মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

আইনে জর্জরিত দেশের ইট ভাটা

ইট ভাটা পরিবেশ দূষিত করে এটা যেমন সত্য ঠিক তেমনিভাবেই প্রায় সকল প্রকার নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রেই আমরা ইটের উপর নির্ভরশীল। তাই পরিবেশ সংরক্ষণ যেমন জরুরী, তেমনি ইটের প্রয়োজনীয়তাও অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু পরিবেশ দূষন রোধে একের পর এক করা ইট ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেশের অধিকাংশ ইট ভাটা। অন্যদিকে অনেক ব্যবসায়ীরাই পাচ্ছেন না নতুন ইট ভাটা স্থাপনের ছাড়পত্র।

ইট ভাটা মালিকদের দাবি, তারাও চান পরিবেশ দূষণ বন্ধ হোক। তারই ধারাবাহিকতায় তারা ১২০ ফুট চিমনী ও পরবর্তিতে ‘জিগজাগ’ ভাটা স্থাপন করেছে। এবং তারা আরো উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারে ইচ্ছুক। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যমান ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইনের কারনে বন্ধ হতে বসেছে অধিকাংশ ইট ভাটা। ফলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের নির্মান শিল্প।

পরিবেশ রক্ষার্থে ১৯৮৯ সালে ইট ভাটার লাইসেন্স প্রদানের বিধান করে লাকড়ী পোড়ানো বন্ধ করা হয়। ১৯৯২ সালে জেলা প্রশাসন থেকে ইট পোড়ানো লাইসেন্স গ্রহন, লাকড়ী পোড়ানো বন্ধ ও জেল-জরিমানার বিধান করা হয়। ২০০১ সালে আইন জারী করে উপজেলা সদর থেকে ৩ কিঃ মিঃ এর মধ্যে, ঘরবাড়ি, বনজ-ফলদ বাগান ইত্যাদি হতে ১ কিঃ মিঃ এর মধ্যে ইট ভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও এসব আইন অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয়নি।

২০০২ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয় একটি পরিপত্র জারী করে ইট ভাটায় ১২০ ফুট উচ্চতার স্থায়ী চিমনী কিল্ন স্থাপনের নির্দেশ প্রদান করা হলে ভাটা মালিকগণ ২০০৩ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে ৩০-৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চিমনী কিল্ন স্থাপন করেন। তবে ২০০১ সালের আইন বিদ্যমান থাকায় ইট ভাটা স্থাপনে দেখা দেয় নানা জটিলতা। তাই ২০০১ সালের আইন সংশোধনের আবেদন জানান ইট ভাটা মালিকরা।

২০১৩ সালে ভাটা মালিকদের প্রস্তাব উপেক্ষা করে “ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩” জারী করা হয়, ভাটা মালিকদের হতাশ করে। উক্ত আইনের ‘কতিপয় স্থানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধকরণ ও নিয়ন্ত্রণ’ শিরোনামে আট-এর এক (১) ধারায় বলা হয়, আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ছাড়পত্র থাকুক বা না থাকুক, এই আইন কার্যকর হইবার পর নিম্নবর্ণিত এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে কোন ব্যক্তি কোন ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না, যথাঃ-

(ক) আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা;
(খ) সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর;
(গ) সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি;
(ঘ) কৃষি জমি;
(ঙ) পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা;
(চ) ডিগ্রেডেড এয়ার শেড।

(২) এই আইন কার্যকর হইবার পর, নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার অভ্যন্তরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কোন আইনের অধীন কোনরূপ অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স, যে নামেই অভিহিত হউক, প্রদান করিতে পারিবে না।
(৩) পরিবেশ অধিদপ্তর হইতে ছাড়পত্র গ্রহণকারী কোন ব্যক্তি নিম্নবর্ণিত দূরত্বে বা স্থানে ইটভাটা স্থাপন করিতে পারিবেন না, যথাঃ—
(ক) নিষিদ্ধ এলাকার সীমারেখা হইতে ন্যূনতম ১ (এক) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে;
(খ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীত, সরকারি বনাঞ্চলের সীমারেখা হইতে ২ (দুই) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে;
(গ) কোন পাহাড় বা টিলার উপরিভাগে বা ঢালে বা তৎসংলগ্ন সমতলে কোন ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে উক্ত পাহাড় বা টিলার পাদদেশ হইতে কমপক্ষে ১/২(অর্ধ) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে;
(ঘ) পার্বত্য জেলায় ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে, পার্বত্য জেলার পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থানে;
(ঙ) বিশেষ কোন স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বা অনুরূপ কোন স্থান বা প্রতিষ্ঠান হইতে কমপক্ষে ১ (এক) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে; এবং
(চ) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত উপজেলা বা ইউনিয়ন বা গ্রামীণ সড়ক হইতে কমপক্ষে ১/২ (অর্ধ) কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে।
(৪) এই ধারা কার্যকর হইবার পূর্বে, ছাড়পত্র গ্রহণকারী কোন ব্যক্তি যদি নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে বা উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত দূরত্বের মধ্যে বা স্থানে ইটভাটা স্থাপন করিয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনি, এই আইন কার্যকর হইবার ২ (দুই) বৎসর সময়সীমার মধ্যে, উক্ত ইটভাটা, এই আইনের বিধানাবলি অনুসারে, যথাস্থানে স্থানান্তর করিবেন, অন্যথায় তাহার লাইসেন্স বাতিল হইয়া যাইবে।

