ফুটপাত উচ্ছেদে লাভবান হচ্ছে পুলিশ পাতি নেতা!
রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) সংলগ্ন ওভারব্রিজ ও নীলক্ষেত থেকে ঢাকা কলেজ অভিমুখী ফুটপাত দখল মুক্তের তিনদিন না পার হতেই পুনঃদখল হয়ে গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়।
ডিসিসির এ অভিযান সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হলেও নানা সমীকরণে ফুটপাত পুনঃদখলের আশঙ্কাও ছিল। এছাড়া উচ্ছেদের পর পরই ফুটপাত ব্যবসায়ীরা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সব কিছু ম্যানেজ করে ব্যবসা করি, সব ম্যানেজ হয়ে যাবে। অবশেষে সাধারণ মানুষের আশঙ্কা ও ফুটপাত ব্যবসায়ীদের ঘোষণা দুটিই সত্যি হলো।
সরেজমিন দেখা গেছে, নিউমার্কেট ওভারব্রিজের নীচে আগের মতোই বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে আগের মতো কাঠ বাঁশ পলিথিনের স্থাপনা নেই। এছাড়া নীলক্ষেত থেকে নিউমার্কেট ওভারব্রিজের নীচে পর্যন্ত ফুটপাতে আগের মতোই জামা কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে হকাররা গলা ফাটিয়ে ক্রেতাদের ডাকাডাকি করছেন।
ফুটপাতে হাঁটাচলা করার অধিকাংশ জায়গা হকারদের দখল থাকায় সাধারণ মানুষের চলা দায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিউমার্কেট রাফিন প্লাজা সংলগ্ন ফুটওভারব্রিজ থেকে নিউমার্কেট দুই নম্বর ফটক পর্যন্ত হাঁটাচলা খুবই কষ্টকর। দু’জন পাশাপাশি হেঁটে গেলে গায়ে ধাক্কা লাগে, বিব্রত হন মহিলারা।
নিউমার্কেট ফুটওভার ব্রিজের নীচে জুতার দোকানের একজন মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও পুলিশকে নিয়মিত চাঁদা দিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেয়র হিরো সাজতে চাইছে কিন্তু ফুটপাত থেকে উঠিয়ে দিলে আমরা খামু কী?
লালবাগের একজন মহিলা ফুটপাত দিয়ে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার সময় বার বার উঁচু গলায় সাবধানে পথচলার পরামর্শ দিচ্ছিলেন। সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে চোখে মুখে বিরক্তি নিয়ে পরিচয় জানতে চাইলেন। পরিচয় শুনে বললেন, কি হবে সমস্যার কথা বলে, ফুটপাতের প্রায় পুরোটায় দখল হয়ে আছে। হাঁটতে গেলে ধাক্কা খেতে হয়। কর্তৃপক্ষ এসব দেখেও দেখে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ফুটপাতের এ ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়। ফুটপাতে স্থায়ী, অস্থায়ী স্থাপনা দোকান ভাড়া, অবৈধ বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বাবদ ক্ষমতাসীন দলের পাতি নেতারা নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা পান। এসব নেতাদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সখ্যতা থাকে। চাঁদাবাজির টাকার একটি অংশ লাইনম্যানদের (যারা ফুটপাত থেকে চাঁদা তুলেন) মাধ্যমে পুলিশের কাছে পৌঁছায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুটপাতের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, সম্প্রতি ডিসিসির উচ্ছেদে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও পুলিশ ও পাতি নেতারা লাভবান হচ্ছে। নতুন করে দোকান বসাতে গেলে তারা আগের চেয়ে বেশি টাকা দাবি করছে। পেটের তাগিদে ব্যবসার বিকল্প না থাকায় তারা বেশি টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই দোকান করছেন বলে জানান। ফলে ডিসিসি মেয়রদের উচ্ছেদ অভিযান কার্যত ব্যর্থ হচ্ছে।
তবে নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়াসির আরাফাত বলেছেন, অভিযানে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে রুটিন ওয়ার্কে আমরাও ছিলাম। তবে আবারো হকাররা বসছে কিনা তা আমাদের জানা নাই।
পুলিশের যোগসাজশে আবারো হকাররা বসছেন, ফুটপাত দখল হচ্ছে, পুলিশ এ থেকে মোটা অঙ্কের ভাগ পাচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, কিছু হলেই পুলিশকে দোষারোপ নতুন কিছু নয়। সেখানে হকাররা আবারো বসছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রাজধানীতে আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন
ঢাকা মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১৬ প্লাটুন আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েনবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ২৩
রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে ছাত্রলীগ, শিক্ষার্থী, মহিলা আওয়ামী লীগবিস্তারিত পড়ুন