“স্বামী বোঝে না, মা-বাবাও বুঝতে চায় না… “
“আমার বয়স ২৩। আমি বিবাহিতা। বিয়ে হয়েছে ১৯ শে অক্টোবর,২০১৩। আমার স্বামী মালয়শিয়াতে থাকে। আর আমি থাকি আব্বু-আম্মুদের বাসায়। শ্বশুর বাড়িতে থাকিনা আমি। কারণ শ্বশুর বাড়ি অনেক দূরে। আর ওদের পারিবারিক অবস্থা তেমন ভালো না।আমাদের মোটামুটি ওদের থেকে ভালো।
ফ্যামিলিগতভাবেই আমাদের বিয়েটা হয়েছে যদিও আমার তেমন মত ছিলোনা। কারণ সে আমার থেকে বয়সে বড়। আমার ওকে তেমন পছন্দ না। আর দেখতেও তেমন সুন্দর না। এরপরেও আমি আছি, সংসার করছি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে সে আমাকে আমার আব্বু-আম্মুদের বাসা ছাড়া ভাড়া বাসায় রাখতে চায়না। আর এদিকে আব্বু-আম্মু প্রায় সময় আমাকে বলে যে আমাকে আর ওনারা চালাতে পারবেন না। বিয়ে দিয়েও আবার পালাতে হচ্ছে, এক টাকাও নাকি খরচ দেয়না। হ্যাঁ, তা ঠিক যে সে টাকা কম দেয়। যেটুকু দেয় তা দিয়ে আমি আমার নিজের জন্য খরচ করি। কারণ বাড়িতে যদি দিই তবে আমি চলতে পারিনা। আমার পকেট খরচ দেয় আর কি। আর ডি,পি,এস টাতো আছেই। ডি,পি,এস প্রতি মাসে ১০,০০০টাকা। আমাকে ১৫০০-২০০০টাকা আর আমার শ্বশুর বাড়িতে ২০০০ টাকা দেয়। আমাদের পারিবারিক অবস্থা ভালো মনে করে এক টাকাও দেয়না। আব্বু টিচার তাই।
আমাদের মোটামুটি আছে কিন্তু আব্বুর অনেক খরচ বেড়েছে। যেমন- ছোট ভাইয়ের পড়াশোনা আছে। আর লোন নেয়া আছে অনেক। সেজন্য আব্বু বলল যে আলাদা হয়ে যেতে। এই কথাগুলি বললে স্বামী বলে যে জন্ম দিয়েছে কেন? আমাকে ৩ বছর সময় দিতে পারছেনা যে একটু অবস্থাসম্পন্ন হওয়ার। আব্বু-আম্মুও চায় যে জামাই একটু সাহায্য করুক। জামাই চায় শ্বশুরের আছে দেবো কেন। ফ্যামিলিও বুঝেনা, স্বামীও বুঝতে চায়না। মোট কথা হচ্ছে আব্বুদের ধারনা ছিলো আমাকে বিদায় করা। একজনের খরচ কমবে বলে। আর এখন তার উল্টোটাই হয়েছে। তাই মাঝে মাঝে ভাবি চলে যাবো। কিন্তু তাও পারিনা। কারণ আমি লাইফে এগোতে চাই। আর একটা কথা বলা হয়নি যে আমার স্বামী এখানে স্টাডি করেনি। শ্রীলঙ্কাতেই স্টাডি করেছে সে। এ নিয়েও অনেক মানসিক চিন্তায় আছি। মাথায় শুধু নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায় যে সে যদি মালয়শিয়া থেকে দেশে ফিরে আসে তখন ভবিষ্যৎ কী হবে। আপু আপনি বলেন এখন আমার করণীয় কি?”
পরামর্শ:
আপু, প্রথমত আপনার স্বামী আর পিতামাতা উভয় পক্ষই প্রচণ্ড স্বার্থপরের মত আচরণ করছেন। ডিপিএসে ১০ হাজার টাকা দেয়ার চাইতে নিজের স্ত্রীর ভরণপোষণ দেয়া যে অধিক জরুরী, এই সামান্য ব্যাপারটা তাঁর বোঝা উচিত। বিয়ের পর আপনার দায়িত্ব আপনার স্বামীর। আপনাকে বাবার বাড়িতে ফেলে রাখা অবশ্যই উচিত হচ্ছে না তাঁর।
অন্যদিকে এই বিয়ে আপনি স্বেচ্ছায় করেন নি। মা বাবা যেহেতু বিয়ে দিয়েছে, বিয়ের পর কী হবে সেটা মা বাবারই দায়িত্ব। স্বামীকে যেন সোজা ভাষায় বলে দেবেন যে আপনি তাঁর দায়িত্ব, যদি ভরণপোষণ দিতে না পারে তাহলে বিয়ে করাই উচিত হয়নি। আর মা বাবাকেও বলবেন যে এই স্বামী আপনার পছন্দের না, একে আপনি নির্বাচন করেন নি। টাই আপনাকে কিছু না বলে যে সরাসরি ছেলের সাথেই কথা বলে। আপনাকে যেন না শোনায়।
আপনি একটা কাজ করার চেষ্টা করুন আপু, নিজে একটা কাজে ঢুকে পড়ুন। আজকাল লেখাপড়ার পাশাপাশি অনেক রকমের পার্ট টাইম কাজ করা যায়। নিদেন পক্ষে টিউশনি করুন। উপার্জনের টাকাটা মা বাবাকে দেবেন নিজের থাকা খাওয়ার খরচ হিসাবে। আবার আপনাকে কাজ করতে দেখলে আপনার স্বামী লজ্জায় পড়ে আপনার থাকা খাওয়ার খরচ পাঠালেও পাঠাতে পারে। যেটাই হোক, কাজ করার চেষ্টা করলে আপনার লাভ ছাড়া ক্ষতি কিছু হবে না।
বিয়েতে মত না থাকা সত্ত্বেও আপনি যে সংসার করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন, এটার প্রশংসা করছি। স্বামীর কী হবে সেটা নিয়ে বেশি না ভেবে নিজের লেখাপড়ায় মন দিন। নিজে জীবনে কিছু একটা করার চেষ্টা করুন। জীবনে নিজের শক্তিটাই বড় শক্তি।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাউকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থকতা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন