স্থানীয় বিএনপি নেতারাই সাখাওয়াতের বিপক্ষে
জাতীয় নির্বাচন না হলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশেই যেন নির্বাচনী হাওয়া বইছে। সর্বত্রই আলোচনার ঝড় উঠেছে কে হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের আগামীর নগরপিতা। এদিকে নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে আলোচিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমান দলীয় প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে অবস্থান নিলেও বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের বিপক্ষে দলীয় স্থানীয় নেতারা অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জের কৃতী সন্তান নাসিকের মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণায় অংশ নিলেও স্থানীয় নেতারা অনেকটাই দায়সারাভাবে প্রচারণায় রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এক নেতা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে প্রভাবশালী যেসব নেতা রয়েছেন তাদের অনেকেই চাচ্ছেন না মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়ে টপ লাইনে চলে আসুক সাখাওয়াত হোসেন। তাই অনেকটা দায়সারা প্রচারণায় সীমাবদ্ধ থাকছেন দলীয় অনেকে নেতা।
জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকারের ভাই কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি তার ভাইকে জয়ী করতেই উঠে পড়ে লেগেছেন। অন্যদিকে নাসিক নির্বাচনে বিএনপির সাবেক দুই এমপির ছেলে কাউন্সিলর প্রার্থী। এদের মধ্যে শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের পুত্র আবুল কাউছার আশা এবং সিদ্ধিরগঞ্জের ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ সাদরিল।
অভিযোগ উঠেছে, ধানের শীষের মেয়র পদপ্রার্থীর চেয়ে দুই ছেলেকে বিজয়ী করাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে তাদের কাছে। অন্যদিকে তৈমুর আলম চাচ্ছেন কাউন্সিলর পদে ভাইয়ের গলায় বিজয়ের মালা পরাতে।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম বলেন, বিগত দিনে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাকে সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করেছেন। শুধু আমার স্থলে নারায়াণগঞ্জে সিটিতে সাখাওয়াত আসলেও মার্কা কিন্তু ধানের শীষ। কাউন্সিলর পদে ছেলে প্রচারণার পাশাপাশি মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকেও ভোট চাইছি।
নাসিক নির্বাচনে গতবারের পরাজিত প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধ। কাজেই দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার বিকল্প ভাবনার সুযোগও নাই।
তিনি আরও বলেন, আজ গণতন্ত্র ভুলুণ্ঠিত, তাই ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান যদি নির্বাচিত হয় তাহলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম খুব সহজেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাত শক্তিশালী হলে এদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
নির্বাচনী প্রচারণায় একাধিকবার অংশ নিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। স্থানীয় নেতারা শাখাওয়াত হোসেন পক্ষে প্রচারণা না করে নিজেদের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য প্রচারণা করছেন এমন অভিযোগের সত্যতা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয় তারা তাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছেন। তবে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা সাখাওয়াতের পক্ষে প্রচারণাটা আরেকটু বাড়াবেন বলে প্রত্যাশা করছি।
নাসিক নির্বাচন প্রচারণা কমিটির সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, নিখোঁজ ও গুম হওয়া গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতেই নারায়াণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে। নির্বাচনে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়া সুযোগ পেলে আইভীর নৌকা ভেসে ওঠার কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, আগামী ২২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সিটি কর্পোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন। তবে দলীয় প্রতীকে এবারই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ এবং নারী ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮। গতবারের তুলনায় ভোটার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন