সেই শিক্ষককে স্বপদে বহাল, স্কুল কমিটি বাতিল
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কল্যাণদী এলাকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্বপদে বহাল করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শ্যামল কান্তিকে স্বপদে বহালের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি স্কুল কমিটিকে বাতিল ঘোষণা করেন।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী উল্লিখিত ঘোষণা দেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে। তিনি জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। এতে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন বলে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এর ভিত্তিতে কমিটি তাঁকে স্বপদে বহালের সুপারিশ করেছে। তদন্ত কমিটি স্কুলের আগের কমিটি বাতিলের সুপারিশ করে।
গত সোমবার শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির পাঠানো চিঠিটি পান তিনি।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ আনা হয়। চিঠিতে বলা হয়, এসব ‘অবৈধ’ কাজ তিনি আগেও করেছেন এবং বহুবার সতর্ক করা হয়েছে।
ওই চিঠির প্রথম অনুলিপি পাঠানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে।
শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে আনা চারটি অভিযোগ হচ্ছে—ছাত্রদের ওপর শারীরিক নির্যাতন, বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ সংগ্রহ, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি, বিদ্যালয়ে ছুটি ছাড়া অনুপস্থিত থাকা এবং দেরি করে বিদ্যালয়ে আসা।
প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত ১৩ মে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্কুলের সামনের একটি মসজিদ থেকে হঠাৎ করেই মাইকে ঘোষণা করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করেছেন এবং সেখান থেকে এলাকাবাসীকে স্কুল মাঠে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই দলে দলে স্কুলে ঢোকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাঁরা স্কুলের দরজা ভেঙে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে এবং তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ার পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়। সংসদ সদস্য উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠ-বস করার শাস্তি দেন।
কান ধরে ওঠ-বসের পর সমবেত জনতার কাছে করজোড়ে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয় ওই প্রধান শিক্ষককে। পরে সংসদ সদস্যের নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে পুলিশের হেফাজতে স্কুল থেকে বের করা হয়। এর পর পুলিশ চিকিৎসার জন্য তাঁকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে জেএমবির দুই সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অপতৎপরতা ও সহিংস ঘটনা সৃষ্টির সময়ে গ্রেফতার নিষিদ্ধবিস্তারিত পড়ুন
আড়াইহাজারে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজালালের ভোট বর্জন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম, জাল ভোট, কেন্দ্রে এজেন্টবিস্তারিত পড়ুন