ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত
ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার যুগে মানবসত্তার চিরমুক্তির তাওহীদের মহান বার্তা বহনকারী মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার দিনকে স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দিনটি পালন করে থাকে।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) যথাযথ মর্যাদায় পালনে বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা, মিলাদ, দোয়া মাহফিল প্রভৃতি।
দিবসটি পালনে মধ্যরাত থেকেই মসজিদে মসজিদে দুরুদ পাঠ ও নফল ইবাদাত করছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রাত জেগে ইবাদত বন্দেগী ও জিকির আসগরের মাধ্যমে অতিবাহিত করা উচিত বলে মনে করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভারপ্রাপ্ত খতিব। এ ছাড়াও পটকাবাজি উৎসবের পাশাপাশি অন্যের ক্ষতি হয় এমন কোন কাজ না করার আহবান জানান তিনি।
১২ রবিউল আওয়াল ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ, প্রায় সাড়ে ১৪’শ বছর আগে, মানুষের মুক্তির দিশারী বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) শান্তির বারতা নিয়ে আরব ভূখন্ডে জন্মগ্রহণ করেন। ৪০ বছর বয়সে নবুয়াত প্রাপ্তির পর দীর্ঘ ২৩ বছর দাসত্ব ও অনাচার বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন তিনি। কিন্তু কখনো দমে যাননি এই মহামানব। কেবল আরববাসীরই নয়, সারা দুনিয়ার কুসংস্কার, গোঁড়ামি আর দাসত্ব থেকে মুক্তি দিতে গোটা জীবনকেই উৎসর্গ করেছেন তিনি।
ইতিহাসবিদরা বলেন, তার পথে কাটা বিছানো হয়েছে। কিন্তু মহানবী হযরত মুহম্মদ (স) কখনো কারও বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। মাত্র ৬৩ বছর বয়সে ১২ রবিউল আওয়াল তারিখেই ইহলোক ত্যাগ করেন শেষ নবী রহমাতুল্লিল আলামিন হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
প্রিয় নবীর জীবনের ওপর গবেষণা ও সমসাময়িক ইতিহাস পাঠ কেবল ধর্মীয় আচারই না, এই দিনে আনুষ্ঠানিকতার ভিন্নতার অবসান ঘটাবে বলে মত ঐতিহাসিক ও ইসলামী চিন্তাবিদদের। তার জীবনী পাঠ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার সঠিক পথ দেখানোর তরুণ প্রজন্মকে কুসংস্কার ও সন্ত্রাসবাদের পথ থেকে দূরে রাখবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। দেশের সব সরকারি- বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেল দিনটিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলো আজ বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করছে।
দিবসটি উপলক্ষে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দুইদিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দুইদিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং মহানবীর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা।
এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে দেশবাসীসহ বিশ্বের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মহানবী (সা.) এর অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব, অনুপম চারিত্রিক গুণাবলী, সৃষ্টির প্রতি অগাধ প্রেম ও ভালবাসা, অতুলনীয় বিশ্বস্ততা, অপরিমেয় দয়া ও মহৎ গুণের জন্য তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে অভিষিক্ত। বিশ্বের ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান ‘মদীনার সনদ’ ছিল মহানবী (সা.) এর বিজ্ঞতার এক প্রকৃষ্ট দলিল। সুতরাং ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে তার শিক্ষা সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়’।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন
সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন
ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন