বুধবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

শিশুদের কাজ করা রাষ্ট্রের লজ্জা: হাইকোর্ট

খুনি সন্দেহে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে গ্রেপ্তার দুই শিশুর জামিন শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘এতটুকু বাচ্চারা কাজ করে, এটা আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য লজ্জার।’

আট বছরের শিশু জয়দাশ ও নয় বছরের মো. ইউসুফের জামিন শুনানিতে রবিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

শুনানি শেষে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুই শিশুকে জামিন দেন হাইকোর্ট। শুনানির সময় শিশু দুটি আদালতের ডায়েসের পাশে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাক্কাছিল। এ সময় তাদের কখনো জামার কলার ধরে, আবার কখনো আঙ্গুল কামড়াতে দেখা যায়।

শুনানির এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক শিশু দুটির উদ্দেশে বলেন, বাবুরা এদিকে এসো। তারা না আসলে বিচারপতি বলেন, তোমাদের কি আদালতে আসতে ভয় লাগে? ভয়ের কিছু নাই।

শিশু দুটি একটু এগিয়ে আসলে বিচারপতি বলেন, কি নাম তোমাদের? তোমরা কি করো? শিশু দুটি বলে,আমরা গাড়িতে কাজ করি।

বিচারক জানতে চান, তোমরা স্কুলে যাও না? শিশুরা বলে, না।

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক বলেন, এতটুকু বয়স। ওদের তো এখন স্কুলে থাকার কথা। কিন্তু আজ এই শিশুদের কাজ করে খেতে হয়।

আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা, সমাজপতিরা অনেক কথা বলেন। কিন্তু এ বিষয় তাদের চোখে পড়ে না। রাষ্ট্রের তো দায়িত্ব ছিল এই শিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা। এতটুকু বাচ্চারা কাজ করে এটা আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য লজ্জার। আমাদের সমাজ এর কি জবাব দেবে? সরকার এতো টাকা খরচ করে, এদিকে একটু গুরুত্ব দিলেই তো পারে।

আদালত বলেন, সরকার আইন করুক, স্কুল টাইমে শিশুরা বাইরে ঘোরাফেরা করলে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেবে। স্কুল টাইমে বাচ্চা শিশুদের ধরে নেওয়ার পর তাদের অভিভাবককে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শিশুদের যারা কাজে নেবে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে এই ধরনের আইন আছে।

এরপর বিচারপতি কাজী রেজা-উল বাচ্চা দুটিকে উদ্দেশে করে বলেন, বাবাকে গিয়ে বলবে, জজ সাহেব বলেছে স্কুলে যেতে। আর বড় হয়ে তারপর কাজ করবে।

এরপর আদালত শিশু জয় দাশ ও মো. ইউসুফকে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন। একইসঙ্গে আদালত এই দুই শিশুকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশের লালবাগ জোনের ডিসি ও কামরাঙ্গীচর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে বয়স নির্ধারণ না করে দুই শিশুকে গ্রেপ্তার শিশু আইনের ৪৪ ধারা লঙ্ঘন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন আদালত।

আদালতে শিশুদের পক্ষে শুনানি করেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, বয়স নির্ধারণ না করে দুই শিশুকে গ্রেপ্তার শিশু আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। নিরাপত্তার পাশাপাশি দুই শিশুকে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন আদালত।

গত ২৪ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘লাশের পরিচয় মেলেনি, খুনি সন্দেহে ২ শিশু গ্রেপ্তার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল হালিম একটি রিট আবেদন করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৯ নভেম্বর আদালত রুলসহ ওই দুই শিশুর বয়স নির্ণয়ের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। সেই আদেশ অনুসারে ৪ জানুয়ারি লালবাগের ডিসি ও কামরাঙ্গীচরের ওসি আদালতে প্রতিবেদন দেন। গত ১৫ জানুয়ারি সেই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত দুই শিশুকে হাজিরের নির্দেশ দেন।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্রায় দুই মাস আগে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল। ১০ দিন পর লাশটি নিখোঁজ এক শিশুর দাবি করে তার পরিবার একটি মামলা করে। পরে পুলিশ খুনি সন্দেহে দুই শিশুকে গ্রেপ্তার করে।

বিচারিক হাকিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে তাদের টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান।

এর আগে অভিযোগকারী পরিবার ও পুলিশ অভিযুক্ত শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়। এ সবই ঘটে দুই দিনের মধ্যে। আরও পরে জিজ্ঞাসাবাদের দুটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে তুলে দেন নিখোঁজ শিশুটির এক ফুফাতো বোন।

এখনো লাশটির পরিচয় অজানাই আছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন বলছে, সে পানিতে ডুবে মারা গেছে। অভিযুক্ত দুই শিশু বলছে, মারধর করে তাদের মিথ্যা দায় স্বীকার করতে বাধ্য করা হয়েছে।

মামলাটি হয়েছে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানায়। পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় শিশুটির লাশ উদ্ধার করে গত ১ অক্টোবর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের কালুনগর খাল থেকে। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম সেটা দাফন করে।

এদিকে ২৯ সেপ্টেম্বর লালবাগ এলাকা থেকে আলিফ নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার বাবা উজ্জ্বল ভূঁইয়া।

১১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আলিফের বাবা বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় শিশু দু’টির (শিশু হওয়ায় তাদের নাম উল্লেখ করা হচ্ছে না) নামে খুনের মামলা করেন। এজাহারে তিনি লেখেন, অজ্ঞাতপরিচয় লাশটি তাঁর ছেলের। ওই দুই শিশু মিলে আলিফকে গলাটিপে হত্যা করে কালুনগর খালের পানিতে ডুবিয়ে দেয়। আলিফের বাবা তখনই এক শিশুকে পুলিশে সোপর্দ করেন। পুলিশ রাত দেড়টার দিকে অপর শিশুকে গ্রেপ্তার করে।

শিশু আইন, ২০১৩ অনুযায়ী, নয় বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে গ্রেপ্তার কিংবা আটক করা যাবে না (ধারা ৪৪/১)।

মামলার এজাহারে শিশু দু’টির বয়স বলা হয়েছে ১২ বছর। কিন্তু অভিভাবকরা বলছেন, তাদের বয়স নয় বছরের কম। আদালতে জন্মসনদ দাখিল করে মামলা থেকে এক শিশুর অব্যাহতি চেয়েছেন তার আইনজীবী। ওই সনদে দেখা যায়, তার জন্ম তারিখ ২৯ জানুয়ারি, ২০০৮। আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ মোকাবিলায় প্রস্তুতির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি’ মোকাবিলার জন্যবিস্তারিত পড়ুন

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের

জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া

গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

  • যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭
  • গাজায় অনাহারে ২ শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু
  • যুক্তরাষ্ট্রে কমছে বিদেশি শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের ভিসার মেয়াদ
  • সিগারেটের আগুন থেকে দাবানল, সাইপ্রাসের ১০০ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল পুড়ে ছাই
  • চবিতে ফের স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ-ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সহ-উপাচার্যসহ আহত ১০
  • রাকসু কার্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের তালা-ভাঙচুর
  • স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ১,৬০৪ বার সড়ক অবরোধ হয়েছে
  • কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ
  • স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদের কথা মাথায় রেখেই দেশটাকে নতুন করে গড়তে হবে
  • বিএনপি সুশাসনে ও জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করে
  • ভাতার ১ম কিস্তি শুরু; গর্ভবতী ভাতার আবেদন শর্ত