তবে “ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩” তে উল্লেখিত ইট ভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ স্থান বাদে ইট ভাটা করার মত স্থান দেশে নেই বললেই চলে। ভাটা মালিকদের প্রশ্ন, গ্রামীন এলাকার কোথায় এক (১) কিঃ মিঃ এর মধ্যে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, রাস্তা-ঘাট নেই? তাই তারা অতি দ্রুত “ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩” সংশোধনের দাবি জানান।

বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বাবুল বলেন,‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩’ জারি করে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটার স্বীকৃতি প্রযুক্তি নির্ধারণ করা হয়। ফলে ইট ভাটা মালিকরা স্বীকৃতি প্রযুক্তি অনুসারে পরিবেশবান্ধব জিগজ্যাগ পদ্ধতিতে ভাটা স্থাপন শুরু করেন। তবে আইনে ইল্লেখিত ইট ভাটা স্থাপনের নিষিদ্ধ জায়গার কারণে জিগজ্যাগ ভাটারও ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, বায়ু দূষণের জন্য শিল্প কারখানা, যানবাহন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে ইট ভাটাও দ্বায়ী। ফলে প্রায়ই আইন প্রয়োগ করে ইট ভাটা মালিকদের জেল জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে ভ্যাট, ট্যাক্স দেওয়ার পরও ইট ভাটা ভাঙা হচ্ছে। প্রতিটি ইট ভাটা থেকে প্রায় সাড়ে চার থেকে নয় লাখ টাকা নেওয়া হয়। সরকার জিগজ্যাগ ভাটা বৈধ করে দিয়েছে। কিন্তু আবার লাইসেন্স দিচ্ছে না।

২০১৩ সালের আইন অনুযায়ী দেশের কোথাও ইটভাটা নির্মাণ করা সম্ভব না দাবি করে তিনি বলেন,আমরা যেখানেই ইটভাটা নির্মাণ করি তা কোনো না কোনো নিষিদ্ধ স্থানে পড়ে। যেহেতু নির্মাণ কাজের সবস্তরে ইটের চাহিদা রয়েছে তাই তিনি দ্রুত এ আইন বাতিলের দাবি জানান।

ব্যবসায়ীদের দেশের চালিকা শক্তি উল্লেখ করে মিজানুর রহমান জানান, সারাদেশে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ ইট ভাটা আছ্ যেখানে প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক কর্মরত। এসব ইট ভাটা থেকে সরকার প্রতি বছর ৩০০ কোটি টাকা ভ্যাট ও ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব পায় যা দেশের জিডিপির ১ (এক) ভাগ অবদান রাখে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশের ইটভাটার সংখ্যা ৬ হাজার ৯৩০টি। এবং বছরে দেশে ইটের চাহিদা দেড় হাজার কোটি পিস। ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশে ২ থেকে ৩ শতাংশ হারে ইটের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশ দূষণ কমিয়ে ইটের চাহিদা পূরনের জন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে ইট তৈরিতে মাটির ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ড. ইউনূস: নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এবার দুর্গাপূজারবিস্তারিত পড়ুন

সোমবারের বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার

এক কোটিরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করেনবিস্তারিত পড়ুন

১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৬৪ কোটি ডলার

এ মাসের প্রথম ১৪ দিনে এসেছে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখবিস্তারিত পড়ুন

  • বিশ্ব অর্থনীতির তালিকায় জাপানকে ছাড়িয়ে গেল রাশিয়া
  • ডাক ও টেলিযোগাযোগ খাতে এডিপি বাস্তবায়ন শতভাগ
  • এডিবি ২৫ কোটি ডলার ঋণ দেবে সামাজিক নিরাপত্তায়  
  • ত্রিভুজ ক্ষমতাকাঠামোর অধীনে প্রণীত ত্রিশঙ্কু বাজেট
  • ট্রেজারি বন্ড রি-ইস্যুর নিলাম মঙ্গলবার
  • নিজ ভূমি অধিকার সুনিশ্চিত করলে তা জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়ক হয় : ভূমিমন্ত্রী
  • বছরের শেষের দিকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে: অর্থমন্ত্রী
  • এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪১ শতাংশ
  • ‘মুক্ত বিনিয়োগ নীতি গ্ৰহনে পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর সুযোগ রয়েছে’
  • বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি খলীকুজ্জমান, সম্পাদক আইনুল
  • নীতি সহায়তা যুক্ত হচ্ছে রফতানিতে
  • দেশের রিজার্ভ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলার