পবিত্র লাইলাতুল মেরাজের ইতিহাস ও তাৎপর্য
পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনী আজ। আমাদের সমাজে শবে মেরাজ নামে খ্যাত। মানবতার নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই রাতে অলৌকিকভাবে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেন। এই রাতে মহানবী (সা.) মহান রবের সাক্ষাতে মিলিত হন। মুসলিম উম্মাহ এই রাতে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগি ও ধর্মীয় ভাব-আবেগে কাটায়। ইসলামে রাতটির বিশেষ গুরুত্বও রয়েছে। ইসলামের অন্যতম আমল নামাজ এই রাতে উপহার দেন আল্লাহতায়ালা।
ইসলামের ইতিহাস বলে, তখন হিজরি ৬২০ খ্রিস্টাব্দ, আরবি রজব মাসের ২৬ বা ২৭ তারিখ দিবাগত রাত। নবীজি তার দুধ বোন উম্মে হানি বিনতে আবু তালিবের ঘরে আরাম করছেন। ফেরেশতা হজরত জিব্রাইল মহানবী (সা.)-এর কাছে আসেন। আকাশ থেকে আনা হাউজে কাউসারের পানির মাধ্যমে বুক চিড়ে গোসল করান। জান্নাতি পোশাকে নবীজিকে সাজান। হজরত জিব্রাইল মহানবী (সা.)-কে বলেন, আপনার বন্ধু আল্লাহর সাক্ষাতের অনুমতি মিলেছে। চলুন। চলুন আমার সঙ্গে। স্বতঃস্ফূর্ত নবীজি বোরাকে চেপে বসেন। প্রথমে কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসায় যান। মুসলমানের প্রথম কেবলা- মসজিদুল আকসায় উপস্থিত লাখ লাখ নবী-রাসূল ও ফেরেশতারা মহানবী (সা.) কে অভিবাদন জানান এবং নবীজির পেছনে নামাজ পড়েন। অভিবাদন পর্ব শেষে মহানবী বিশেষ বাহন বোরাক যোগে ঊর্ধ্বলোকে গমন করেন। ঊর্ধ্বাকাশে সিদরাতুল মুনতাহা পেরিয়ে আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করেন। এই সফরে ফেরেশতা জিবরাইল মহানবীর সফরসঙ্গী ছিলেন। কুরআন শরিফের সূরা বাণী ইসরাঈল এর প্রথম আয়াতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, পবিত্র সেই মহান সত্তা, যিনি তার এক বান্দা (মুহাম্মদ)- কে মসজিদে হারাম (কাবাঘর) থেকে মসজিদে আকসা (বাইতুল মোকাদ্দাস) পর্যন্ত পরিভ্রমণ করিয়েছেন। এই ভ্রমণে তাকে অসংখ্য নিদর্শনাবলী দেখানো হয়েছে।
মহানবী (সা.) মেরাজের রাতে সাত আকাশ ভ্রমণ করেন। দেখা পেয়েছেন সাত জন্য বিখ্যাত নবীর। প্রথম আকাশে হজরত আদম (আ.), দ্বিতীয় আকাশে হজরত ইয়াহিয়া (আ.), তৃতীয় আকাশে হজরত ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আকাশে হজরত ইদ্রিস (আ.), পঞ্চম আকাশে হজরত হারুন (আ.), ষষ্ঠ আকাশে হজরত মুসা (আ.), সপ্তম আকাশে হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে।
সাক্ষাৎপর্ব শেষ করে তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছেন। এই রাতে মহানবী (সা.) হজরত জিব্রাইল কে আসল আকৃতিতেও দেখেন।
বুখারি শরিফে ৫ খন্ডের ৩৫২ পৃষ্ঠায় হজরত আনাস (রা.) সূত্রে মহানবীর ঘটনার বিবরণে বলেন, অতপর আমি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছলাম। জিব্রাইল আমাকে বললেন, এই বৃক্ষটির নাম সিদরাতুল মুনতাহা। সেখানে চারটি প্রবাহমান নদী পেলাম- দুইটি ভেতরের দিকে প্রবাহিত এবং দুইটি বাইরে। নদীগুলির নাম সম্পর্কে আমি জিব্রাইলকে জিজ্ঞাস করি, তিনি বলেন, ভেতরের দুটি বেহেশতে সালসাবিল ও কাউসার নদী। আর বাইরের দুইটি মিসরের নীল ও ইরাকের ফোরাত নদী। তারপর আমাকে ‘বায়তুল মামুর’ দেখানো হলো। ‘বায়তুল মামুর’ আকাশের একটি ঘর। সেখানে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা উপস্থিত হয় ইবাদতের জন্য।
তারপর আমার সামনে তিনটি পাত্র পরিবেশন করা হলো, মদ, দুধ ও মধুর। আমি দুধ খেলাম। জিব্রাইল বললেন, দুধ সত্য ও খাঁটি স্বভাবগত ধর্ম ইসলামের প্রতীক। আপনি সত্যও স্বভাবগত ধর্ম ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত আছেন এবং আপনার উসিলায় আপনার উম্মতও এর উপর থাকবে। এর পরই মহান রবের সাক্ষাতে ধন্য হন মহানবী। উম্মতের জন্য মওলা পাকের পক্ষ থেকে উপহার পান নামাজ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঈদের ছুটির পর বুধবার থেকে নতুন অফিস সময়সূচি
পবিত্র ঈদুল আজহার পর সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিতবিস্তারিত পড়ুন
সৌদিতে হজে বিভিন্ন দেশের ৫৫০ হাজির মৃত্যু
সৌদি আরবে এ বছর হজ পালনে গিয়ে কমপক্ষে ৫৫০ জনবিস্তারিত পড়ুন
ঈদে ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮ টি গবাদিপশু কোরবানি
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪বিস্তারিত পড়ুন