হকার্স লীগ সভাপতি, এক কালের রাজপথ কাঁপানো নেতা এখন ভিক্ষা করছেন
নব্বই দশকের রাজপথ কাঁপানো এক নেতা এখন মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চাইছেন। দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনের ১নং প্লাটফরমে তাকে দেখা গেছে রোগ যন্ত্রণায় কাতরাতে। প্লাটফরমেই শুয়ে শুয়ে হাত পাতছেন লোকজনের কাছে। কেউ টাকা-পয়সা ছুঁড়ে দিচ্ছেন।
নাম তার হাশেম আলী (৬৫)। বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। তিনি পার্বতীপুর উপজেলা হকার্স লীগের সভাপতি। তাকে চেনেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে বয়সের ভারে নুয়ে পড়ে রোগাক্রান্ত হওয়ায় তার খোঁজ কেউ রাখে না।
১৯৯০ সালে এরশাদ বিরোধী গণআন্দোলনে রাজপথের সৈনিক ছিলেন হাশেম আলী। জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নেতাকর্মীদের হাতে। কিন্তু আজ তার সেই চেহারা আর নেই।
চরম অভাবের কারণে হাশেম আলী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাকে দেখার কেউ নেই। কিছুদিন থেকে তিনি পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনের ১নং প্লাটফরমে আশ্রয় নিয়েছেন। হাত পেতে ভিক্ষা করছেন।
এক পর্যায়ে গত ২৬ আগস্ট দুপুরে পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ইয়ংস্টার ক্লাবের সভাপতি আমজাদ হোসেন হাশেম আলীকে উদ্ধার করেন। তাকে ভর্তি করান হলদীবাড়ী হাসপাতালে (উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স)।
হাশেম আলী পার্বতীপুর পৌর এলাকার ধুপিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বছর কয়েক আগে তার স্ত্রী ও একমাত্র কন্যার মৃত্যু হয়। বিভিন্ন ট্রেনে ও রেলস্টেশনে কবিরাজী ওষুধ, চকলেট, দাঁতের মাজন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। পাশাপাশি তিনি দলীয় কর্মকাণ্ডে সময় দিতেন।
আগে পার্বতীপুরে আওয়ামী লীগের প্রতিটি বিক্ষোভ মিছিলে তাকে প্রথম সারিতে দেখা যেত। পেশায় হকার হওয়ায় তুখোর বক্তাও ছিলেন তিনি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৮৬ সাল থেকে পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন। তার অধিকাংশ জনসভায় অন্যতম বক্তা ছিলেন হাশেম আলী। দীর্ঘদিন থেকে পার্বতীপুর উপজেলা হকার্স লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বছর দুয়েক হলো তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হন। এতে তার আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায়।
বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হাশেম আলী ক্ষীণ কণ্ঠে বলেন, প্লাটফরমে শুয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করলেও নিজ দলের কেউ আমার খোঁজ নেয়নি। তবে ফিজার ভাই (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান) এলাকায় এলে কখনো কখনো কিছু টাকা-পয়াস দিতেন।
পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেন, সরকারের সুবিধাভোগী অনেক বিত্তশালী রয়েছেন। সরকারি দলের অনেক নেতাকর্মীই আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। কিন্তু কেউ হাশেম আলীর খোঁজ রাখার প্রয়োজন মনে করেন না। এ অবস্থায় হাশেম আলীর জীবিকা নির্বাহ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন