‘স্বামীর সব চাহিদা মিটিয়েছি, আমি আর পারছি না’ আমাকে তুমি মুক্তি দাও!
আমার জীবনের এক কঠিন সত্যি আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরব। আমি অনাম্নী অঙ্গনা। ধরে নেওয়া যাক এটাই আমার নাম। আমি আর আমার স্বামী ১০ বছর একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের দুই সন্তান, একজনের বয়স ৪ আর আর একজনের ১। একটা পোষা বেড়ালও আছে। আর আছে একটা অপেক্ষা। সম্পর্কের একেবারে শুরুর দিনটা থেকে আমি এই সম্পর্কটার খারাপ দিনটার জন্য অপেক্ষা করে আছি।
আমার বাবা-মায়ের বিয়েটা যখন ভাঙে, তখন আমার বয়স মাত্র ৯। রোম্যান্টিক সম্পর্কগুলো কতটা ভয়াবহভাবে ভাঙে, সেটা দেখতে দেখতেই আমি বড় হয়েছি। সেজন্যই আমি কখনও আমার পুতুলের বিয়ে দিইনি। কখনও সাদা ভেল পরার স্বপ্ন দেখিনি। বাবা-মায়ের সম্পর্কটা এতটা খারাপভাবে শেষ হয়েছিল যে, কখনও বিয়ের কথাটাও আমার মাথায় আসেনি।
তবে, এতকিছু সত্ত্বেও যখন আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা হল, তাঁকে ভালোবেসে ফেললাম। প্রত্যেকটা সেকেন্ড একসঙ্গে থেকেও কখনও বোর ফিল করিনি। ওর প্রতি আমার ভালোবাসা নিবীড় ও গভীর হতে থাকে। এক রাতে যখন আমরা বিছানায় শুয়ে আছি, ও আমাকে বলল, ‘আমরা কি এনগেজমেন্ট করতে পারি না?’ কথাটা শুনে পেটের ভেতরটা মুচড়ে উঠেছিল। নিঃসন্দেহে আমি ভয় পেয়েছিলাম, এই সম্পর্ক ফের কদর্যরূপে ভেঙে যাওয়ার ভয়। তবে তা সত্ত্বেও আমি বলি, ‘নিশ্চয়ই, এখনই।’ ও যদি কথাটা আরও আড়ম্বরের সঙ্গে বা বড়সড় কোনও প্ল্যানিং করে বলত, তাহলে হয়তো আমি নিজেকে গুটিয়ে নিতাম।
মনের মধ্যে ভয়কে সঙ্গী করেই আমি বিয়েটা করার সিদ্ধান্ত নিলাম, কারণ আমি ওকে কমিট করতে চেয়েছিলাম। নিজেকে বললাম, এটা স্টার্টার ম্যারেজ।
বিয়ে করলাম। তবে, এখন আমার আশঙ্কাই আমাদের বৈবাহিক জীবনে সবচেয়ে কুত্সিত রূপে দেখা দিয়েছে। দুজনের মধ্যে যেকোনও ঝামেলাকেই আমার স্বামী রাত এলেই আমার সাথে যা করে বা তার রুম অন্য রকম হয়ে যায়। যেটাই আমরা আলোচনা করা শুরু করি, সেটা সেখানেই একটা চরম জায়গায় ঠেলে দেয় ও। আমার কাছে মনে হয়, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমি সব সময় তার চাহিদা মিটিয়েছি। এখন মনে হয়, আর নয়, এখানেই শেষ হওয়া দরকার। দুজনেই আর পারছি না! সুস্থ ও দীর্ঘ সম্পর্কের সংজ্ঞাটা ঠিক কী, সে বিষয়ে আমার কোনও ধারণা না থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি।
জিজ্ঞেস করি, এটাই কি স্বাভাবিক? ঠিক কতটা সহ্য করা যায়? তিক্ততা কতটা হলে, একে-অপরকে ছেড়ে লে যাওয়া যায়? ওর সঙ্গে বাগানে বসে ৫ মিনিট কথা বললেই, আমি গুগলে ডিভোর্সের উকিল খুঁজতে শুরু করি। ও-ও জানে, আমি ওকে ছেড়ে মায়ের কাছে চলে যাওয়ার কথা ভাবছি। ওর বাবা-মায়ের বিয়ের বয়স ৪০ বছর। আমার বাবা-মায়ের বিয়ের পরিণতিটাও ওর কাছে অজানা নয়। জানে বিয়ে নিয়ে আমার আশঙ্কার কথাটাও। তাই আমি কখন শান্ত হব, তার জন্য ও অপেক্ষা করে থাকে। তবু নিজে শান্ত হয় না।
নিজের এই অবস্থাটা যতটা সম্ভব দুই সন্তানের থেকে গোপন রাখার চেষ্টা করি। ৪ বছরের মেয়েটা যেভাবে ওর পুতুলের বিয়ে দেয়, তাতে আশা করি আমার মতো বিয়ে আতঙ্ক ওর মনে এখনও তৈরি হয়নি। মেয়েরা বড় হলে ওদের বিয়ে ও দায়বদ্ধতা সম্পর্কে ঠিক কী বোঝাব আমি জানি না। কারণ আমি নিজেও এখনও তা বুঝে উঠতে পারলাম না। আমি চাই বিয়ে নিয়ে ওদের মনে একটা ইতিবাচক ধারণাই তৈরি হোক। বিয়ের কনসেপ্টটা সত্যিই দারুণ।
মৃত্যুই দম্পতিকে পৃথক করতে পারে – নিজেকে শান্ত করার জন্য এই বেদবাক্যটাই জপে থাকি। আমাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার আগে আমিই যদি পালাতে পারতাম। আমাকে আঘাত করার আগে আমিই যদি সম্পর্কের থেকে বেরিয়ে আসতে পারতাম। এই অবস্থা থেকে বেরনো যায় তা আমি জানি না। তবু এই দায়বদ্ধতার অস্তিত্বে আমি বিশ্বাস করি। আমিই জীবনের চাহিদাগুলো বেছে নিয়েছিলাম, সেজন্যই আমি এখনও আমার স্বামীর সঙ্গেই আছি। তবে, আমার সার্চ হিস্ট্রি অবশ্য অন্য পরামর্শই দিচ্ছে!!
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন