বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৮, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

সিদ্ধান্তের ‘মুচিকাহিনী’

নগরীর ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনের নির্মাণাধীন ভবনের পশ্চিম পাশ। সেখানে নিজের চেয়েও ‘বড়’ বাক্স নিয়ে বসা একটা ছোট্ট ছেলে। একরত্তি শরীরের সমস্ত শক্তি যোগ করে প্রায় ‘দুর্ভেদ্য’ চামড়ার জুতোর ওপর পরম যত্মে এক একটা ফোঁড় বসাচ্ছিল ছেলেটা। কচি হাতের ছোঁয়ায় ফাটা-ছেড়া জুতো হয়ে উঠেছে নিখুঁত ব্যবহারযোগ্য।

এরপর জুতোর মালিককে ডেকে তার বক্তব্য ‘ভাই সেলাই হয়ে গেল, এবার একটু পালিশ করে দেব?’

একটু দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে পাশে গিয়ে বয়স কত জানতে চাইলে সে বলে হিসেব নেই, তবে ৯-১০ হবে হয়তো !

কিন্তু শারীরিক গড়ন, কথা বলার ঢং দেখে ধারণা করা যায় বড়জোর ৭ হবে। নাম তার সিদ্ধান্ত চন্দ্র বর্মন।

বাবা জগদীশ চন্দ্র বর্মনের পেশা মুচির কাজই। তবে সিদ্ধান্ত চন্দ্রের কাছে এটি ‘পার্ট টাইম জব’। সে স্থানীয় একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনাধীন স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। ক্লাস শেষে সময়গুলো অপচয় না করে প্রতিদিন ছুটে আসে এখানেই।

সিদ্ধান্তের সঙ্গে জমে ওঠে আড্ডা। বাড়তে থাকে গল্পের বয়স। সিদ্ধান্তও ধাপে ধাপে তুলে ধরতে থাকে তার ‘মুচিকাহিনী’।

বছর দুয়েক আগের কথা। বলা নেই, কওয়া নেয়-হঠাৎ এক সকালে বড় সন্তানকে নিয়ে উধাও বাবা জগদীশ চন্দ্র বর্মন। ছোট্ট দু’সন্তানকে নিয়ে মা বাসন্তি চন্দ্র বর্মন তখন হন্তদন্ত। একমাত্র রোজগারের মানুষটি নিরুদ্দেশ, তাও বড় সন্তানকে নিয়ে। মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়তে আর কীই বা লাগে বাসন্তির?

চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে ঢাকা, গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা-ছেলে আর স্বামীর খোঁজে শ্যেনদৃষ্টি থেকে বাদ পড়েনি পরিচিত কোনো জায়গা। তবু মিলল না আলোর রেখা। পাওয়া গেল না স্বামী আর ছেলেকে।

কি আর করা, তাদের ফেরার অপেক্ষায় আবারও ফেরত আসলেন চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকার ছোট্ট বাসাটিতে।

কিন্তু দুই সন্তানসহ নিজে খাবেন কী? এ অবস্থায় পথ দেখাল ছোট্ট সিদ্ধান্ত। ছোটকাল থেকে বাবাকে মুচির কাজ করতে দেখে বড় হয়েছে সে। এতদিনে স্বশিক্ষিত মুচি হয়ে উঠেছে সেও।

তখন সবে স্কুলে ভর্তি হয়েছে সিদ্ধান্ত। একদিন স্কুল থেকে ফিরে বাবার রেখে যাওয়া সেই সুতো-পালিশের বাক্সটা নিয়ে বের হয়ে গেল বাসা থেকে। গন্তব্য সোজা ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে। যে স্টেশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কারণে সরগরম থাকে দিনের অনেকটা সময়। মায়ের বিভিন্ন বাসায় কাজ আর তার জুতো-স্যান্ডেল সেলাই করে আসা টাকা দিয়ে কোনোরকম টেনেটুনে চলছিল সংসার।

কিছুদিনের মধ্যেই বাবা ফিরে আসলেন। মাঝখানে কত কিছু হয়ে গেল। কিন্তু নিজের চেয়েও ‘বড়’ বাক্সটা নিয়ে নিয়মিত ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়া আর বন্ধ হলো না সিদ্ধান্তের। স্কুল শেষে বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা-বাকি সবকিছু ভুলে এই সময়টাতে কেবলই তার পরিচিতি ‘মুচি’।

এখন বাবা ফুলটাইম বসেন মুরাদপুর এলাকায়। আর সিদ্ধান্ত ষোলশহর স্টেশনে। স্কুল বন্ধ থাকলে কখনও চলে যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই।

সিদ্ধান্ত জানায়, ‘প্রতিদিন মুচির কাজ করে তার ১০০-১৫০ টাকা আয় হয়। এর মধ্যে পালিশ-সুতোর পেছনে কিছু টাকা যায়। বাকি পুরোটাই লাভ। সেই টাকা তুলে দেয় মায়ের কাছে। টাকার অংকটা কম হলেও পরিবারের বড় বড় কাজে সম্বল হয় এই টাকাটা।

সে জানায় তার বড় ভাইও একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। কিন্তু নিয়মিত না।

মা কিছু করে?

এই প্রশ্রের জবাব খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল গলাটা ভারী হয়ে আসছে সিদ্ধান্তের। চেহারাও কালো হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। তারপর নিচু গলায় বলতে থাকে ‘মা আমার কিছুই করতে পারে না এখন। তার পেটে টিউমার। মায়ের কষ্ট ভালো লাগে না।’

সিদ্ধান্তের ছোট্ট কাঁধটা এত ভার সয় কীভাবে? কীভাবে?

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন  

চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন

চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস

 শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন

ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন

  • স্বাধীনতার জন্য সিরাজুল আলম খান জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছিল
  • ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’
  • হাতিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
  • ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করলেন পুলিশ সদস্য
  • শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ
  • চলে গেলেন হায়দার আকবর খান রনো
  • গফরগাঁওয়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক শামছুন নাহার
  • ‘ও আল্লাহ আমার ইকবালরে কই নিয়ে গেলা’
  • ভিক্ষুকে সয়লাভ নোয়াখালীর শহর
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • কান্না জড়িত কন্ঠে কুড়িগ্রামে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল
  • অজানা গল্পঃ গহীন অরণ্যে এক সংগ্রামী নারী