শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ছাত্রলীগের ‘ঝুলিতে’ আরেকটি লাশ

নির্বাচন কমিশন গঠনের পর আওয়ামী লীগের নেতারা আরও ফুরফুরে মেজাজে আছেন বলে মনে হচ্ছে। প্রতিদিনই তাঁরা বিএনপিকে নিয়ে কথা বলছেন। আগামী নির্বাচনে যে বিএনপির ভরাডুবি হবে, সেই ভবিষ্যদ্বাণী এখনই করে দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা যদি এতই পারদর্শী ভবিষ্যদ্বক্তা হন ও দুই বছর পরের নির্বাচনের ফল আগেভাগে জানতে পারেন, তাহলে গত শনিবার চট্টগ্রামে তাঁদেরই সহযোগী সংগঠন ‘শিক্ষা শান্তি ও প্রগতির’ পতাকাবাহী ছাত্রলীগ যে তাদের ঝুলিতে আরেকটি লাশ জমা করল, সেই তথ্যটি কেন আগাম জানাতে পারলেন না। তাঁরা আগেই সতর্ক হয়ে গেলে হয়তো ইয়াছিন আরাফাত নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীকে হোটেলে ভাত খাওয়ার সময় এভাবে নৃশংসতার বলি হতে হতো না।

প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, নিহত ইয়াছিন আরাফাত চট্টগ্রাম নগরের সরকারি সিটি কলেজে পড়তেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নে। একই ঘটনায় আহত হারুনুর রশিদও সিটি কলেজ থেকে স্নাতক (পাস কোর্স) করছেন। তাঁর সঙ্গেই ইয়াছিনের বিরোধ ছিল। এক সংগঠন করলে বিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু খুনোখুনির মাধ্যমে তা সুরাহা করার মানসিকতা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

সিটি কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর মতে, হামলার শিকার ও হামলায় অংশ নেওয়া যুবকেরা চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের উপসম্পাদক আবদুল আহাদের অনুসারী। হত্যাকাণ্ডের পেছনে কলেজে আধিপত্য বিস্তার, নাকি অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। মাদক ব্যবসাসংক্রান্ত বিরোধও এর পেছনে থাকতে পারে বলে পুলিশ ধারণা করছে।’

ঘটনা সম্পর্কে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূর মোহাম্মদ ও আহত হারুনুর রশিদের বক্তব্যে গরমিল রয়েছে। নূর মোহাম্মদ বলেছেন, ‘ভাতঘরে ইয়াছিন আরাফাতসহ আরও এক-দুজন ভাত খাচ্ছিলেন। এ সময় অপর পক্ষ সেখানে ইয়াছিনের ওপর হামলা করে। অন্যদিকে আহত হারুনুর রশিদের দাবি, ‘সকালে সিটি কলেজে ইয়াছিনের ছোট ভাইদের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া হয়। সেটা বড় ভাইয়েরা সেখানেই মিটিয়ে দেন। এরপর বিকেলে ইয়াছিন লোকজন নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা করেন। ওই সময় তাঁদের কারও ছুরিকাঘাতে ইয়াছিন মারা যেতে পারেন।’
ভাত খাওয়ার সময় সালাম দেওয়ারও রীতি নেই। কারণ, তাতে রিজিকের প্রতি অসম্মান জানানো হয়। আর সেই ভাত খাওয়ার সময়ই ছাত্রলীগের এক পক্ষ আরেক পক্ষের কর্মীকে খুন করল? কী নৃশংস ঘটনা।

এ ঘটনা বিশ্লেষণ করলে আমরা কী দেখতে পাই? দেখতে পাই, সামান্য বিরোধের জের ধরে ছাত্রলীগের কর্মীরাই এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা চালিয়ে একজনের জীবন কেড়ে নিতে পারে। আহত হারুনের বক্তব্য অনুযায়ী ইয়াছিন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ইয়াছিন নিহত হওয়ার আগে তিনি এ অভিযোগ পুলিশের কাছে কেন করলেন না? কেন তিনি সংগঠন থেকে তাঁকে বহিষ্কারের দাবি জানালেন না? কেন তিনি একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীর সঙ্গে একই সংগঠন ও গ্রুপে কাজ করতেন? চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, ইয়াছিন ও হারুন একসঙ্গেই থাকতেন। কিছুদিন আগে কোনো একটা বিষয়ে তাঁদের দ্বন্দ্ব হয়। শনিবার সকালে কলেজে তাঁদের ঝগড়া হয়। এ ঘটনার জের ধরে এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর চড়াও হয়।

সামান্য ঝগড়ার কারণে একজন ছাত্রকে মেরে ফেলতে হবে? এ কেমন ছাত্ররাজনীতি? শিক্ষাঙ্গনে এখন বিরোধী ছাত্রসংগঠনের কোনো তৎপরতা নেই। ছাত্রলীগ একাই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নিজেদের বিরুদ্ধে নিজেরাই লিপ্ত হচ্ছে। আর কিছুদিন পরপর খুনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। আগে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হতো। আর যারা জনপ্রিয়, তাদের মুকুটে একটি করে বিজয়ের মুকুট যুক্ত হতো। আর ছাত্রলীগ যুক্ত করছে একটি করে খুনের ঘটনা।
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন ইয়াছিনের বাবা কামাল উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘আমার ছেলে ছাত্রলীগ করত জানি। কিন্তু তাই বলে এভাবে কেন মেরে ফেলা হলো?’ ছাত্রলীগ করতে এসে কেবল ইয়াছিনের বাবাই সন্তান হারাননি। আরও অনেক মা-বাবার কোল খালি হয়েছে।

গত ২৬ মাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ও সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালেই প্রাণ হারান সাতজন। ২০১৬ সালে আটজন। গত বছরের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেট এলাকার নিজ বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক পক্ষের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দিয়াজকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করার জন্য লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।’

কয়েক মাস আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন ছাত্রলীগের বিরোধ মীমাংসা করতে। তিনি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে প্রাতরাশেও মিলিত হয়েছিলেন। এখন মনে হচ্ছে, প্রাতরাশটি কোনো কাজে লাগেনি।

আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপির জনপ্রিয়তা নিয়ে বেশি মাথা না ঘামিয়ে সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতি একটু নজর দিলে হয়তো সংগঠনটিতে উপদলীয় কোন্দল কমিয়ে আনা যেত। সন্তানকে ছাত্রলীগে পাঠিয়ে মা-বাবার কোলও খালি হতো না।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?