অপরাধ দুনিয়ার আলোচিত সাত সুড়ঙ্গ (ছবিতে দেখুন)
প্রাচীনকালে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হতো বিপদের সময় লুকানো কিংবা গোপনে অন্য দেশে আক্রমণের জন্য। এখনকার সুড়ঙ্গ মানেই অপরাধ জগতে কাজ কারবার। বিশেষ করে মাদক, চোরাচালান কিংবা বড় মাপের ডাকাতির জন্যই খোঁড়া হয় সুড়ঙ্গ।
ব্রাজিলের ‘গোল্ড ডিগার’
ব্যাংক ডাকাতির জন্য কুখ্যাত ব্রাজিলের ২৬২ ফুট গভীর ‘গোল্ড ডিগার’। ২০০৫ সালের আগস্টে এ সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৪ কোটি ইউরো ইউরো নিয়ে যায় ডাকাতরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুড়ঙ্গ যেখানে হবে সেখানে নকল ঘাসের দোকান খুলে বসে ডাকাতের দল। ঘাসে ঢেকে ফেলা হয় সুড়ঙ্গের মুখ। দোকানের ব্র্যান্ডিংয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে দেয়া হয় প্রচুর বিজ্ঞাপন। দোকানের পেছনের অংশে তৈরি করা হয় বিশেষ একটি কক্ষ। কৃত্রিম ঘাস বিকিকিনির আড়ালে এ কক্ষ থেকেই চলে সুড়ঙ্গ অভিযান। ব্রাজিলে এখনও অপরাধ বিষয়ক আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে এ ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা।
বার্লিনের ব্যাংক ডাকাতি
চলতি বছরের গোড়ার দিকে হঠাত্ করেই রাজধানী বার্লিনের একটি ব্যাংক থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। তালাবদ্ধ ব্যাংকটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রশাসনকে জানায় স্থানীয়রা। পুলিশ আসতেই বেরিয়ে এল আসল গল্প। ব্যাংকের সেফটি ভল্টের নিচে ১৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ। চওড়ায় প্রায় ৩ ফুট। পাশের একটি পার্কিং প্লেস থেকে শুরু করে সুড়ঙ্গটি একেবারে সেফটি ভল্টের নিচে গিয়ে শেষ হয়েছে। ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে ব্যাংকে ঢুকে চোরেরা লোপাট করেছে ১ কোটি ইউরো। পুলিশ জানায়, ডাকাতরা পেশাদার সুড়ঙ্গ খোদকও বটে। খুঁড়তে সময় লেগেছে অন্তত এক মাস। কাজ শেষে প্রমাণ মুছে দিতে সুড়ঙ্গতে আগুনও ধরিয়ে দেয় তারা।
ইউএস-মেক্সিকো সুড়ঙ্গ
মেক্সিকো আর যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তের সুড়ঙ্গগুলো মাদক পাচারের অন্যতম রুট। তবে এর মধ্যে ২৭০ ফুট লম্বা সুড়ঙ্গটিই খুঁজে পাওয়া যায় প্রথমে। আরিজোনার ডগলাস এলাকায় প্রথম এর সন্ধান পান ফিলিপ ডে জেসাস নামের এক স্থপতি। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে উদ্ধারকৃত দুই হাজার পাউন্ড কোকেইন ও গাঁজা বাজেয়াপ্ত করে স্থানীয় প্রশাসন।
স্বর্ণের দোকান ভেবেস্থানীয় শপিং মলের জুয়েলারি দোকানে ডাকাতির উদ্দেশ্যে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করে আমেরিকার কয়েকজন দুষ্কৃতকারী। প্রথমে সামনের দিককার জানালা ও এরপর পেছনের দরজা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু পরে তাদের মাথায় আসে বাথরুম ঘেঁষে সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা। নিঃশব্দে কোটি টাকার স্বর্ণের মালিক হওয়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ। হায়! সুড়ঙ্গ পার হতেই মাথায় হাত দুর্বৃত্তদের। স্বর্ণের দোকানের পরিবর্তে ভুল পথে তারা চলে এসেছে কেএফসির দোকানে। অগত্যা স্বর্ণের বদলে খাবার দাবারেই তৃপ্তির ঢেঁকুর।
