‘১৫ দিনেও সরকারের কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি’

নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে গত ১৫ দিন ধরে বেকার নার্সরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। এবার তাদেরকে জলকামান দিয়ে হলেও উৎখাত করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে। ধর্মঘটের ১৫তম দিনে আজ সোমবার বিকালে এমন অভিযোগ করেছেন বেকার নার্সরা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ধর্মঘটে বসে থাকা বেকার নার্স নূরনাহার আক্ষেপের সুরে বলেন, “ঘর-সংসার ফেলে ১৫ দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে এই রাস্তায় পড়ে আছি। তবুও জনদরদী এ সরকারের কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি।”
তিনি জানান, বেকার নার্সদের একটি বিক্ষোভ মিছিল আজ শাহবাগের উদ্দেশে যাওয়ার সময় পুলিশি বাধায় এগোতে পারেনি। এসময় পুলিশের এক দারোগা এসে বলে গেছেন, যেকোনোভাবেই হোক আজ রাতে তাদের এখানে আর বসতে দেয়া হবে না। জলকামান দিয়ে হলেও তুলে দেয়া হবে।
২০০৭ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে চার বছরের ডিপ্লোমা শেষ করে আসা এই নারী বলেন, নিজের পয়সায় এখানকার শুকনো খাবার খেয়ে এবং জাতীয় প্রেসক্লাব ও সেগুনবাগিচা বারডেমের টয়লেট ব্যবহার করে কষ্টকর এই আন্দোলনে অংশ নিচ্ছি। দুষ্টু পথচারীদের উদ্দেশ্যমূলক শ্যেন দৃষ্টির সামনে বিনিদ্র রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছি।
তিনি বলেন, “কথিত নার্সবান্ধব এ সরকার ও প্রশাসন কেন জানি এখনো আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না। অথচ দেশে হাজার হাজার নার্সের পদ শূন্য রয়েছে। চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে নার্সিং ডিপ্লোমা শেষে ১০ বছর ধরে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছি এই আমাদের সংখ্যাও হাজার হাজার। সরকার মুখে ভালোবাসার কথা বলবে আর আমাদের দিকে তাকাবে না তা হবে না। আমাদের দাবির ন্যায্যতার পক্ষে দেশের হাজারো মানুষ গণস্বাক্ষর দিচ্ছে। গত শনিবার থেকে অবস্থান ধর্মঘটে এসে সংহতি প্রকাশ করে তারা এ স্বাক্ষর দিচ্ছে।”
নূরনাহার বলেন, “অবস্থান ধর্মঘটের পাশাপাশি মেধা ও ব্যাচভিত্তিক নার্স নিয়োগের দাবি জানিয়ে কয়েক দফা স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। অথচ লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে চলছে আমাদের প্রতি সরকারের অবজ্ঞা। এতে আমিসহ আমাদের সবার মনের ক্ষোভ ও হতাশা অসহ্য অবস্থায় পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতিতে যেকোনো অঘটনের দায় সরকারকেই নিতে হবে।”
একইসঙ্গে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে একই কথা বললেন, আঞ্জুমান আরা, খুশি আরা, ফাতেমাতুজ জহুরাসহ আন্দোলনরতরা।
এদেরই একজন সাজেদা খাতুন। তিনি মোহাম্মদপুর থেকে প্রতিদিন আসেন এ আন্দোলনে অবস্থান নিতে। বাসায় ফেলে আসেন তার সাত বছরের শিশু তুবা আর দুই বছরের সাদকে। ওরা কান্নাকাটি করে ফোন দেয় তাকে বাসায় ফিরতে কিন্তু তিনি যেতে পারেন না।
তিনি বলেন, “ওদেরকে ভালোভাবে মানুষ করার কথা ভেবেই তো ডিপ্লোমা কোর্স করেছিলাম সেই ২০০৬ সালে। অথচ প্র্রথমে ব্যাচভিত্তিক নিয়োগের কথা বলে তখন থেকে আমাদের অপেক্ষায় রেখেছে সরকার। এতোদিন পর এসে সরকার আমাদের নিয়োগের বিষয়ে আবার ভিন্ন সুরে কথা বলছে।”
এদিকে নার্সদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (পেট্রোল) ইমানুল হক বলেন, এসব কথা মোটেই ঠিক নয়। যদি বাধাই দেয়া হবে তবে প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের মুহূর্তে রাস্তায় তাদের বিক্ষোভ মিছিল হতে দিতাম না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

জুলাই স্মৃতি উদ্যাপনে কর্মসূচি ঘোষণা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই থেকে ৫বিস্তারিত পড়ুন

দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ও নিবন্ধন ফিরে পেল জামায়াত
জামায়াতে ইসলামীর পুরনো প্রতীক ‘‘দাঁড়িপাল্লা’’ পুনরায় বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচনবিস্তারিত পড়ুন

উপদেষ্টা: গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সক্ষম সদস্যরা অগ্রাধিকার পাবেন চাকরিতে
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আহত “জুলাইযোদ্ধারা” আগামী জুলাই থেকে মাসিক ভাতা পাবেনবিস্তারিত পড়ুন