যন্ত্রণা নিয়েও মুখে হাসির ভান করে বলেন- ‘কে বলেছে তোরা মারা যাবি? তোরা বেঁচেই তো আছিস; সারাজীবন বেঁচে থাকবি, বাবা’।
এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কী বৃদ্ধ, কী যুবক, কী শিশু কারো মনই যেতে চায় না, তবুও মরণ এসে জুয়েল ও আলিফকে নিয়ে যেতে চায়, না জানি কোথায়। কেননা, থ্যালাসেমিয়া রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর ক্ষমতাও যে বাবা-মায়ের নেই।
পাবনার বেড়া উপজেলার সিংহাসন উজানপাড়া গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন পেশায় একজন ভ্যান চালক। পল্লীগাঁয়ে সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করেন তা দিয়ে কোন মতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে খেয়ে, না খেয়ে সংসার চললেও চিকিৎসার ভার নেবার মত সামর্থ্য যে তার নেই। তাই চোখে মুখে কষ্টের ছাপ নিয়ে পাগলের মত ছুটে চলেছেন সন্তানদের বাঁচাতে। যারা এক সময় আনন্দ-হাসিতে মাত করে রাখতো সারাবাড়ির উঠোন সেই শিশুরাই যেন এখন তাদের বোঝা। এদিকে যত দিন যাচ্ছে ততই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে শিশু দুটি।
চিকিৎসকরা জানান, স্বাভাবিক মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিন সাধারণত দুটি আলফা ও দুটি বিটা চেইন বহন করে। এ দুটি চেইনের যে কোন একটি পরিমানে কম থাকলে সৃষ্টি হয় থ্যালাসেমিয়া রোগের। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর লোহিত কণিকার আয়ুস্কাল অনেক কমে যায়। রোগীর হিমোগ্লোবিন ঠিকমতো তৈরি না হওয়ায় লোহিত কণাগুলো সহজেই ভেঙ্গে যায় এবং অস্থিমজ্জার পক্ষে একই হারে লোহিত কণিকা তৈরি সম্ভব হয়ে ওঠে না।
একদিকে যেমন রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে পেট আকারে বড় হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত আয়রন জমা হয়ে হৃদপিন্ড, অগ্নাশয়, যকৃত, অন্ডকোষ প্রভৃতি অঙ্গের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে দরীদ্র পিতা মোফাজ্জল আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে প্রায় ২ বছর ধরে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে রক্তে পরিসঞ্চালন করালেও কোন পরিবর্তন নেই। একদিকে দরিদ্র পিতা-মাতার পক্ষে প্রতিমাসে যেমন রক্ত পরিসঞ্চালন করা সম্ভব নয়, তেমনি এই প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি আরোগ্য লাভও সম্ভব নয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রক্ত পরিসঞ্চালন এই রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা। এটাকে স্থায়ী চিকিৎসা বলা যায় না। মূলত বোন ম্যারো প্রতিস্থাপনই এই রোগের একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা যা অনেক ব্যয়বহুল। এটি না করাতে পারলে তাদেরকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। তাই সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিদের প্রতি শিশু জুয়েল ও আলিফের চিকিৎসার জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন করেছেন তার অসহায় দরিদ্র পিতা-মাতা।
সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা : বিকাশ নং- ০১৭২১-২৪৮৭৬৪।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিগত ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেবিস্তারিত পড়ুন
সংঘর্ষের ঘটনায় রাবি কর্তৃপক্ষের মামলা, গ্রেপ্তার ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেবিস্তারিত পড়ুন
স্থানীয়দের সঙ্গে রাবি শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ২০
বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গেবিস্তারিত পড়ুন