হবিগঞ্জে প্রকাশ্যে স্কুলছাত্রীকে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছেন প্র্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। যদিও ঘটনার নয়দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনও অভিযুক্ত কিশোর রুহুল আমিনকে আটক করতে পারেনি।

এদিকে, রুহুল আমিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠী ছাড়াও শিক্ষক, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ। যৌন নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ডাক দেওয়া হয়েছে মানববন্ধনের।

ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, স্কুলের পোশাক পরা কয়েকজন ছাত্রী রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে দু’জন ছেলে এসে দুই ছাত্রীর সামনে দাঁড়ায়। এর মধ্যে একজন ছেলে একটি মেয়েকে উদ্দেশ করে কিছু বলতে থাকে। মেয়েটি ভয়ে একটু দূরে সরে যায়। এর পর ছেলেটি মেয়েটিকে ঘিরে ধরে এবং দুই হাত দিয়ে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, ‘তোর হাত দুটো কেটে ঝুলিয়ে রাখব।’

৩১ সেকেন্ডের এই ভিডিও চিত্রটি গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে শুরু হয় তোলপাড়। নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় উঠে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৬ আগস্ট হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটে। নির্যাতিত কিশোরী ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুল ছুটির পর সে তার সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় রুহুল আমিন তাকে মারধর করে। রুহুল আমিন রাজনগর এতিম খানা সড়ক ফজল মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, ওই স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল রুহুল আমিন। বিষয়টি রুহুল আমিনের অভিভাবকদের জানান ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ছাত্রীর ভাইয়েরা মিলে রুহুল আমিনকে মারধর করে। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রুহুল আমিন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, রুহুল আমিনকে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নির্যাতিত ওই ছাত্রীর বাবা-মা জানান, রুহুল আমিন বহু দিন ধরে তাদের মেয়েকে বিরক্ত করে আসছিল। অনেকবার তার পরিবারের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলেও তারা কোনো পদকক্ষেপ নেয়নি।

এ বিষয়ে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান।

হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সারওয়ার আলম জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, স্কুল খোলার পর এ ব্যাপারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।