এক ঐতিহাসিক রায় বাংলাদেশের ইতিহাসে : খাদিজার আইনজীবি
পড়া লেখা করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পথ চলা কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস। তার স্বপ্নকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার হত্যাচেষ্টা করেছিল সিলেটের বদরুল। আজ সেই হত্যাচেষ্টা মামলার রায় হয়েছে। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ রায় ঐতিহাসিক।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আজকের এই রায় বাংলাদেশে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বুধবার খাদিজা হত্যাচেষ্টার একমাত্র আসামী বদরুলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
দুপুর ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা।
মামলার রায়ে একই সঙ্গে বদরুলকে আরো পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই মাস জরিমানা করেন আদালত।
মামলায় আসামীপক্ষ বদরুলের আইনজীবী হিসেবে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী এবং আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ খাদিজার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
আদালত দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন বিচারক।
রায়কে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ১০টার দিকে এই মামলার একমাত্র আসামী বদরুলকে আদালতে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের স্নাতক শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস। খাদিজাকে কোপানোর দায়ে ঘটনাস্থল থেকে জনতা শাহজালাল বিশ্ববদ্যিালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
বদরুলের চাপাতির আঘাতে খাদিজার মাথার খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কও জখম হয়। খাদিজাকে কোপানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
হামলার পর প্রথমে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ও পরে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় খাদিজাকে। সেখানে ৪ অক্টোবর বিকালে অস্ত্রোপচার করে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় খাদিজাকে। পরে ১৩ অক্টোবর তার লাইফ সাপোর্ট খোলার পর ‘মাসল চেইন’ কেটে যাওয়া তার ডান হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক সাড়া না দেওয়ায় চিকিৎসার জন্য স্কয়ার থেকে সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয়। সিআরপিতে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ফেরেন কলেজছাত্রী খাদিজা।
এদিকে, ঘটনার পরদিন খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৩০৭, ৩২৪ ও ৩২৬ ধারায় শাহপরান থানায় বদরুলকে একমাত্র আসামী করে মামলা করেন। ওইদিনই বদরুলকে বহিস্কার করে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৫ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বদরুল। ৮ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর শাহপরান থানার এসআই হারুনুর রশীদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ১৫ নভেম্বর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২৯ নভেম্বর আদালত বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন খাদিজা। এরমাধ্যমে মামলার ৩৬ সাক্ষীর ৩৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে ও খাদিজা সিলেট সদর উপজেলার আউশা গ্রামের মাসুক মিয়ার মেয়ে।
নারী দিবসে দেয়া রায়ে ন্যায়বিচার পেয়েছেন খাদিজা আর নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই রায়- এমনটাই আশা করছেন খাদিজার স্বজনসহ সচেতন মহল।
‘ফাঁসি হলোনা!‘ কি কোপইনা দিলো মেয়েটারে!’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
গাজায় মানবিক কনভয়ে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ
ফিলিস্তিনের গাজায় বেসামরিক সহায়তার জন্য পাঠানো জর্দানের মানবিক ত্রাণবাহী একটিবিস্তারিত পড়ুন
ভয়ংকর প্রতারণা সানভিস বাই তনি’র
রোবাইয়াত ফাতেমা তনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচিত মুখ । রাজধানীতে বেশবিস্তারিত পড়ুন
কাউন্সিলর ও তার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
পারিবারিক বিরোধপূর্ণ মার্কেট লিখে নিতে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে নারায়নগঞ্জবিস্তারিত পড়ুন