এ কেমন চিকিৎসা
নবজাতক শিশুটির বয়স মাত্র তিন দিন। এখনো নামটা পর্যন্ত রাখা হয়নি। কিন্তু জন্মের পরপরই নির্মম ভুল চিকিৎসার শিকার সে। জন্মের পর পৃথিবীর আলো দেখেছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমাস্থ নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। কিন্তু এই হাসপাতালের চিকিৎসকরাই শিশুটিকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
শিশুটি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের চকাপন গ্রামের জুয়েল আহমদের ছেলে। বেসরকারি নর্থ ইস্ট হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলা আর ভুলের কারণে শিশুটি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে।
শিশুর স্বজনরা জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শিশুর মা নার্গিস বেগমকে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়।
২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাসপাতালের পঞ্চমতলার ৫২১ নম্বর কেবিনে থাকা শিশুকে একজন সেবিকা ইঞ্জেকশন দেন। এরপরই শিশুটির পুরো শরীর কালো হয়ে যায়। পরে তার নাকে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দেয়া হয়।
শিশুটির শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেখে চিকিৎসকরা তাকে নিয়ে যান হাসপাতালের অষ্টম তলার শিশু বিভাগে। সেখানে তার শরীরে ৩০ মিনিট ওয়ারমার দিয়ে গরম তাপ (হিট) দেয়া হয়। আর এতে তার ডান পা, পায়ের আঙুল ও গোপনাঙ্গসহ শরীরের অর্ধেকাংশ পুড়ে যায়।
তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তিন দিন আগে সিজার হওয়া মা নার্গিস বেগম আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শিশুর জন্য তিনি আর্তনাদ করছেন। এ ঘটনা ভুল চিকিৎসার জন্যই ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন নার্গিস বেগম।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে কোনো ভুল চিকিৎসা হয়নি, তারপরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
শিশুর বাবা জুয়েল আহমদ জানান, তিনি একজন মাদরাসা শিক্ষক। সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সংবাদ প্রকাশ হলে আমার ছেলের ভালো চিকিৎসা নাও হতে পারে।
তিনি জানান, যখন তার ছেলেকে গরম তাপ (হিট) দেয়া হয় তখন তিনি সেবিকাকে বলেছিলেন, এটি অনেক গরম, খুলে ফেলুন। কিন্তু দায়িত্বরত সেবিকা তার কথা শোনেননি। সেবিকা তাকে জবাবে বলেন, ডাক্তার বলেছেন ৩০ মিনিটই গরম তাপ দেয়া হবে।
জুয়েল বলেন, ওই তাপেই আমার ছেলে পুড়ে গেছে।
কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশুর মা নার্গিস বেগম বলেন, এখন আগের চেয়ে একটু ভালো মনে হচ্ছে ছেলেকে। ঘটনার পর থেকে চিকিৎসকরা তার ছেলেকে গুরুত্ব দিয়ে সেবা করছেন। তবে ছেলেকে নিয়ে তার দুশ্চিন্তা কাটছে না।
বেসরকারি এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএনপি নেতা ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, হাসপাতালের সামর্থ্য ছিল বলেই শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। শিশুটির ক্ষেত্রে যে চিকিৎসা প্রয়োজন ছিল, তাই দেয়া হয়েছে। শিশুটি এখন আগের চেয়ে সুস্থ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ঘটনায় সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মীর মহবুবুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন তিনি নিজে দেখেছেন জানিয়ে বলেন, শিশুকে বাঁচাতে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সিলেটে বন্যার উন্নতি হলেও পিছু ছাড়ছে না দুর্ভোগ
পানি কমতে শুরু করায় সিলেটের আট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটাবিস্তারিত পড়ুন
সিলেটে দোকানে দোকানে পানি, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম। বন্যার কারণে তারবিস্তারিত পড়ুন
সিলেটে মৃদু ভূমিকম্প
সিলেটে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর পরিমাণ ছিলবিস্তারিত পড়ুন