যুদ্ধের সুড়ঙ্গচিরবৈরী উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মাঝামাঝি এলাকায় আছে বেশকটি সুড়ঙ্গ। দক্ষিণ কোরিয়ায় আচমকা আক্রমণের উদ্দেশ্যেই এগুলো তৈরি করে উত্তর কোরিয়া। প্রথমে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কথা অস্বীকার করে পিয়ংইয়ং। পরে ১৯৭০ সালে দুটি সুড়ঙ্গ আবিষ্কার হতেই চাপের মুখে পড়ে উত্তর কোরিয়া। আমতা আমতা করে বলে কয়লা অনুসন্ধানেই সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছে।
১৯৭৮ সালে ধরা পড়ে তৃতীয় সুড়ঙ্গটি। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে ২৭ মাইল দূরত্বে অবস্থিত সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য ১.১ মাইল। চওড়ায় ৬.৬ ফুট। সুড়ঙ্গটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন এর ভেতর দিয়ে ঘণ্টায় একটি করে সেনাবহর দক্ষিণ কোরিয়ায় ঢুকতে পারে। ১৯৯০ সালে বের হয় চতুর্থ সুড়ঙ্গ। ধারণা করা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় আগ্রাসন চালাতে এমন আরো ২০টি সুড়ঙ্গ খুড়ে রেখেছে উত্তর কোরিয়া। এরমধ্যে ১৯৭৮ সালে ধরা পড়া তৃতীয় সুড়ঙ্গটি সাপে বর হয়েছে সিউলের জন্য। সুড়ঙ্গটি এখন রীতিমতো পর্যটন কেন্দ্র হয়ে গেছে।
চোরাকারবারির ঐতিহ্যযুক্তরাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে আছে বহু গোপন সুড়ঙ্গ যেগুলো সাধারণত চোরাকারবারির কাজেই ব্যবহূত হয়। এগুলোতে মাদক, চিনি, চা চোরাচালাল হয়ে থাকে। সম্প্রতি হাস্টিংস শহরে পানির লাইনের গর্ত তৈরির সময় সন্ধান মিলেছে ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এক সুড়ঙ্গের। ধারণা করা হচ্ছে এটি ১৮শ শতকে তৈরি।
কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র চোরাপথ
সবার দৃষ্টি যখন মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের সুড়ঙ্গপথে এমন সময় কানাডায় সন্ধান পাওয়া গেল যুক্তরাষ্ট্রমুখী আরেকটি সুড়ঙ্গের। উত্তরের বন্ধুপ্রতিম দেশটির কাছ থেকে স্বভাবতই এমনটা আশা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। আর কানাডারই বা কী দোষ? সীমান্তে গর্ত খুঁড়তে তো কাউকে নিয়োগ দেয়নি দেশটি। সন্দেহের তীর গিয়ে পড়ে বছরখানেক আগে রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা মাপতে আসা ব্যক্তিদের ওপর। কানাডার আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করে মার্কিন তদন্ত। রাজধানী ওয়াশিংটনের লিন্ডেনে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকেই সুড়ঙ্গের উত্পত্তি। যার দৈর্ঘ্য ৩৬০ ফুট। কাঠ ও নানা দামি ধাতব পদার্থ দিয়ে মজবুত কাঠামোতে তৈরি হয় সুড়ঙ্গটি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
চা কন্যা খায়রুন ইতিহাস গড়লেন
চা শ্রমিকদের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে সব মহলেই পরিচিত হবিগঞ্জেরবিস্তারিত পড়ুন
চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড.বিস্তারিত পড়ুন
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন