রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

কিসের কারণে বুকে ব্যথা, কীভাবে বুঝবেন?

বিভিন্ন কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। সব সময় যে ব্যথা হৃৎপিণ্ডের কারণেই হয় সেটি নয়। তবে হৃৎপিণ্ডের কারণে বুকে ব্যথা হলে কিছু ভিন্ন রকম লক্ষণ প্রকাশ পায়। আজ ১৫ ডিসেম্বর আমাদের স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২২৩৬তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শফিউদ্দিন।

প্রশ্ন : জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বুকের ব্যথা হয়নি, এমন কোনো মানুষ হয়তো নেই। বুকের ব্যথার প্রধান কারণগুলো কী?

উত্তর : বুকের ব্যথা সব সময় যে খুব জটিলতার কারণেই হয় সেটি না। বুকের আশপাশেও ব্যথা হয়। রোগীরা সেটাকেও মনে করে বুকেরই ব্যথা। এর ভেতরে প্রচলিত একটি রোগ হলো পেপটিক আলসার। এটা থেকে কেবল পেটেই ব্যথা হয় না, বুকেও ব্যথা হয়। আর আসলে এখন হৃদরোগ খুবই প্রচলিত একটি বিষয়। হার্টের কারণেও বুকে ব্যথা হয়। হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। অ্যাটাক না হয়েও ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া ফুসফুসের কারণেও সেটা হতে পারে। সাধারণ ঠান্ডা, কাশি- এগুলো থেকে হতে পারে, নিউমোনিয়া থেকে হতে পারে, আবার যদি পিত্তথলিতে পাথর হয় সেখান থেকেও বুকে ব্যথা হতে পারে। বুকের পেশির ব্যথার কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। বুকে ব্যথার প্রচলিত আরেকটি কারণ হলো উদ্বেগ। অনেক সময় দেখা যায় দুশ্চিন্তা থেকেও বুকে ব্যথা হচ্ছে।

ডা. মো. শফিউদ্দিন।

প্রশ্ন : হার্টের সমস্যার কারণে বুকে ব্যথা হচ্ছে কি না সেটি বোঝার কি কোনো উপায় রয়েছে? এর ধরনটা কী হতে পারে?

উত্তর : হার্টের সমস্যায় ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে, নাও হতে পারে। আমরা একটি বিষয় বলি, এনজাইনা পেকটোরিস। এই সমস্যা হলে বুকে ভারভার লাগবে। বুক চেপে আসবে। মনে হয় দমটা বন্ধ হয়ে আসছে। একমাত্র তীব্র বুকে ব্যথা তখনই হয় যখন তার হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়। অ্যাটাক হলে আমরা বলি আনস্টেবল এনজাইনা বা একিউট ইমো। তখনই তীব্রভাবে বুকে ব্যথা হয়; ঘাম হয়, বমি হয়, রক্তচাপ অনেক সময় কমে যায়। এ ছাড়া সাধারণত অ্যাটাক হওয়ার আগ পর্যন্ত বুকে ব্যথা, বুকে ভার ভার লাগা, দম বন্ধ হয়ে আসা, চেপে আসা- এগুলো হয়। বিশেষ করে যখন সে একটু পরিশ্রম করে। সিঁড়ি দিয়ে হয়তো ওপরে উঠছে, জোরে হাঁটছে, তখন বুকে ব্যথা হয়।

প্রশ্ন : এ রকম অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে করণীয় কী?

উত্তর : যদি ব্যথার তীব্রতা বেশি হয় বা ধরনটা এমনই হয় বুক একটু চেপে আসে, ব্যথাটা তার চোয়ালের দিকে বা হাতে যায় তখন দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। আজকাল অনেক রোগী আসে তারা জিজ্ঞেস করে, ‘বুকে ব্যথাটা হাতেও ছড়িয়ে পড়ছে, এটা কি হার্টের সমস্যা কি না?’ আজকাল রোগীরাও এই বিষয়ে খুব সচেতন। এ রকম ব্যথা হলে আমি মনে করি, প্রথমেই তাকে যেকোনো চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। বুঝতে হবে এটা কি সাধারণ ব্যথা, নাকি হার্টের কোনো সমস্যা। চিকিৎসকের তখন দায়িত্ব হবে ইতিহাস নেওয়া। এরপর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, ইসিজি, ইকো, ইটিটি, এনজিওগ্রাম আছে- এগুলো করা। প্রাথমিকভাবে আমরা ইসিজি করে দেখি তার কোনো ধরনের অ্যাটাক হয়েছে কি না। যদি ইসিজি করা হয়, সেখানে যদি হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে, তাহলে তখনই ধরা পড়ে। ইসিজির মধ্যে বোঝা যায় তখনই হার্ট অ্যাটাক হলো কি না।

আর অনেক সময় দেখা যায় ইসিজি স্বাভাবিক। কিছুই আসেনি, তবে ব্যথাটা হার্টেরই। এ জন্য যদি সন্দেহ হয়, অ্যাটাক হয়নি ঠিকই, তবে ব্যথাটা হার্টেরই, তখন আমরা আরো পরীক্ষায় যাব। অর্থাৎ ইকো এবং ইটিটি এগুলো করব। আমরা বলি, এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট বা ট্রেডমিল টেস্ট; ওই মেশিনের ওপর যখন আমরা কিছুক্ষণ রোগীকে হাঁটাই সেই অবস্থায় যে ইসিজি করা হয় সেটাকে বলে ইটিটি।

প্রশ্ন : সমস্যাটি বোঝার পরে আপনারা কী ব্যবস্থা নেন?

