যৌন হয়রানির দায়ে ঢাবির শিক্ষক স্থায়ী বরখাস্ত

যৌন হয়রানির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে এক কর্মকর্তাকেও।
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বরখাস্ত হওয়া ওই শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নিল সিন্ডিকেট সভা। এ সিদ্ধান্তের ফলে পেনশনের সোয়া কোটি টাকা হারাতে হলো তাঁকে।
এর আগে ভুক্তভোগী ছাত্রী ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তী সময়ে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. সহিদ আখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে কমিটিতে ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, স্যার পি জে হার্টগ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসাম্মাৎ নীলিমা আকতার এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ এফ এম মেজবাহউদ্দিন। তাঁদের প্রত্যেকেই সিন্ডিকেট সদস্য।
বহিষ্কারের বিষয়ে তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এক ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ঘটনা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাই। পরে কমিটি ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। সুপারিশ অনুযায়ী সিন্ডিকেটের সভা স্থায়ীভাবে ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করে।’
তদন্ত কমিটির একমাত্র নারী সদস্য ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোসাম্মৎ নীলিমা আকতার বলেন, ‘ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। সেই অনুযায়ী সিন্ডিকেটের সভা তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে ভর্ৎসনা করা হয়।’
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন একসঙ্গে অনেকগুলো বই হাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষক। তার পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। এ সময় ওই শিক্ষক বার্ধক্যের কারণ দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে বইগুলো কক্ষে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ জানান। ছাত্রী বইগুলো নিয়ে তাঁর কক্ষে প্রবেশ করলে শিক্ষক কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেন এবং ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করেন। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে ওই শিক্ষক এলপিআরে (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি) আছেন। আগামী জুনে তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে। অবসরে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হলেন তিনি। এই সিদ্ধান্তের ফলে অবসর গ্রহণের পর আর্থিক সব সুযোগ-সুবিধা হতে তিনি বঞ্চিত হলেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করায় এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় এক কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) মুহিবুল হাসান। তাঁর বিরুদ্ধে পরীক্ষার নম্বরপত্রে ঘষা-মাজা করার অভিযোগ ছিল।
এ ছাড়া ছুটি ব্যতিরকে বাইরে অবস্থান করায় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের এজেন্ডা আসে সিন্ডিকেটের সভায়। তিনি ২০০৭ সালে ছুটির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ছুটি মঞ্জুর হওয়ার পূর্বেই তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তবে ২০০৭ সালে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় তাঁর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে সূত্র জানায়। পরবর্তী সময়ে মানবিক দিক বিবেচনায় তাঁকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে বলেও সভা সূত্রে জানা যায়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

শেকৃবির ১২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) “আওয়ামীপন্থি” ১২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তবিস্তারিত পড়ুন

২৭তম বিসিএসে বঞ্চিত ১,১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
১৭ বছর আগে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের চাকরি ফেরতবিস্তারিত পড়ুন

এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন