এবারও লোকসান লবণ চাষে
মহেশখালীতে লবণ চাষের মন্দা কাটছে না। বৈরী আবহাওয়া ও ন্যায্য দাম না পেয়ে তিন মৌসুম ধরে লোকসান দিয়েই চলেছেন চাষিরা। এবারও লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেননি তাঁরা। ফলে অনেকে লবণ চাষ ছেড়ে দিয়েছেন।
কক্সবাজার বিসিকের লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে লবণ মৌসুম শুরু হলেও লবণের দাম না থাকায় লোকসানের ভয়ে অনেক চাষি যথাসময়ে মাঠে নামেননি। এ কারণে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পুরোদমে লবণ চাষ শুরু হয়। তবে এবার মহেশখালীর কালারমারছড়া, হোয়ানক ও মাতারবাড়ীতে অন্তত এক হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হয়নি।
চাষিরা জানান, সবদিক দিয়েই লোকসানে আছেন তাঁরা। আগে এক কানি (৪০ শতাংশ) জমি লগিয়ত ছিল ১০–১২ হাজার টাকা, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র চার–পাঁচ হাজার টাকায়। এরপরও চাষিরা লবণ চাষে নামেন। কিন্তু এবার খরচই ওঠেনি। মাঠ থেকে লবণ উৎপাদন করতে খরচ হয় প্রতি মণে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। অথচ মৌসুমের শুরুতে লবণ বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ পলিথিনে তৈরি সাদা লবণ ১৩০ টাকায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ও ১৬ জানুয়ারি দুই দফা এবং এ বছরের ৩১ মার্চ ও ৪ এপ্রিল দুই দফা বৃষ্টি হওয়ায় লবণ উৎপাদন ব্যাহত হয়। এরপর ২৭ এপ্রিল আবারও বৃষ্টি হয়। ফলে আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় লক্ষ্য অনুযায়ী লবণ উৎপাদন করতে না পেরে চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েন।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলার লবণচাষি নুর কাদের ও নুরুল আলম জানান, আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় এবার লবণ মৌসুমে বাম্পার উৎপাদন হয়নি। তবে এক মাস ধরে লবণের দাম বেড়েছে। কিন্তু এর আগেই অনেকে লবণ বিক্রি করে দিয়েছেন। তা ছাড়া উৎপাদন কম হওয়ায় লবণের বাড়তি দামের সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় চাষিরা। ফলে এই এলাকার অন্তত ১০ হাজার লবণচাষিকে এবারের লবণ মৌসুমে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মাতারবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজঘাটের লবণ ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম বলেন, শুরুর দিকে লবণের দাম ছিল কম। তার ওপর উৎপাদনও কম হয়েছে। এক মাস ধরে প্রতি মণ পলিথিন দিয়ে তৈরি সাদা লবণ ১৩০ টাকার স্থলে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছর সাদা লবণ বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার নিচে।
কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলীর লবণ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলম বলেন, একজন লবণচাষির ৮০ শতক জমিতে লবণ চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭৪ হাজার টাকা।
কিন্তু সেই চাষি লবণ বিক্রি করে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা। ফলে প্রতি কানিতে চাষিকে ১২ হাজার টাকা করে লোকসান গুনতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘চাষিকে আগাম টাকা দিয়ে আমি নিজেই ১০০ একর জমিতে লবণ চাষ করেছিলাম। কিন্তু লবণের উৎপাদন ভালো না হওয়ায় আমাকে ১০–১২ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে কক্সবাজার বিসিকের লবণ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্প কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার ও বাঁশখালী এলাকা মিলে ৫২ হাজার একর জমিতে লবণ চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পরিশোধিত লবণ ১৮ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু তার স্থলে লবণ উৎপাদন হয়েছে ১৩ লাখ মেট্রিক টন। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় এবার লবণের বাম্পার উৎপাদন তো দূরের কথা, লক্ষ্যমাত্রা পর্যন্ত অর্জিত হয়নি। তা ছাড়া গতবারের লোকসানের ভয়ে অনেকেই মাঠে নামেননি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে ভয়াবহ বন্যায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
কুড়িগ্রামে টানা ৬ দিন বন্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মানুষজনবিস্তারিত পড়ুন
চালু হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাট
প্রায় সাড়ে চার বছর পর আগামী ২৯ জুলাই থেকে চালুবিস্তারিত পড়ুন
রায়পুরায় বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
‘আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে, ঘরের ছেলে ঘরেবিস্তারিত পড়ুন