উত্তর : হার্টের ব্লকের কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। হার্টের ভাল্ভ চেপে যাওয়ার কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। অথবা ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ হলেও এটা হতে পারে। তখন তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ওষুধ রয়েছে, অ্যাসপিরিন, নাইট্রেট- এ ধরনের কিছু ওষুধ দিই। রোগীর যখন তীব্র ব্যথা হয় তখন সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করে ফেলি। তখন আর রোগীকে আমরা বাসায় রেখে চিকিৎসা করি না। তাকে ভর্তি করে সেখানে আমরা অক্সিজেন দিই। হার্ট অ্যাটাক হলে রক্তনালিটা চর্বি জমে ব্লক হয়ে যায়। ব্লক হওয়াটাকে লাঘব করার জন্য শক্ত কিছু ব্যথানাশক ওষুধ রয়েছে, যেমন মরফিন, পেথিডিন ইত্যাদি। এ ধরনের ওষুধ দিয়ে ব্যথাকে কমিয়ে দিই। কিছু জটিলতা আছে যার কারণে তার রক্তচাপ কমে যায় সেগুলোর চিকিৎসা করি। পরবর্তীকালে তাকে এনজিওগ্রাম করে দেখি কোথায় সমস্যা হলো। সেই অনুযায়ী তাকে আমরা এনজিওপ্লাস্টি বা রিং লাগানো- এগুলো করি।

প্রশ্ন : এনজিওগ্রাম চিকিৎসার ক্ষেত্রে কতখানি ভূমিকা পালন করে?

উত্তর : এনজিওগ্রাম তো খুবই সহজ পদ্ধতি। ধরেন, ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে আমরা করি। আসলে এটা ভয়ের কোনো ব্যাপার নয়। এর জন্য রোগীকে রক্তনালির ভেতরে আমরা স্যালাইন দিই। ঠিক সে রকম পায়েরও একটি রক্তনালিতে করি। সেখানে একটি স্যালাইনের মতো একটি লাইন তৈরি করি। সেখানে একটি চিকন টিউব দিয়ে আমরা দেখি তার হার্টের রক্তনালি কোথায় ব্লক রয়েছে। এটি আমরা চোখের দৃষ্টি দিয়ে বুঝি। পাশাপাশি হিসাব করার জন্য যন্ত্রও আছে। সেই ব্লক অনুযায়ী আমরা এর পরবর্তী চিকিৎসা পদ্ধতি কী হবে সেটা ঠিক করি- এটা কি এনজিওপ্লাস্টি করে দিলে ভালো হবে, নাকি তার ওপেনহার্ট সার্জারি করতে হবে, নাকি তাকে সার্জনের কাছে রেফার করা লাগবে- ওই এনজিওগ্রামের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি।

প্রশ্ন : পরবর্তীকালে যখন এনজিওপ্লাস্টি করেন বা বাইপাস সার্জারি করেন, এরপর রোগীদের বিষয়ে পরামর্শ কী থাকে?

উত্তর : বাইপাস করা হোক বা এনজিওপ্লাস্টি রোগীকে পরবর্তীকালে সার্জনরা আর তাদের কাছে রাখেন না। আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। এ পর্যায়ে রোগীকে কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হবে। যেমন অ্যাসপিরিন, চর্বি কমিয়ে রাখার জন্য ওষুধ, কোলেস্টেরল কমিয়ে রাখার জন্য ওষুধ লাগবে সারা জীবন। তারপর যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদের এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা লাগবে। কিছু ওষুধ তার সারা জীবন লাগবে। তাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো যে কারণে তার এই অসুখ হয়েছে সেটি যেন আর না হয়। তার যদি ধূমপান করার অভ্যাস থাকে, সেটি বাদ দেবে। উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। যদি ওজন বেশি হয় সেটি কমিয়ে নিয়ে আসবে, নিয়মিত হাঁটবে, যাতে তার আর এ রকম ব্লক না হয়।

প্রশ্ন : তারপরও হঠাৎ করে যদি বুকে ব্যথা শুরু হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে তার প্রতি আপনার পরামর্শ কী থাকবে?

উত্তর : এসব নিয়ম মানার পর যদি তার আবার বুকে ব্যথা হয়, যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছে তার সঙ্গে সে যোগাযোগ করবে। দেখতে হবে দ্বিতীয়বার আবার কোনো অ্যাটাক হলো কি না বা ব্লক হলো কি না। এটা হতে পারে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ

চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন

ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে

আমাদের রান্নাঘরে খাবার তৈরির অনেক পণ্য  থাকে। সেই সবে এমনবিস্তারিত পড়ুন

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন

রসুন আমাদের প্রতিদিনের রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শুধুমাত্র খাবারের স্বাদবিস্তারিত পড়ুন

  • ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে সহজ করবে : খাদ্য সচিব
  • বিশ্বের শক্তিশালী এমআরআই মেশিনে মস্তিষ্কের প্রথম চিত্র প্রকাশ
  • H5N1 ভাইরাস ছড়াচ্ছে, কোভিডের চাইতে 100 গুণ বেশি বিপজ্জনক
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • তরমুজ খেলে কি সত্যিই ওজন কমে?
  • টিউমার অপারেশনের সময় নাড়ি কাটলেন চিকিৎসক
  • পরোক্ষ ধূমপান থে‌কে নারী‌দের সুরক্ষা চায় ‘নারী মৈত্রী’
  • বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে ৩০০০ শিশু
  • আপনি মানসিক রোগী কিনা বুঝবেন কিভাবে?
  • শীত হোক বা গ্রীষ্ম—সারা বছরেই পায়ে দুর্গন্ধ ?
  • রেফ্রিজারেটর খুললেই নাকে হাত, বাজে গন্ধ ?