১২ ঘণ্টা ফ্যানে ঝুলল সাগরের লাশ
মো. মেহেদি হাসান সাগর (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। মধ্যরাতে সাগরকে তার নিজকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দিলেও তারা লাশ উদ্ধার করেছে পরদিন সকালে। থানা পুলিশকে খবর দেওয়ার পরও ১২ ঘণ্টা কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে নিহতের নিথর দেহ ঝুলে ছিল। পুলিশের দাবি নিহতের বাবা বাসায় না থাকায় তার লাশ নামানো হয়নি।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভবনে দ্বিতীয় তলার সাগরের নিজ কক্ষ থেকে তার হাত-পা বাধা অবস্থায় ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ডেমরা থানা পুলিশ। মৃত সাগর ডেমরার ডগাইর মহাকাশ রোড এলাকার কাষ্টম অফিসার আব্দুল মতিনের ছেলে। মৃত্যুর পরও নিহত সাগরের নিথর দেহ ১২ ঘণ্টা ঝুলন্ত অবস্থায় থাকতে হয়েছে বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করেন নিহতের মা। সাগরের মৃত্যুকে ঘিরে এলাকাবাসী ও প্রতিবেশীদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। কারো বিশ্বাস হচ্ছে না সে আতœহত্যা করেছে। প্রায় সকলেরই অভিযোগ সাগরকে হত্যা করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাগর ডেমরার সানারপাড় এলাকার রওশন আরা কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। রোববার রাতে বাহির থেকে বাসায় ফিরে তার নিজ কক্ষে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেয়। বেশ কিছুক্ষণ দরজা বন্ধ থাকায় পরিবারের লোকজন সাগরকে অনেক ডাকাডাকি করলে ভেতর থেকে কোন সারাশব্দ না পেয়ে ভবনের ছাদের উপর থেকে রশি ফেলে তার রুমের জানালার কাছে পৌঁছে তার বড় ভাই মিলন। এ সময় সাগরের ঝুলন্ত হাত পা বাধা লাশ দেখতে পায় মিলন। পরে রাত সাড়ে ১০ টায় থানা পুলিশকে খবর দিলে সোমবার সকালে সাগরের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
কিন্তু প্রতিবেশীরা জানায় ভিন্ন কথা। বিষয়টি প্রতিবেশীরা টের পেয়ে পুলিশে খবর দিতে বললে ভাই মিলন ও তার পরিবারের লোকজন প্রথমে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে বাধ্য হয়ে রাত ১২ টার দিকে থানা পুলিশকে খবর দেয় এবং বড় ভাই মিলন ও তার ভগ্নিপতি থানায় যান। অথচ মৃত সাগর নাকি সন্ধার পরপরই ঘরে ঢুকে গিয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ভবনের এক প্রতিবেশী জানায়, সাগরকে তার বড় ভাই প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কারণে গালমন্দ করত এবং মানসিকভাবে চাপের মুখে রাখত। কোন কোন দিন বাসায় ফিরতে একটু দেরি হলে বাসার গেট লাগিয়ে রাখত। সাগরকে ঘরে ঢুকতে পর্যন্ত দিতনা অনেক সময়। পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে রোবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘটনাটি পর্যবেক্ষন করে ঝুলন্ত সাগরের লাশের কিছু ছবি তুলে নিয়ে যায়। সাগরের বাবা সিলেটে থাকায় তার অনুপুস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করেনি বলে জানায় পুলিশ। পরিবারের অনুরোধে সোমবার সকালে বাবা আসলে তার লাশ উদ্ধা করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, সাগরের হাত পা বাধা এবং মুখে কাপড় ও কাগজ গোজানো দেখে তার মৃত্যুটি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আসল সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে। মৃত্যুর বিষয়টি জানতে চাইলে বড় ভাই মিলনের স্ত্রী শেফা সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে এড়িয়ে যান। বড় বোন মমতাজ বেগম মুন্নির কাছে জানতে চাইলে মুন্নিকেও সরিয়ে নিয়ে যান শেফা। এদিকে সাংবাদিকরা ঘরে প্রবেশ করতেই শ্বাশুরি বউয়ের বাকবিতন্ডা শুনতে পায়। সব মিলিয়ে সাগরের মৃত্যুর বিষয়টিকে ঘিরে রয়েছে অনেক রহস্য। এদিকে অসুস্থ্য সাগরের বাবাও ভেঙে পড়েছেন তার ছেলের মৃত্যুতে। ৪ মেয়ে ও ২ ছেলেকে ঘিরেই তার সংসার। ছোট ছেলে সাগরের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তার বাবা।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, রোববার গভীর রাতে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তবে নিহতের বাবা ঢাকার বাইরে থাকায় রাতে লাশ উদ্ধার করা হয়নি। সকালে সাগরের বাবার উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মিডফোর্ড হাসাপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। এ বিষয়ে থানায় আপাতত একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পদ হারালেন গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে গাজীপুর জেলা ছাত্রদলেরবিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুল গ্রেপ্তার
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রাজধানীরবিস্তারিত পড়ুন