সাইবার অপরাধ : তদন্তে দুর্বলতায় খালাস ৬০ শতাংশ আসামি

প্রাচীনকালে মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে পশু শিকারে যেতো। শিকারে যাওয়ার আগে কিভাবে শিকার করবে সে বিষয় তথ্য সংগ্রহ করতো। এরপর আসে মধ্য যুগ। এ যুগে তারা তথ্য সংগ্রহ করতো কৃষি বিষয়ক।
মধ্য যুগের পর আসে আধুনিক যুগ। এ যুগের মানুষেরা প্রযুক্তির উপর নির্ভর হতে থাকে। মানুষ ইন্টারনেট, ফেসবুক ও মোবাইলসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির উপর নির্ভর হতে শুরু করে। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে মানুষ এ নিয়ে নানা অপরাধেও জড়িয়ে পড়তে থাকে। বিশেষ করে ইন্টারনেটে নগ্ন ছবি প্রচার, মোবাইলে হুমকি, অনলাইনে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ ও কম্পিউটারের সিস্টেম হ্যাকিংসহ ইত্যাদি অপরাধ।
এ ধরনের অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশে ২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন প্রণীত হয়।
আইন প্রণীত হওয়ার পর ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকায় চালু হয় একমাত্র বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। ট্রাইব্যুনাল চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত (২০১৬ সালের ডিসেম্বর) ১১৪৪টি মামলা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫০টি মামলা। এর মধ্যে খালাস পেয়েছেন ৬০ শতাংশ আর শাস্তি পেয়েছেন ৪০ শতাংশ মামলার আসামি। মামলার অধিকাংশ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয় তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির জন্যই আসামিরা খালাস পাচ্ছেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার রায় আসার আগেই সালাউদ্দিনের স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ তোলেন। তারা রায়ের খসড়া কপি সংবাদকর্মীদের দেখান। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়।
২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট ডিবির পরিদর্শক শাহজাহান সাকার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে সাকার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন বিচারক। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতির জন্য খালাস পেলেন সাকার স্ত্রী-পুত্র।
অপরদিকে বিচার বিভাগের সুনাম নষ্ট করার জন্য ব্যারিস্টার ফখরুলসহ বাকিরা দোষি সাব্যস্ত হওয়ায় সাজা প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
রুপনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তৈয়বা ইসলামের মামলাতেও রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থতার অভিযোগ।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, সাইবার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ১১৪৪টি মামলা হয়েছে। নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫০টি মামলা। এর মধ্যে খালাস পেয়েছেন ৬০ শতাংশ আর শাস্তি পেয়েছে ৪০ শতাংশ মামলার আসামি। মামলার অধিকাংশ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয় তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির জন্যই আসামিরা খালাস পাচ্ছেন।
দেশের একমাত্র ট্রাইব্যুনালের নেই নির্দিষ্ট এজলাস
দেশের একমাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনালে নির্দিষ্ট কোনো এজলাস নেই। আলামত সংগ্রহের জন্য কোনো মাল খানাও নেই। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিচার প্রার্থী ও আদালত সংশ্লিষ্টদের।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার নজরুল ইসলাম শামীম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট কোনো এজলাস নেই। যখন ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের এজলাসের কাজ শেষ হয় তখন আমরা এজলাসে বসে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পরিচালনা করি। এতে বিচার প্রার্থী ও আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন