দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমর্যাদা ঘোষণা

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমর্যাদা ঘোষণা করেছে সরকার। এখন থেকে দাওরায়ে হাদিস ইসলামিক স্টাডিজ ও এরাবিকে মাস্টার্সের মর্যাদা পাবে।
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আলেমদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক কওমি আলেম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে, দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে এই স্বীকৃতি দেয়া হলো।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন হবে। আলেমদের নিয়ে একটি কমিটিও করা হয়েছে। তারাই এই স্বীকৃতির আইনি ভিত্তি দাঁড় করাবেন। এ সময় তিনি কওমি মাদ্রাসা স্বীকৃতি বাস্তবায়নে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে তিন শতাধিক আলেম এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দেশের শীর্ষ আলেম প্রায় সবাই এখানে ছিলেন। বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসাগুলোর আলেমরা এর আগে এভাবে কোনো বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী এই স্বীকৃতি ঘোষণা করায় আলেমরা দেশের লাখ লাখ কওমি শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শোকরিয়া জানান। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর সবাই সমস্বরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে উঠেন। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আলেমরা ঐতিহাসিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘ দিনের। বিভিন্ন সময় এর জন্য আন্দোলনও হয়েছে। বিগত বিএনপি জোট সরকারের শেষ সময়ে এসে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স সমমর্যাদা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। একটি টাস্কফোর্সও করে দিয়েছিলেন। তবে সেটা বেশি দূর এগোতে পারেনি। এর মধ্যেই বিদায় নিতে হয় সরকারকে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবার জোরালো হয় কওমি সনদের স্বীকৃতির বিষয়টি। ২০১০ সালে সরকার শিক্ষানীতি ঘোষণার সময়ই কওমি শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।
২০১৩ সালে কওমি সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়নে আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে দেয় সরকার। তবে আলেমদের মধ্যে অনৈক্য থাকায় এই কমিটির কার্যক্রম অনেকদূর এসে থেমে যায়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে উদ্যোগী হয়ে আলেমদের মধ্যে ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা করেন। সবশেষ সম্মিলিতভাবে আলেমরা স্বীকৃতির ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করায় সরকার তা ঘোষণার উদ্যোগ নেয়।
কওমি মাদ্রাসা মূলত ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দের আলোকে প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থা। এখানে কোরআন-হাদিসের মূলধারার শিক্ষার ওপর বেশি জোর দেয়া হয়। বাংলাদেশে কয়েক হাজার কওমি মাদ্রাসার প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।
দাওরায়ে হাদিস কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর। এই স্তরে সিহাহ সিত্তাহ তথা হাদিসের বিশুদ্ধতম ছয়টি কিতাব ছাড়াও ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে সর্বোচ্চমানের শিক্ষা দেয়া হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

শেকৃবির ১২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) “আওয়ামীপন্থি” ১২ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তবিস্তারিত পড়ুন

২৭তম বিসিএসে বঞ্চিত ১,১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
১৭ বছর আগে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের চাকরি ফেরতবিস্তারিত পড়ুন

এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন