সংসার খরচ কমানোর ১৫টি সহজ উপায়, জেনে নিন…
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চাহিদা যেন দিন দিন বাড়ছেই। কিছুতেই যেন খরচের রাশ টেনে ধরেই রাখা যাচ্ছে না। আয়ের তুলনায় ব্যয়ের সামঞ্জস্য ধরে রাখতে না পারার কারণে মাস শেষে শুধু কষ্টেসৃষ্টে চলাই নয় বরং সেই সাথে যুক্ত হয় ঋণ করার প্রবণতাও! আর সেই ঋণ শুধতে গিয়ে পরের মাসে আরো খানিকটা অর্থনৈতিক আর মানসিক চাপ। কিন্তু একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু আপনি আপনার প্রতি মাসের খরচ যেমন কমিয়ে আনতে পারেন, তেমনি পারেন সেই টাকা থেকে কিছুটা আপনার ভবিষ্যতের জন্যে সঞ্চয় করতেও!
আপনারই জন্যে রইল দারুণ কাজের কিছু টিপসঃ
ঋণ শোধ করুনঃ
মাসের শুরুতে বেতন পেয়েই সবার আগে আপনার ঋণ শোধ করতে চেষ্টা করুন। পুরোটা না পারলেও যতটা সম্ভব করুন। ঋণ শোধ না করে সঞ্চয়ের পথে বা ভুলেও বাড়াতে যাবেন না।
প্রতিদিন কিছু না কিছু জমানঃ
প্রতিদিনই চেষ্টা করুন কিছু না কিছু টাকা জমাতে। হতে পারে সেটা ১০-১০০ টাকা। যাই হোক না কেন জমান। এবং সেটার কথা ভুলে যান। ভুলেও সেটায় হাত দেবেন না।
সন্তানকে সঞ্চয় করতে শেখানঃ
সন্তানকে ছোট্ট একটা ব্যাঙ্ক কিনে দিন। মাটির বা প্লাস্টিকের। খুব রঙ্গিন বা আকর্ষনীয় পুতুল আকারের ব্যাঙ্ক কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলোর একটা কিনুন ও তাকে টাকা জমাতে সাহায্য করুন।
কিছু কেনার আগে ভাবুনঃ
আমাদের অনেকেরই অভ্যাস হল রাস্তায় যেতে যেতে কোন দোকানে কিছু পছন্দ হলে হুট করে কিনে ফেলা। এটা করার ফলে বেশীরভাগ সময়েই আমরা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে ঘর বোঝাই করে ফেলি। জিনিস পছন্দ হয়ে গেলেই হুট করে কিনে না ফেলে একটু ভেবে নিন। দরকার হলে ১/২ দিন পরে কিনুন।
শপিং এ যাবার আগে লিস্ট করুনঃ
শপিং এ যাবার আগে লিস্ট করুন। জামা কাপড় কেনার আগে দেখে নিন আপনার কি কি আছে এবং কি কি আসলেই কেনা প্রয়োজন।
লক্ষ্য ঠিক করুনঃ
ভবিষ্যতে আপনার বিগ বাজেটের কি কি কিনতে হবে সেটার একটা তালিকা করে সময়সীমাও নির্ধারণ করুন। যেমন, ৫ বছর পর ফ্ল্যাট, ১ বছর পর টিভি আর এক মাস পর ওভেন। এভাবে ঠিক করে কত টাকা করে জমালে এই লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব, সেটি খেয়াল রাখুন ও সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিন।
বাজেট করুনঃ
একটি বাজেট করুণ এক বছরের। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসুন। সবার মতামত নিন। এতে পরবর্তীতে জটিলতা তৈরী হবে না। প্রয়োজনীয় চাহিদার পাশাপাশি অবশ্যই রাখবেন সঞ্চয়ের খাত আর সেই সাথে জরুরী প্রয়োজনের জন্যে আলাদা একটা বরাদ্দ রাখুন। বছর শেষে ওই টাকাটা বেঁচে গেলে সেটি পাঠিয়ে দিন সেভিংসে।
খরচের হিসেব রাখুনঃ
প্রতিদিন কোথায় কত খরচ হল তার হিসেব একটা খাতায় লিখে রাখুন। মাস শেষে সেটি নিয়ে বসুন। এবার দেখুন কোন কোন খাতে খরচ বেশী হয়েছে এবং সেগুলো একটু চেষ্টা করলেই কমানো সম্ভব কিনা!
বাইরে খাওয়ার প্রবণতা কমানঃ
শহর জীবনে বাইরে খাওয়ার প্রবণতা আমাদের অনেকের মাঝেই লক্ষ্য করা যায়। এলাকায় নতুন রেস্তোরাঁ চালু হয়েছে বলেই যে সেখানে সবাই মিলে খেতে যেতে হবে এমন প্রবণতা কমিয়ে আনা দরকার। প্রতি সপ্তাহে বাইরে খাবার অভ্যাসটা কমিয়ে মাসে একবারে নিয়ে আসুন। মাস শেষে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন দেখে, কি পরিমান টাকা আপনি বাঁচাতে পেরেছেন!
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমানঃ
ক্রেডিট কার্ডটা যতটা সম্ভব বাসায়ই ভুল করে রেখে শপিং এ যান। ক্যাশ ব্যবহার করুন। এতে চাইলেও আপনি যথেচ্ছ টাকা খরচ করতে পারবেন না। দেখবেন এভাবে আপনার অনেক টাকা বেঁচে গেছে।
ব্র্যান্ডিং প্রবণতা ত্যাগ করুনঃ
বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়ে অযথা ব্র্যান্ডিং প্রবণতায় ভুগবেন না। আপনাকে ভালো মানায় এমন পোষাক বা এক্সেসরিজ ব্যবহার করুন। এভাবেও কিন্তু আপনি ট্রেন্ডি হয়ে উঠতে পারেন। অযথা দাম দিয়ে ব্র্যান্ড এর পোষাক সব সময় পরার চেয়ে কিছু ব্র্যান্ডেড পোষাক কিনে রাখুন বিশেষ উপলক্ষ্যে পরার জন্যে। এতে আপনার অর্থ ও স্ট্যাটাস দুটোই রক্ষা পাবে।
সেভিংস স্কীম খুলুনঃ
ব্যাঙ্কে সেভিংস স্কীম অবশ্যি খুলে ফেলুন। মাসিক হারে যযতটুকুই সম্ভব যেটা আপনি কোন রকম চাপ না নিয়ে জমাতে পারবেন এরকম হারে ৩-১০ বছর মেয়াদী সেভিংস একাউন্ট খুলুন। এতে আপনি কয়েক বছর পরে ভালো অংকের একটা টাকা জমিয়ে ফেলতে পারবেন।
ইন্স্যুরেন্স করুনঃ
একটা ভালো কোম্পানীতে ইন্সুরেন্স করে রাখুন। এতে কোন অনাকাঙ্কখিত দুর্ঘটনায় আপনার অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবেন সহজেই। আর সেই সাথে টাকাটা তো জমলই!
ছাড়ের সময় পণ্য কিনুনঃ
অলংকার বা অন্যান্য পণ্যের দামে বছরের বিশেষ কিছু সময়ে ছাড় দেয়া হয়। চেষ্টা করুন সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে পণ্যাটি কেনার। এতে আপনার বেশ কিছু টাকা বেঁচে যাবে।
ঘরের পানি, গ্যাস ও বিদ্যুত অপচয় রোধ করুনঃ
দরকার না হলে ঘরের পানির ট্যাপ, চুলা ও ইলেক্ট্রনিক জিনিসপত্রের লাইন অফ করে রাখুন। বিল কম আসবে। ইলেকট্রিসিটি না থাকলে মোমের বদলে চার্জার লাইট ব্যবহার করুন। মোমের গলে যাওয়া অংশগুলো জমিয়ে রাখতে পারেন। গলিয়ে মাঝখানে সুতো দিয়ে আবার মোম বানাতে পারবেন।
প্রথমবারের চেষ্টায় খরচ আশানুরূপ কমাতে না পারলে হাল ছেড়ে দেবেন না যেন! খরচ কমানো খুব কঠিন কিছু নয়। আপনার একটু সদিচ্ছা আর সতর্কতাই যথেষ্ট!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন