জানেন, রাসূল (সা:)-এর যুগে নারীরা কোথায় নামাজ আদায় করতেন?
রাসূল (স) এবং তাঁর পরবর্তীতে আবু বকরের (রা) সময় নারী-পুরুষ উভয়ই মসজিদের দরজাগুলো যৌথভাবে ব্যবহার করতেন।
তারপর উমর (রা) নারীদের জন্যে একটি দরজা নির্দিষ্ট করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং পুরুষদেরকে সেই দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন।
কিন্তু তিনি কখনোই নারীদেরকে পুরুষদের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করেননি।
সুনানে আবু দাউদে ইবনে উমর (রা) থেকে নাফির বর্ণনা মতে, উমর (রা) বলেন, আমরা যদি এই দরজাটি নারীদের জন্যে ছেড়ে দিতাম!
নাফি থেকে অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে, উমর (রা) নারীদের দরজা দিয়ে পুরুষদের প্রবেশ করাকে বারণ করতেন।
(সুনানে আবু দাউদ, ১/৩৪৮। মসজিদে নারীদেরকে পুরুষদের থেকে পৃথকীকরণ অধ্যায়)
নারীদের জন্যে মসজিদের দরজা নির্দিষ্ট করে দেয়ার ব্যাপারটা ছিল উমরের (রা) প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এটি রাসূলুল্লাহর (সা) সময় থেকে চলে আসা কোনো প্রথা নয়।
উমর (রা) নারীদের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে যে নিষেধ করেছেন, এর উদ্দেশ্য ছিল জনস্বার্থ।
এটি এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়, যা সব যুগে এবং সকল স্থানে অবশ্যই বর্জনীয়।
এছাড়া নারী-পুরুষের যৌথ দরজার বিধানও এর দ্বারা নাকচ হয়ে যায় না।
বর্তমানে, বিশেষ করে মুসলিম
সংখ্যালঘু দেশগুলোতে, নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যে মসজিদের প্রধান দরজা উন্মুক্ত রাখা হয়।
এমনকি অবস্থার প্রয়োজনে নারীদের জন্যে অতিরিক্ত একটি বিশেষ দরজার ব্যবস্থাও করা হয়।
কিন্তু তারপরও নারীরা তথাকথিত ‘পুরুষদের দরজা’ দিয়ে প্রবেশ করলে তাদেরকে খারাপ কিছু বলা কিংবা তাদের সাথে ভালো ব্যবহার না করাটা একদম অনুচিত।
যদিও দুঃখজনকভাবে আজকাল এমনটি ঘটছে।
আসলে, মসজিদে নারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা খুবই বড় ধরনের একটি সমস্যা। মুসলিম তরুণ প্রজন্মকে এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এমন ব্যবহারের ফলে তরুণ প্রজন্ম ইসলাম ও ইসলামের ধারক-বাহকদের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
অমুসলিমরাও ইসলামের দাওয়াত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অমুসলিমদের সাথে বসবাসকারী মুসলিমরা বিষয়টা ভালোভাবেই জানেন।
সারসংক্ষেপ
নারীদেরকে একটি কক্ষে পৃথক করে রাখা কিংবা নারী-পুরুষের মাঝে দেয়াল বা পর্দা টানিয়ে দেয়াটা কোনো ধরনের সুন্নত নয়।
বরং মসজিদের একই কক্ষে পুরুষদের পেছনে নারীদের নামাজ আদায়ের স্থান নির্ধারণ করাই হলো সুন্নত।
পুরুষেরা প্রথম কাতার থেকে কাতার শুরু করবে, আর নারীরা শুরু করবে শেষ কাতার থেকে।
নামাজের জামায়াত ব্যতীত অন্য সময়, এমনকি কোনো পুরুষ একা নামাজ আদায় করার সময়ও মসজিদের ভেতর নারীদের হাঁটাহাঁটি করায় কোনো বাধা বা ক্ষতি নেই।
ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে শিশুদেরকে মসজিদে যেতে বাধা দেওয়া এবং শুধু নারীদের উপর শিশুদের দেখাশোনার ভার চাপিয়ে দেয়া সুন্নতসম্মত নয়।
অবশ্য কোনো জনাকীর্ণ স্থানে নারীদের জন্যে মসজিদের দুই পাশের দুটি দরজা খাস করে দেয়া যায়।
নারী-পুরুষের নামাজের জায়গা পৃথক করার জন্যে মসজিদের ফ্লোরে একটা দাগ টেনে দেয়া যায় কিংবা কোনো নির্দেশনা ব্যবহার করা যায়।
এসব কাজ বৈধ। কিন্তু নারীদেরকে মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয়া যাবে না।
ইসলামের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা, ইসলামের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়া এবং নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের মনস্তত্ত্ব গঠনের জন্যে মসজিদে নারীদের অবস্থানের বিষয়টি মুসলমানদেরকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন
সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন
ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন