অফিসে কাজের সময় কেন ঘুম পায়?
অফিসে কি আপনার শুধু ঘুম পায়? এই সমস্যা শুধু আপনার একার নয়। প্রায় অধিকাংশ চাকরিজীবী মানুষেরই অফিসে কাজের সময় ঘুম পায়। কথার কথা না, গবেষণার হিসাব এমনটাই বলছে।
কম ঘুমানো-এমন একটি বদ অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে, যা দিনকে দিন আমাদের কার্যক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে। আপনি যদি সব সময় অফিসে তন্দ্রা অনুভব করেন, এমনকি মিটিংয়ের মধ্যেও যদি এমনটা হয় তাহলে আপনার মধ্যে কাজের উদ্দীপনা ও কর্মক্ষমতা হ্রাস পাবে এবং আপনার অধীনস্ত কর্মচারীদের ওপরও এর প্রভাব পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি কর্মচারীভিত্তিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট গবেষণাটি পরিচালনা করে। তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট এক হাজার ১৩৯ জন কর্মচারী এই গবেষণায় অংশ নেন।
প্রধান গবেষক জেনিফার তুর্গিস গবেষণা করে দেখেন, এঁদের মধ্যে ১৫ শতাংশ কর্মচারী সপ্তাহে অন্তত একদিন অফিসে ঘুমের তন্দ্রা অনুভব করেন! আর এর পেছনে চারটি কারণ রয়েছে : দুশ্চিন্তা অথবা চাপ, মানসিক কার্যকলাপ, শারীরিক অস্বস্তি এবং পরিবেশগত ব্যাঘাত।
এর আগে ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ২৯ শতাংশ কর্মচারী অফিসে তন্দ্রা অনুভব করেন এবং কাজের সময় তাদের ঘুম পায়। যেখানে প্রায় ৩৬ শতাংশ মানুষের গাড়ি চালানোর সময় ঘুম পায়।
রাতে কম ঘুমানোর জন্য সকালে আপনি বেশ তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকেন। এর ফলে উৎপাদনশীল কোনো কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ কাজ করে না। এমনকি এভাবে পরপর পাঁচদিন, দিনের বেলা তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকার ফলে আপনার খাবার পরিপাকে সমস্যা হয় এবং আপনার শরীরের শক্তি ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়।
বিশেষ করে নারীরা এ কারণে অনেক বেশি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এক সপ্তাহ যদি এভাবে ঘুম কম হয় তাহলে একসময়ে আপনার হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস হতে পারে। এমনকি আপনি মোটাও হয়ে যেতে পারেন!
তুর্গিস গবেষণা করে দেখেন যে, কম ঘুমের কারণে সৃষ্ট এই ক্লান্তিভাবের কারণে সংকটাপন্ন যেকোনো পরিস্থিতি সামলাতে তাঁরা চাকরিজীবীরা হিমশিম খান। এর ফলে অফিসের বিভিন্ন কাজ করার সময় তাঁরা যে ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন তা হলো : সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কমে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, জ্ঞান হ্রাস পাওয়া, সহজেই বিরক্ত হওয়া এবং ধৈর্য কমে যাওয়া।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে কী করবেন :
• প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। সকালে বা বিকেলে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন।
• কাজের মাঝে কিছুটা বিশ্রাম নিন। মাঝে মাঝে চেয়ার থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করুন। এতে ক্লান্তিভাব দূর হবে।
• পরিমিত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
• রাতে ঘুমানের আগে কিছুক্ষণ বেডরুমে আলো কমিয়ে রাখুন। এর ফলে আলো নিভিয়ে ঘুমাতে গেলে ঘুম ভালো হবে।
• ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ খাবার ঘুমের জন্য বেশ কার্যকরী।
এ ধরনের পরিস্থিতিতে কী করবেন না
• অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন-সমৃদ্ধ খাবার (চা, কফি) এড়িয়ে চলুন। চিনি কম পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
• ঘুমানোর আগে টেলিভিশন, মোবাইল, ল্যাপটপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। পারলে এসব গ্যাজেট বেডরুমের বাইরে রাখুন।
• এক বিছানার চাদর বেশিদিন ব্যবহার করবেন না। অন্তত এক সপ্তাহ পরপর চাদর বদলে ফেলুন।
• রাত জেগে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
মানুষের ঘুম কেন কম হয়, তুর্গিস তাঁর গবেষনা থেকে কিছু কারণ উদঘাটন করেছেন :
৮৫.২ শতাংশ মানুষের রুমের তাপমাত্রা অতিরিক্ত গরম অথবা অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ার কারণে তাদের রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না।
৭১.৯ শতাংশ মানুষ সঙ্গীর কারণে রাতে ঘুমাতে পারেন না।
৬৮.৬ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দের কারণে কম ঘুমান।
৫২.৮ শতাংশ কম ঘুমের জন্য বেশি আলোকে দায়ী করেন।
৪০ শতাংশ বিছানার গদির সমস্যার কারণে ঘুমাতে পারেন না।
৩৫.৯ শতাংশ সন্তানের কারণে রাতে ঘুমাতে পারেন না।
১০.২ শতাংশ মানুষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঘুমাতে পারেন না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেবিস্তারিত পড়ুন
কমলা হ্যারিসের ভোটের প্রচারণায় বাজবে এ আর রহমানের গান
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসেরবিস্তারিত পড়ুন
উপদেষ্টা আদিলুর: পূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না
দুর্গাপূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেবিস্তারিত পড়ুন