চুয়াডাঙ্গায় স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকসহ পাঁচজন মিলে পরিকল্পিতভাবে স্বামীকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার রাতে জেলা শহরের সাদেক আলী মল্লিক পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। তবে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শেষ পর্যন্ত হত্যার কথা স্বীকার করেছেন স্ত্রী জেসমিন খাতুন।

এ ঘটনায় নিহত রাসেল হক রাজার স্ত্রী জেসমিনসহ শাশুড়ী ও শ্যালিকাকে আটক করেছে পুলিশ। তবে জেসমিনের পরকীয়া প্রেমিক ও তার এক বন্ধু পালিয়ে গেছেন।

জানা গেছে, সাদেক আলী মল্লিক পাড়ার মোজাম্মেল হকের ছেলের রাসেল হক রাজার সঙ্গে প্রায় ১৭ বছর আগে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী পলাশপাড়ার শহিদুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন খাতুনের। সংসার জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

সম্প্রতি জেসমিন তার বড় বোন ঢাকায় বসবাসরত ময়না খাতুনের দেবর বাবুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক জড়ান। মোবাইলে রেকর্ড করা তাদের আপত্তিকর কথোপকথন শোনেন স্বামী রাজা।

বিষয়টি জেসমিন জানতে পেরে পরকীয়া প্রেমিক বাবুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাজাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। শনিবার রাজা একাই বাড়িতে ছিলেন। এই সুযোগে তাকে হত্যা করা হয়।

এদিকে জেসমিন প্রচার করতে থাকেন তার স্বামী রাজা আত্মহত্যা করেছে। রাতেই সদর থানা পুলিশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় রাজার লাশ উদ্ধার করে।

রোববার সকালে লাশের সুরোতহাল রিপোর্ট করতে গিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জেসমিন পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

এদিকে দুপুরে রাজার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তার এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। একই দাবিতে তারা থানায় অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাদেরকে বুঝিয়ে শান্ত করে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (অপারেশন) আমির আব্বাস জানান, শনিবার সন্ধ্যায় পরিকল্পনা মাফিক পাঁচজন মিলে রাজাকে হত্যা করেছে। তারা রাজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে টাঙিয়ে রাখে।

তিনি জানান, হত্যাকারী স্ত্রী জেসমিন খাতুন, শাশুড়ি জবেদা খাতুন ও শ্যালিকা নাসরিনকে আটক করা হয়েছে। পরকীয়া প্রেমিক বাবু ও বাবুর এক অজ্ঞাতনামা বন্ধু সটকে পড়েছে। বাবুর বন্ধুর বিস্তারিত পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

নিহত রাজার বড় ভাই রাশেদ হক জানান, এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।