বরগুনায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু
বরগুনার পূর্ব ঢলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া (৭)। পৃথিবীর আলো দেখার আগেই তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন মা উদভ্রান্ত হয়ে ঘোরেন শহরের ওলি-গলিতে। শহরের ঢলুয়া এলাকার সরকারি খাদ্য গুদামসংলগ্ন ছোট খালা মুন্নির সংসারেই তার বেড়ে ওঠা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খালা মুন্নি আক্তারের ঘরের মাচানে রহস্যজনকভাবে মৃতদেহ পাওয়া যায় সাদিয়ার। অসুস্থতাজনিত কারণে সাদিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবি করেন সাদিয়ার খালা মুন্নি। কিন্তু সাদিয়ার সহপাঠী এবং অন্য স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে সাদিয়ার কোনো অসুস্থতাই ছিল না।
সাদিয়ার সহপাঠী স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রিপা (৭) জানায়, মৃত্যুর দুই দিন আগে একসঙ্গে স্কুলে পরীক্ষা দিয়েছে তারা। মৃত্যুর আগের দিনও একত্রে খেলাধুলা করেছে। সাদিয়ার বড় ভাই আব্দুল্লাহর (২০) স্ত্রী রিমা (১৬) জানান, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও সাদিয়া তার সঙ্গে দেখা করে গেছে। সে সময় তার কোনো অসুস্থতাই ছিল না। অন্যদিকে, সাদিয়ার খালা মুন্নি আক্তার বলছেন, কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল সাদিয়া। তার বুকে ব্যাথা ছিল বলেও জানান তিনি।
মৃতদেহ উদ্ধারের বর্ণনায় একেকবার একেক রকম তথ্য দিচ্ছেন খালা মুন্নি আক্তার। ঘটনার সময় তার শাশুড়ি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করলেও তা অস্বীকার করছেন শাশুড়ি পিয়ারা বেগম (৫৫)। পিয়ারা বেগম জানান, ঘটনার দিন সকাল থেকেই অন্যান্য দিনের মতো ক্রোক স্লুইস এলাকার একটি মিলে কাজ করছিলেন তিনি। বিকেল ৩টার দিকে বাড়ি ফিরে তিনি তাদের ঘরের সামনে অনেক লোকজন দেখতে পান। ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই তিনি সাদিয়ার লাশ দেখতে পান।
মুন্নি আক্তারের শ্বশুর মো. মোখলেস হাওলাদার (৬৫) জানান, তিনি একজন দরিদ্র মাছ বিক্রেতা। দিনভর তিনি শহরের মাছ বাজারে মাছ কেনা বেচায় ব্যস্ত থাকেন। তার স্ত্রী পিয়ারা বেগমও প্রায়ই ব্যস্ত থাকেন একটি করাতকলের মিলে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের কাজে। তাদের ছেলে সোহেল (মুন্নি আক্তারের স্বামী) কাজের সন্ধানে গত দুই মাস ধরে ঢাকায় রয়েছেন। শ্বশুর মোখলেস হাওলাদারের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে, মাসখানেক ধরে তার শালার জামাই মো. জালাল হোসেন তাদের বাসায় পেয়িং গেস্ট হিসেবে দুপুরের ভাত খেতেন। ঘটনার দিন ঘরের মাচানে যখন সাদিয়ার মৃতদেহ পাওয়া যায় তখন বাসায় শুধু মুন্নি আক্তার ও রিক্সাচালক জালাল ছিলেন বলে তিনি জানান।
সরেজমিন অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা সাদিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর এসব তথ্য জানানো হয় বরগুনা থানায়। ওইদিনই রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামে সাদিয়ার মামা আ. রাজ্জাক চৌকিদারের বাড়িতে দাফনের পূর্ব মুহূর্তে সাদিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তা মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাদিয়ার খালা মুন্নি আক্তারকেও আটক করা হয়। বরগুনা থানার ওসি রিয়াজ হোসেন পিপিএম বলেন, “সাদিয়ার খালা মুন্নি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে আনা হয়েছে। সন্দেহভাজন জালাল হোসেনকে এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। সাদিয়ার লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
বগুড়ার ৩টি উপজেলায় নির্বাচন; ১৫৭ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ
রাত পোহালেই বগুড়ার তিন উপজেলা সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও গাবতলীতে ৬ষ্ঠবিস্তারিত পড়ুন
বিএনপি নেতাকর্মীরা বগুড়ায় আ.লীগ নেতার নির্বাচনী প্রচারণায়
বর্তমানে চলছে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের মত এই উপজেলা বির্নাচনেওবিস্তারিত পড়ুন
বিএনপি সভাপতি কারাগারে, শনিবার বগুড়ায় অর্ধ দিবস হরতাল
সরকারের বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা মামলায় বগুড়া জেলা বিএনপি সভাপতিবিস্তারিত পড়ুন