আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা
আওয়ামী লীগ আমাদের দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ তাদের ২০তম জাতীয় সম্মেলন করছে। আওয়ামী লীগ জন্মের পর একসময় ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ তারপর সেটা পরিবর্তিত হয়ে আওয়ামী লীগ হয়েছিল এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর নানা সংকটের ভেতর দিয়ে তারা গিয়েছে, এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে জঘন্য ঘটনা ঘটে যায় এবং তারপর আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসে এবং বর্তমান সময় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে যে চার মূলনীতিকে সামনে রেখে সংবিধান রচনা হয়েছিল সেটা আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র এবং ঘোষণাপত্রেও ছিল। এখন এটির বাস্তবায়ন করাটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার অন্যতম কাজ।
আমরা আশা করব, আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলনে এই চার মূলনীতি অর্থাৎ ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, এবং সমাজতন্ত্র- এই জায়গাগুলো তাঁরা বিশ্লেষণ করবেন। আমরা এটাও আশা করব, বাংলাদেশে চলমান যে দুর্নীতি চলছে, স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতা চলছে তার বিরুদ্ধে একটা জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি বিষয়েও আলোচনা হবে। সুতরাং আওয়ামী লীগের কাউন্সিল এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠায় একটা ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। বন্ধুপ্রতিম রাজনৈতিক দল হিসেবে এই প্রত্যাশাটা আমি করতে চাই। কিন্তু জানি না বাস্তবতা কী দাঁড়াবে।
আমরা এটুকু আশা করতে চাই, যেহেতু তারা কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে থাকে, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রসর হলাম সেটাই মূল্যায়ন করতে হবে। আর একটা বিষয়ও আমি এই সম্মেলনকে সামনে রেখে দৃষ্টি আর্কষণ করতে চাই, সেটি হলো আমরা মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সংগ্রাম করেছিলাম তার অন্যতম একটা কারণ ছিল শোষণ। আমাদের পূর্ব পাকিস্তানের উৎপাদিত পণ্য পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যেত এবং সেটি তারা ভোগ করত। আমাদের অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যই পূর্ব পাকিস্তানে বিক্রি হতো বেশি দামে, আর পশ্চিম পাকিস্তানে সেই একই পণ্য বিক্রি হতো কম দামে। এখানে অর্থনৈতিক বৈষম্য গড়ে উঠেছিল।
আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি দেখলে দেখবেন তারাও ওই ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার অঙ্গীকার করেছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন দেশ দুই ভাগে বিভক্ত : শোষক এবং শোষিত, আমি শোষিতদের দলে। কিন্তু সম্প্রতিকালে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয় তারা প্রধানত বাংলাদেশের বড়লোকদের পক্ষে অবস্থান করছে। সুতরাং এই কাউন্সিলে এটাও তাদের মূল্যায়নের ব্যাপার, যে তারা কাদের পক্ষ হয়ে দায়িত্ব পালন করবে। আমরা আশা করব, তারা সেই সাধারণ মানুষের পক্ষে দায়িত্ব পালন করার সিদ্ধান্তগুলো কাউন্সিলে গ্রহণ করবে। আওয়ামী লীগের কাছে অনেক বেশি প্রত্যাশা হয়তো নেই, কিন্তু এইটুকু প্রত্যাশা অন্তত পক্ষে আমরা তাদের কাছে করতে পারি।
লেখক : কেন্দ্রীয় নেতা, সিপিবি
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো
লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন
আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা
“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন
বাবা যখন ধর্ষক
যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন