শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

ফাহিমের লাশ নয়, জরুরি ছিল বিচার!

যা আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই হয়েছে। মাদারীপুরে শিক্ষকের উপর হামলায় গ্রেপ্তার গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম রিমান্ডে থাকা অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। পত্রপত্রিকার খবর মতে, শনিবার সকালে ফাহিমের লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোররাতে সদর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মিয়ারচরে এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।

ফাহিমের ‘ক্রসফায়ারে’ মৃত্যুর ঘটনায় তার কৃতকর্মের ‘বিচারবহির্ভূত’ শাস্তি হয়েছে বটে, কিন্তু অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই আগাম আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন এই বলে যে, এই ফাহিম ক্রসফায়ারে মারা গেলে অব্যাহত কোপাকুপির পেছনে উচ্চ মহলের হাত আছে বলে দেশবাসী নিশ্চিত হবে। ফাহিমের কাছে থেকেই এই তথ্যগুলো জানা সম্ভব। কিন্তু এই সম্ভবকে অসম্ভব করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ঠিকই ফাহিমকে ‘চালান’ করে দেওয়া হলো!

ফাহিমের মৃত্যু কোনো সমস্যারই সমাধান দিল না। শুধু প্রশ্নই আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেল। তবে কী ফাহিম এমন কিছু বলেছে, যা সরকারের জন্য অস্বস্থিকর? এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম বলেছে, যা প্রকাশিত হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও সংকটগ্রস্ত হবে? নাকি, ফাহিম কিছুই বলেনি? পুলিশ বা সরকার তার কাছে যা চেয়েছে, যেভাবে চেয়েছে, তা পায়নি বলেই এই ‘বন্দুকযুদ্ধ’?

এই প্রশ্নগুলোর জবাব হয়তো কোনোদিনই জানা যাবে না। আমাদের গোয়েন্দারা কুখ্যাত অপরাধী বা খুনীদের ধরতে পারেন না। আর ধরলেও তাদের দ্রুত পরপারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ জন্য তাদের চাকরিও যায় না। জবাবদিহিও করতে হয় না। তাদের আর আলাদাভাবে জবাবদিহি করতে হবে কেন, সরকারেরই যেখানে কোনো জবাবদিহি নেই, সেখানো প্রশাসন, পুলিশ, বিচারালয়ের থাকবে কোত্থেকে?

সন্ত্রাস দমন, খুনীদের খুঁজে বের করা, শায়েস্তা করার ব্যাপারে আমাদের পুলিশের ব্যর্থতা একেবারেই শোচনীয়। এ জন্য কখনও তাদের ভর্ৎসনা করা হয়েছে-এমনটা শোনা যায়নি। বরং সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সব সময়ই পুলিশের প্রশংসা করেছেন। পুলিশ বাড়াবাড়ি করলেও কখনও তাদের বকে দেওয়া হয়নি। আর ঘুমিয়ে থাকলেও তাদের জাগবার কথা বলা হয়নি। পুলিশের ভূমিকায় সরকার যারপর নাই সন্তুষ্ট। এদিকে অজ্ঞাত ঘাতকেরা নিয়মিত বিরতিতে দেশের বিভিন্ন মানুষের উপর চাপাতি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে মৌলবাদী-জঙ্গিবাদীদের কাছে যারা ‘দুশমন’ হিসেবে পরিচিত, তাদের। কিন্তু কোথাও কেউ ধরা পড়েনি। ধরা হয়নি (সম্প্রতি প্রকাশক টুটুলের উপর হামলাকারী একজনকে নাকি ধরা হয়েছে! এটাকে বাদ দিলে ধারাবাহিক খুনের ঘটনাগুলোর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো সাফল্য নেই)। এর আগে রাজধানীর বেগুনবাড়িতে ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয়েছিল, তখন দুই হিজড়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হত্যাকারী দুই মাদ্রাসাছাত্রকে ধরে ফেলে। পরে তাদের পুলিশে দেওয়া হয়। ওই দুই হামলাকারীর মধ্যে জিকরুল্লাহ নামের একজন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র। আর আরিফুল নামের অন্যজন মিরপুরের দারুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র। তাদের কাছ থেকে কী তথ্য পাওয়া গেছে, সেই তথ্যের আলোকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে-সেগুলো তেমনভাবে জানা যায় না।

ফাহিমকে আটকের পর ভাবা হয়েছিল, এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডগুলোতে কারা কলকাঠি নাড়ছে, কারা টাকা দিচ্ছে, কারা মগজধোলাই করছে, কোথায় কীভাবে তাদের রিক্রুট করা হচ্ছে-এসব তথ্য জানা যাবে। টার্গেট কিলিং-এর রহস্য উদঘাটন হবে। ফাহিমের কাছে প্রাপ্ত তথ্য ধরে বাংলাদেশে কারা আইএস, কারা হিযবুত তাহরির-এটা জানা। সেই অনুযায়ী সরকার জঙ্গিবিরোধী শক্ত ভূমিকা নিতে পারবে! কিন্তু কোথায় কী? কোনো কিছু জানা-বোঝার আগেই তাকে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শেষ করে দেওয়া হলো! কেন? সরকার কী চায় না, এসব হত্যারহস্যের কুল-কিনারা হোক, রহস্য উদযাটন হোক? নাকি সরকারের কর্তাব্যক্তিরাই চাচ্ছেন, যা চলছে, যেভাবে চলছে, চলুক? আর তারা মসনদে বসে ক্ষমতার মাখনরুটি উপভোগ করতে থাকুক? নাকি অপরাধীদের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে সরকার তাদের ‘প্রতিপক্ষের ঘাড়ে দায় চাপানোর রাজনীতি’ আর করতে পারবে না বলে ফাহিমকে মেরে ফেলা হলো? নাকি হত্যাকারীদের শক্তি সম্পর্কে সরকারই ভীত? তাদের ঘাটাতে সাহস পাচ্ছে না বলে তাদের ব্যাপারে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি গ্রহণ করে চলেছে? যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো ক্লুই বের করতে না পারে, তাহলে তাদের কেন পোষা হবে?

এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাওয়া দরকার। সরকার তাদের হাতে সব তথ্য আছে-এটা বলবে, কোনো তথ্য প্রকাশ করবে না, তথ্যের উৎসকে সরিয়ে দেবে-এই তামাশা আর কত কাল?

খুনীরা একের পর এক লাশ ফেলছে। খুনীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার পরিবর্তে সরকারও তাদের লাশ ফেলছে। আমরা লাশ চাই না, বিচার চাই! এসবের প্রতিকার চাই! আর জানতে চাই কারা এসব ঘটাচ্ছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?