রবিবার, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

স্বর্গ থেকে নেমে আসা রংধনু নদী

কানো ক্রিসটেলস। কলম্বিয়ার একটি নদীর নাম। এটা যেনতেন নদী নয়। এটাকে বলা হয়ে থাকে ‘স্বর্গ থেকে নেমে আসা নদী, তরল রংধনুর নদী ও পৃথিবীর সবচেয়ে রঙিন নদী।’

কেন এমনটি বলা হয়? আসলে রঙের মেলা এখানে। যেটাকে রঙের স্বর্গ বলা হয়। প্রকৃতির গুপ্তধনে সমৃদ্ধ এক নদী। যে নদীটি কেবল একটি কিংবা দুটি রঙে রঙিন নয়, পাঁচ-পাঁচটি দর্শণীয় রঙে রঙিন। জীব-বৈচিত্রে ভরপুর আর সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ। যেটাকে দেখলে মনে হবে সৃষ্টিকর্তা তার নিপুণ হাতে পৃথিবীর এক কোণে রঙ ঢেলে সাজিয়েছেন নদীটিকে।

নদীটি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে ১০০ কিলোমিটার বয়ে গেছে। বছরের বেশিরভাগ সময় নদীটি স্বাভাবিক। তখন আর দশটি পাহাড়ি নদীর মতো ধূসর পাথরের তলদেশ, শান্ত পানি ও পরিস্কার স্রোত থাকে। তবে শুষ্ক মৌসুম শেষে, বর্ষা মৌসুমে (জুলাই-নভেম্বর) পাঁচটি রঙে রঙিন হয়ে ওঠে।

তখন নদীর তলদেশে লাল লতা-গুল্মের মতো তরল পদার্থ, যেটা নদীর স্রোতের সঙ্গে দুলতে থাকে। তার সঙ্গে কিছু পাথরের গায়ে জমে থাকা সবুজ শ্যাওলার আভরণ, কালচে পাথরের রং, হলুদ বালু ও ঝিলমিল স্বচ্ছ পানির নীলাভ আভা (নীল রং)- যা স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য ফুটিয়ে তোলে সেখানে।

যেখানে স্রোত বেশি সেখানে লাল রঙের গুল্ম জাতীয় পদার্থটি পাথরের গায়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। নদীর তলদেশে ও পাথরের গায়ে জন্মে সবুজ গুল্ম ও শ্যাওলা। এখানকার পানি এতোই স্বচ্ছ যে তার রং নীলচে মনে হয়। বালুগুলো হলুদ রংয়ের। আর ১২০০ মিলিয়ন (১.২ বিলিয়ন) বছরের পুরনো পাথর ধূসর রং ছেড়ে কালচে রং ধারণ করেছে। যা স্বচ্ছ পানির ঝিলমিল স্রোতের নিচে দেখতে অসাধারণ লাগে। যেন স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য এসে ধরা দিয়েছে এখানে।

নদীটি যে শুধু পাঁচটি রঙের কারণেই সুন্দর তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি এখানে রয়েছে ঝর্ণাধারা, সুইমিং পুলের মতো দেখতে জলাশয় ও গুহা। যা নদীটির সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি নদীটিকে করেছে রহস্যময়ী। আশ্চর্য্য যে- নদীটিতে মাছ কিংবা অন্যান্য জলজ কোন প্রাণী নেই। যা এখানে আসা দর্শনার্থীদের নির্বিঘ্নে সাঁতার কাটা ও নিশ্চিন্ত মনে গোসল করার পরিবেশ দেয়।

আরো রহস্যময় হল- এটি কলম্বিয়ার এমন একটি দূর্গম স্থানে, যেখানে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। এক সময় এটি সহজগম্যও ছিল না। তারপরও নানা ঝক্কি-ঝামেলা মাথায় নিয়ে দুঃসাহসিক ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা সেখানে গিয়েছে। নয়নভরে উপভোগ করেছে কানো ক্রিসটেলসের স্বর্গীয় সৌন্দর্য্য। এখন অবশ্য পার্শ্ববর্তী শহর লা মাকারিনা থেকে আকাশপথে সেখানে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পাশাপাশি রয়েছে ট্যুরিস্ট গাইড। যারা পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে স্বর্গ থেকে নেমে আসা এই নদীর কাছে। তবে বিমান থেকে নেমে নদীর পার্শ্ববর্তী রাস্তা ধরে হেঁটে কিংবা ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছাতে হয় কানো ক্রিসটেলসের কাছে। এক সময় এখানে প্রচুর ডাকাত পড়ত। দর্শনার্থীদের সর্বস্ব লুটে নিত তারা। এমনকী খুনও করত। এখন অবশ্য তেমনটি হয় না। হওয়ার সুযোগও নেই। কারণ, ২০০৯ সাল থেকে এটি ভ্রমণের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ করেছে কলম্বিয়া। আর তারও অনেক আগে থেকে কানো ক্রিসটেলস নদী, এর জন্মদানকারী পাহাড় ও এই অঞ্চলটিকে সংরক্ষিত এলাকাভূক্ত করা হয়েছে।

এখন কানো ক্রিসটেলসের পাশে রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে। আছে পরিবার পরিজন নিয়ে গিয়ে বন-বাদাড়ে রান্নাবান্না করে খাওয়ার সুব্যবস্থাও।

কানো ক্রিসটেলস যে অঞ্চলে অবস্থিত সেই মাকারিনা অঞ্চলটি উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলে ভরপুর তিন ধরণের বাস্তুসংস্থানের মধ্যে পড়েছে। এর একদিকে রয়েছে আন্দিজ পর্বতমালার ছোঁয়া, একদিকে ইস্টার্ন লানোস (বৃক্ষশূন্য তৃণময় সমভূমি) ও অন্যদিকে অ্যামাজন রেইনফরেস্ট।

যে পাহাড় থেকে কানো ক্রিসটেলস নদীর উৎপত্তি তার নাম ‘সেরেনিয়া দে লা মাকারিনা’। এই পাহাড়টি দৈর্ঘ্যে ১২০ কিলোমিটার। প্রস্থে ৩০ কিলোমিটার। পাহাড়টির শীর্ষচূড়ার উচ্চতা ২ হাজার ৬১৫ মিটার (৮ হাজার ৫৭৯ ফুট)। এই পাহাড়টি ৪২০ প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য, ১০ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বাসস্থান, ৪৩ প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণির ও ৮ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণির আবাসস্থল।

এমন একটি পাহাড় থেকেই তো কানো ক্রিসটেলসের মতো একটি স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যমন্ডিত নদীর উৎপত্তি হতে পারে। তাই নয় কী!

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা

পৃথিবীতে কোনো প্রাণী বা প্রজাতিই স্থায়ী নয়। একদিন না একদিনবিস্তারিত পড়ুন

এটিএম থেকে টাকার পরিবর্তে কী বের হচ্ছে?

এটিএম বুথের মেশিন থেকে টাকাই তো বের হওয়ার কথা। কিন্তুবিস্তারিত পড়ুন

৩৩ বছরে ছুটি নিয়েছেন মাত্র একদিন

১৯৪০-এ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্সিংয়ে হাতেখড়ি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধ, ২৪ বার প্রধানমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

  • লজ্জায় লাল হয়ে যায় পাখিও
  • দুই হাতের হৃদয়রেখা মিলে গেলে কি হয় জানেন?
  • ৩২১ থেকে ওজন কমিয়ে ৮৫!
  • রং নম্বরে প্রেম, বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি ঝলসে যাওয়া মুখ
  • পানিতে ভেসে উঠলো অলৌকিক হাত!
  • ১৫ বছরে একবার ফোটে ‘মৃত্যুর ফুল’
  • চা বিক্রেতা এখন ৩৯৯ কোটি টাকার মালিক
  • একটি মাছের বিষে মারা যেতে পারে ৩০ জন
  • মোবাইল কিনতে ছয় সপ্তাহের শিশুকে বিক্রি
  • পরকীয়ায় জড়াচ্ছে নারীরা প্রধান যে তিনটি কারণ নেপথ্যে
  • ২৪০০ কেজি খিচুড়ি রান্না হয় যেখানে দৈনিক !
  • পরীক্ষায় ফেল করলেই বিবাহ বিচ্ছেদ