ট্রাফিক পুলিশের স্বাস্থ্যগত সমস্যা
অপবাদ রহিয়াছে অঢেল, অথচ বিড়ম্বনার শেষ নাই ট্রাফিক পুলিশের। প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট হউক—যেকোনো দুর্যোগের ভিতরেও অবিরতভাবে দায়িত্ব পালন করিয়া যাইতে হয় তাহাদের। ভোরের আলো ফুটিতেই বাঁশি হাতে রাস্তায় নামিতে হয়। অন্য আরেক দলের তখন সময় হয় ব্যারাকে ফিরিবার। রাস্তার শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া অনিয়মিত জীবনযাপনে নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় জর্জরিত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বড় একটি অংশ। এই রোগের ভোগান্তি আরো বাড়িয়া যায় অবসরোত্তর জীবনে।
জানা যায়, ঢাকার বাতাসে দৃশ্যমান ও অদৃশ্য বস্তুকণা, সিসা, সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, কার্বন মনো-অক্সাইডসহ নানা ধরনের ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান দিন দিন মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাইতেছে। আর ইহার সহিত পাল্লা দিয়া বাড়িতেছে শব্দদূষণ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে ঢাকায় যেকোনো রাস্তায় শব্দের তীব্রতা ৬০ হইতে ৮০ ডেসিবেল। অথচ শব্দের স্বাভাবিক মাত্রা ৩৫ থেকে ৪৫ ডেসিবেল। গবেষণায় জানা যায়, একজন মানুষকে যদি আট ঘণ্টা করে ক্রমাগত ৬০ হইতে ৮০ ডেসিবেল শব্দের মাঝখানে রাখিয়া দেওয়া হয়, ছয় মাস হইতে এক বত্সরের মাথায় লোকটির শ্রবণশক্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। এই কারণেই বেশিরভাগ ট্রাফিক সদস্য ভুগিতে থাকেন কানের সমস্যায়। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের সূত্র উল্লেখপূর্বক পত্রিকান্তরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, গত দুই বত্সরে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিত্সা লইতে আসা পুলিশ সদস্যের মধ্যে ৫১ হাজার ১৮৮ জন আসিয়াছেন ট্রমায় আক্রান্ত হইয়া। জানা যায়, ট্রমা, চর্মরোগ, কিডনিজনিত রোগ, শ্বাসকষ্ট এবং নাক-কান ও গলার সমস্যায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ট্রাফিক বিভাগে কর্মরতদের সংখ্যাই বেশি। সমস্যার এইখানেই শেষ নহে, ভোগান্তি রহিয়াছে তাহাদের বাসস্থানেও। রাজধানীর রাজারবাগে ট্রাফিক পুলিশ ব্যারাকের চিত্র অত্যন্ত করুণ। টিনের চালার এই ব্যারাকের সামনের অংশে রহিয়াছে জলাবদ্ধতা। ঘরের চালার টিন পুরনো হইবার কারণে বৃষ্টি হইলেই পানিতে ভিজিয়া যায় শয়নকক্ষ। আর বেশি বৃষ্টি হইলে বাহিরের পানিও প্রবেশ করে ঘরে। এমতাবস্থায় জমিয়া থাকা পানিতে জন্ম নেয় বিভিন্ন প্রজাতির মশা। তাহার উত্পাতেও নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটে ক্লান্ত-শ্রান্ত ট্রাফিক পুলিশের।
জীবন ঘষিয়া ক্ষয় করিয়া ট্রাফিক পুলিশ যেইভাবে কর্তব্যপালন করিয়া থাকেন, যেইভাবে অনেকক্ষেত্রে ব্যারাকে ফিরিয়াও ন্যূনতম শান্তি অধরাই থাকিয়া যায়, তাহার সমাধান বাহির করা জরুরি। ট্রাফিক পয়েন্টে অকারণে হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো কিংবা গাড়ির চাপ সামলাইবার সময় লেন না মানা অথবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা—এই ধরনের আইন অমান্যকারীদের ব্যাপারে শাস্তিপ্রদানে ছাড় না দেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রচার করা যাইতে পারে। আর বায়ু দূষণ হইতে রক্ষার নিমিত্ত সরবরাহ করা যাইতে পারে কার্যকরী মাস্ক। ব্যারাকের পরিবেশেরও উন্নতি সাধন করাটা আবশ্যক বটে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো
লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন
আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা
“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন
বাবা যখন ধর্ষক
যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন