জন্মদিনের কেক কাটার সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক নেই
সূচনা লগ্নে ইসলামি আদর্শের অনুশীলন করি!? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের বাতলানো সব সুন্নতগুলো পালন করি! পরিতাপের বিষয়, আমরা অনেকেই তা করি না। এর কারণ, সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে আমাদের উদাসীনতা। তবে এটাও ঠিক যে, ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেকে না-জানার কারণে তা করতে সক্ষম হয় না।
আবার কেউ কেউ এ ক্ষেত্রে ইসলামি আদর্শ ত্যাগ করে বিধর্মী ও অমুসলিমদের অনুসরণ করে, অথচ তারা মুসলমান ! যেমন, জন্মদিন পালন, জন্মদিনের কেক কাটা ইত্যাদি, যা অত্যন্ত দুঃখ জনক। এর সঙ্গে নেই কোন ইসলামের সম্পর্ক।
*সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর..
১. সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে আল্লাহর প্রসংশা করা, তার শুকরিয়া আদায় করা ও সন্তানের জন্য দোয়া করা। পবিত্র কুরআনে ইবরাহিম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে এরশাদ হয়েছে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তিনি বলেন, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব দোআ শ্রবণকারী। হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দোআ কবুল করুন। (সূরা ইবরাহিম : ৩৯-৪১)
তদ্রুপ আত্মীয় ও শুভানুধ্যায়ীদের সুসংবাদ প্রদান করা, সন্তানের জনক-জননীকে মোবারকবাদ দেয়া ও তাদের খুশিতে অংশ গ্রহণ করা। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে, আর তার (ইবরাহিমের) স্ত্রী দাঁড়ানো ছিল, সে হেসে উঠল। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম ইসহাকের ও ইসহাকের পরে ইয়াকুবের। [সূরা হুদ : ৭১]
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইবরাহিম আলাইহিস সালামের স্ত্রীকে সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,
“অত:পর ফেরেশতারা তাকে ডেকে বলল, সে যখন কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন।” [সূরা আলে ইমরান : ৩৯]
অন্যত্র বলেন,
“হে যাকারিয়া, আমি তোমাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে কাউকে আমি এ নাম দেইনি।” [সূরা মারইয়াম : ৭]
এ আয়াত দুটিতে আল্লাহ তাআলা যাকারিয়া আলাইহিস সালামকে সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে,
“এতে তাদের (ফেরেশতাদের) সম্পর্কে সে (ইবরাহিমের স্ত্রী) মনে মনে ভীত হল। তারা বলল, ভয় পেয়োনা, তারা তাকে এক বিদ্বান পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল।” [সূরা জারিয়াত : ২৮]
এসব আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সন্তান (ছেলে বা মেয়ে) জন্মের পর খুশি হওয়া, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা এবং সন্তানের জন্য দোয়া করা ইসলামের আদর্শ, বরং সওয়াবের কাজ। লক্ষণীয় ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এ সময়ও পিতা-মাতা ও মুমিনদের জন্য দোয়া করতে ভুলেননি।
ইবনুল কাইয়ুম রহ. বলেন, সন্তান জন্মের সংবাদ পেলে সন্তানের জন্য কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করা কর্তব্য। (তুহফাতুল মওলূদ)
হাসান ইবনে আলী রা. কারো সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সংবাদ শুনলে এ বলে দোয়া করতেন।
(بورك لك في الموهوب، وشكرت الواهب، وبلغ أشده، ورزقت بره) النووي في الأذكار.
অর্থ : আল্লাহ তোমার জন্য এ সন্তানে বরকত দান করুন। তুমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় কর। এ সন্তান দীর্ঘজীবী হোক। আল্লাহ তোমাকে এর কল্যাণ দান করুন। (ইমাম নববির আজকার গ্রন্থ দ্রষ্টব্য)২. সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডান কানে আজান দেয়া।৩. তাহনিক.. করা।মানে কিছু মিস্টি জাতিয় জেমন আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে আবু তালহা ভূমিষ্ঠ হলে আমি তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের নিকট নিয়ে গেলাম, তিনি বলেন, তোমার সঙ্গে কি খেজুর আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম খেজুর চিবালেন, অতঃপর তা বের করে বাচ্চার মুখে দিলেন। বাচ্চাটি জিব্বা দিয়ে চুসে ও ঠোটে লেগে থাকা অংশ চেটে খেতে লাগল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এ দৃশ্য দেখে বলেন, দেখ, আনসারদের খেজুর কত প্রিয়! [মুসলিম]৪. সপ্তম দিন মাথা মুণ্ডন করা ও চুলের ওজন পরিমাণ রুপা সদকা। করা।৫. আকিকা করা..
আকিকার আভিধানিক অর্থ : আল্লাহর দরবারে নজরানা পেশ করা, শুকরিয়া আদায় করা, জানের সদকা দেয়া ও আল্লাহর নেয়ামতের মোকাবেলায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। ইসলামি পরিভাষায় আকিকা হচ্ছে, নবজাতকের পক্ষ থেকে পশু জবেহ করা। আলেমদের অনেকেই আকিকা করাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন।৬. নাম রাখা..
ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রথম দিন বা সপ্তম দিন নব জাতকের নাম রাখা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন, আজ রাতে আমার একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, আমি তার নামকরণ করেছি ইবরাহিম, আমার পিতা ইবারাহিমের নামানুসারে। [মুসলিম]
ইমাম আবু দাউদ, আহমদ, দারামি, ইবনে হিব্বান ও আহমদের বর্ণনাকৃত হাদিসের ভাষ্য মতে নবজাতকের নাম সুন্দর রাখা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের নিজ নামে ও তোমাদের বাপ-দাদার নামে আহ্বান করা হবে, অতএব তোমরা তোমাদের নাম সুন্দর করে নাও।৭. খাৎনা করানো..
জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের নিকট এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি, তিনি বললেন, কুফরির চুল মুণ্ডিয়ে ফেল আর খাৎনা কর। (আবুদাউদ)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেছেন, মানুষের প্রকৃতগত স্বভাব পাঁচটি। ক. খাৎনা করা। খ. নাভির নিচের পশম পরিস্কার করা। গ. বগলের নিচের পশম উপড়ানো। ঘ. আঙ্গুলের নখ কর্তন করা। ঙ. মোচ ছোট করা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন
সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন
ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন