৯/১১ হামলা : ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, কেউ বিশ্বাস করেনি

আজ থেকে ১৫ বছর আগের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গিদের বিমান হামলায় নিহত হয় ২ হাজার ৯৯৬ জন মানুষ। অথচ তাদের সবাইকেই বাঁচানো যেত। আহতও হতো না ৬ হাজার লোক। যদি একজনের কথা শোনা হতো। তিনি রিক।
রিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন আর্মি অফিসার ছিলেন। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার সময় সেখানে ব্যবসায়িক দৈত্য প্রতিষ্ঠান মরগান স্ট্যানলির নিরাপত্তাপ্রধান ছিলেন। তিনি ওই ভবনে বিমান হামলার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তবে কেউ তার কথা বিশ্বাস করেনি।
রিকের স্ত্রী সুসান রেসকরলা বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে কী ঘটতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে রিক আমাকে প্রায়ই বলত। সে তার বসদের বলেছিল যে, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ঝুঁকিতে আছে। রিক বিমান হামলার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিল। কী ঘটতে পারে সে ব্যাপারে রিক সব সময়ই আলোকপাত করত। এমনকি তার সমাধি কোথায় হওয়া উচিত সে ব্যাপারেও রিক আলোচনা করত।’
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ‘টুইন টাওয়ার’ নামেও পরিচিত ছিল। এই টুইন টাওয়ারের একটি ‘নর্থ টাওয়ার’ ও অন্যটি ‘সাউথ টাওয়ার’ হিসেবে আখ্যায়িত ছিল। রিক বিভিন্ন কোম্পানিকে টুইন টাওয়ার থেকে তাদের ব্যবসা সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, হামলার ভয়ে। তবে কেউই তার কথায় বিশ্বাস করেনি।
আল-কায়েদার বিমান হামলার আগেও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা হয়েছিল, ১৯৯৩ সালে। সেবার সেন্টারের আন্ডারগ্রাউন্ডের কার পার্কিংয়ে একটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনার তিন বছর আগেই এই হামলার ব্যাপারে তার বসদেরকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন রিক। তবে তারা রিকের কথায় কান দেননি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদার হামলার ক্ষেত্রে। এবারও রিকের ভবিষ্যদ্বাণী উপেক্ষা করা হয়।
তবে টুইন টাওয়ারে হামলার সময় রিক যে একেবারে ব্যর্থ ছিলেন তা বলা যাবে না। টুইন টাওয়ারে হামলার সময় প্রথম নর্থ টাওয়ারে বিমান হামলা চালায় জঙ্গিরা। এর ১৭ মিনিট পর হামলা চালানো হয় সাউথ টাওয়ারে। তবে নর্থ টাওয়ারে হামলার পরপরই রিক তার সহকর্মী ও অন্যদের ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, সাউথ টাওয়ারে হামলা হবে। এরপর তিনি প্রায় ২ হাজার ৭০০ লোকের প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন।
টুইন টাওয়ার হামলার দিন নর্থ টাওয়ারে হামলার পর সাউথ টাওয়ারের কর্তৃপক্ষ সবাইকে নিজ নিজ অফিসে অবস্থান করতে বলে। তবে রিক তাদের আদেশ অমান্য করে সবাইকে ভবন খালি করতে বলেন। প্রায় ২ হাজার ৭০০ জনকে ভবন থেকে নামিয়ে কেউ পিছিয়ে পড়ল কি না, তা তদারকি করতে বীরের মতো ভবনে যান রিক। সেই সময়ই সাউথ টাওয়ারে হামলা হয়। আর এতে প্রাণ হারান রিক।
হামলার ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দুটি টাওয়ারই ধসে পড়ে। এতে নিহতদের লাশ খুঁজে পাওয়া কিংবা তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। যেমনটি হয়েছে রিকের ক্ষেত্রে। টুইন টাওয়ার ধসের পর তার লাশ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের স্থানে ‘৯/১১ মেমোরিয়াল মিউজিয়াম’ খোলা হয়েছে। সেখানে রিকের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।
রিক তার জীবনের শেষ কথা হয়তো তার স্ত্রী সুসানকে মোবাইল ফোনে বলেছিলেন। রিক সুসানকে বলেছিলেন, ‘আমার সঙ্গে যদি কিছু ঘটে তবে মনে রেখ- তুমিই ছিলে আমার জীবন।’
এর পরই ফোনের লাইন কেটে সুইচ অফ হয়ে যায়। সম্ভবত রিকের জীবনের লাইনও।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সবাইকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত ক্রমেই উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেবিস্তারিত পড়ুন

সংঘাতের মাঝেও তেহরানের বায়ুমান ঢাকার চেয়ে ভালো
সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।বিস্তারিত পড়ুন

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেবিস্তারিত পড়ুন