বই উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীরা
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অবহেলায় নির্ধারিত সময়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হাতে মাতৃভাষার বই তুলে দেয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া বিলম্বে কাজ শুরু হওয়ায় প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বই ছাপানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয় বলেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এনসিটিবি সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বছরের শুরুতে সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় বই দেয়ার জন্য নির্দেশনা দিলেও সোমবার টেন্ডার দেয়া হয়েছে। ফলে বাকি ২৫ দিনের মধ্যে বই ছাপা শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া কঠিন হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে বই ও শিক্ষক নির্দেশিকা ছাপা শেষে হাতে পাওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিকের ৫টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় পাঠদানের উদ্যোগ নেয় সরকার। বছরের শুরুতেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সে অনুযায়ী সোমবার ১১টি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে অংশ নিয়েছে। টেন্ডার যাচাই-বাছাই শেষে নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশ দিতে অন্তত ১৪ দিন সময় লাগে। কার্যাদেশ দেয়ার পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে বই সরবরাহ করার নিয়ম রয়েছে। এ হিসাবে আগামী ২৫ দিনের মধ্যে বই ছাপা শেষ করে উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষে ২৪ হাজার ৬৪১ শিশুর জন্য ৫১ হাজার ৭৮২টি বই ছাপার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের পাঠদানের জন্য ২৫ হাজার ৫০০ টিসিং ম্যাটারিয়াল (ফ্লি চার্ট, ফ্লাশ কার্ড, স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ চার্ট) টেন্ডার দেয়া হয়েছে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদ্রী এ পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কয়েক মাস আগেই পাণ্ডুলিপি তৈরির কাজ শেষ হয়। কিন্তু এনসিটিবি কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে বই ছাপার টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করতে বিলম্ব হয়। এছাড়া এবার বই ছাপার কার্যাদেশ পাওয়া বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর বই কাস্টমস থেকে খালাসের জন্য এনসিটিবির নিজস্ব ভ্যাট আইডির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এটি না করায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাপানো বই গত কয়েক দিন ধরে বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকে থাকে। চীনা প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ পাওয়া শিক্ষক নির্দেশিকা নির্ধারিত সময়ে আসা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত এ প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি বলে জানা গেছে।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান বলেন, এনসিটিবির পাণ্ডুলিপি দেয়ার পর বই ছাপার প্রুফ দেখলে অনেক ভুল ত্রুটি পাওয়া যায়। এগুলো সংশোধনের জন্য আবার এনসিটিবিতে পাঠানো হয়। তাদের সংশোধন করতে অনেক সময় লাগে। যেখানে এখন পর্যন্ত কার্যাদেশই দেয়া হয়নি, সেখানে ১ জানুয়ারির আগে বই ছাপিয়ে সরবরাহ করা কঠিন। তবে এনসিটিবির কর্মকর্তারা যদি কঠোর হন তবে সম্ভাবনা রয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গত রোববার বই ছাপার কাজ পরিদর্শনে গিয়ে ৮০/৯০ ভাগ বই স্কুলে পৌঁছে গেছে বলে দাবি করেছেন। তবে মন্ত্রীর তথ্যের সঙ্গে এনসিটিবির তথ্যের হিসাব মিলছে না।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, এবার প্রথম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বই তৈরিতে ভাষা, রচনাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেছে। ভাষার লিপিগুলো পেতে দেরি হয়েছে। যারা এসব বই রচনা করছেন তাদের পাওয়া সহজ ছিল না। টেন্ডার হয়ে গেছে। বুধবার টেন্ডার কমিটি মূল্যায়ন করে কার্যাদেশ দেবে। বইয়ের সংখ্যা খুবই কম হওয়ায় আগামী ১৪ দিনের মধ্যে ছাপার কাজ শেষ করে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত থেকে আসা প্রাক-প্রাথমিকের বইগুলো বেনাপোল কাস্টমসে স্পেশাল বার্তা দিয়ে খালাস করা হয়েছে। এখানে একটা ত্রুটি ছিল, পণ্য খালাসের জন্য কাস্টমস এবার নতুন করে প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট আইটি চেয়েছে। বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। দ্রুত এনসিটিবির ভ্যাট আইডি করে ফ্যাক্স যোগে বেনাপোলে পাঠিয়েছি। এছাড়া চীন থেকে শিক্ষক নির্দেশিকা গাইড বন্দর দিয়ে আসবে। এলসি হয়ে গেছে। আগামী ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বইয়ের কাজ শেষ হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
এইচএসসির ফল প্রকাশ মঙ্গলবার, জানা যাবে যেভাবে
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করাবিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন
ঢাবি বন্ধের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে ধন্যবাদ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল ছেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরবিস্তারিত পড়ুন